ব্রাজিলকে যেকোনো মূল্যে রুখতে চেয়েছে উরুগুয়ে। ছবি : সংগৃহীত

কোপা আমেরিকার কোয়ার্টার ফাইনালে ব্রাজিল-উরুগুয়ে ম্যাচটি নির্ধারিত সময়ে গোলশূন্য অবস্থায় শেষ হলে ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে। সেখানে ব্রাজিলকে ৪-২ ব্যবধানে হারিয়ে সেমিফাইনালের টিকিট নিশ্চিত করল উরুগুয়ে। এতে শেষ আটেই বিদায় নিতে হচ্ছে পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের।

প্রথম টাইব্রেকার নিতে আসেন ফেদে ভালভার্দে। কোনো ভুল করেননি তিনি। বাম প্রান্তে ঝাঁপ দিয়েছিলেন অ্যালিসন বেকারও। কিন্তু বলের নাগাল পাননি। ব্রাজিল প্রথম শটটাই মিস করে, এডার মিলিতাওয়ের শট ফিরিয়ে দেন উরুগুয়ে গোলরক্ষক সার্জিও রকেট। উরুগুয়ে দ্বিতীয় শটেও সফল হয়। আন্দ্রেস পেরেইরা ব্রাজিলের আশা বাঁচিয়ে রাখেন দ্বিতীয় শট নিতে এসে।

তৃতীয় শটেও গোল পায় উরুগুয়ে, ব্রাজিল আবার মিস করে। ফলে অনেকটা ছিটকেই যায় পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা। কিন্তু অ্যালিসন উরুগুয়ের চতুর্থ শট ফিরিয়ে ব্রাজিলের আশা বাঁচিয়ে রাখেন। গ্যাব্রিয়েল মার্টিনেল্লিও হতাশ করেননি। কিন্তু পঞ্চম শট নিয়েই ম্যাচের ফল নির্ধারণ করে দেয় উরুগুয়ে। কোয়ার্টার ফাইনাল থেকেই বিদায় নেয় ব্রাজিল।

ম্যাচের ৯০ মিনিটের পুরোটা সময় দুই দলই লড়াই করেছে সমান তালে। কার্ড জটিলতায় মাঠের বাইরে ছিলেন ব্রাজিলের তারকা ফুটবলার ভিনিসিয়ুস জুনিয়র। তাঁর স্থলাভিষিক্ত হয়েছিলেন ১৭ বছর বয়সী তরুণ স্ট্রাইকার এন্ড্রিক ফেলিপ। বড় ম্যাচে তাঁর ভূমিকা দেখার অপেক্ষায় ছিলেন ব্রাজিলভক্তরা, তবে মাঠের খেলায় তিনি সেভাবে নজর কাড়তে পারেননি।

ম্যাচের ১০ মিনিটের মাথায় ডারউইন নুনিয়েজ সুযোগ পেয়েছিলেন উরুগুয়ের হয়ে লিড নেওয়ার। তবে তিনি হেড দেওয়ার চেষ্টায় ঠিকমতো মাথা ছোঁয়াতে পারেননি। ব্রাজিলও বড় সুযোগ মিস করে ২৮ মিনিটে। এন্ড্রিকের বাড়ানো বল ডি বক্সের ভেতর পেতে পারতেন রাফিনহা। কিন্তু এই সেলেসাও উইঙ্গার বলের কাছেই পৌঁছাতে পারেননি। উরুগুয়ে বিপন্মুক্ত হয়ে একটু পরই পাল্টা আক্রমণে যায়। কিন্তু নুনেজের হেড চলে যায় গোলপোস্টের ওপর দিয়ে।

গোলশূন্য প্রথমার্ধের পর দ্বিতীয়ার্ধে গোলের জন্য মরিয়া হয়ে ‍ওঠে দুই দলই। ৪৭ মিনিটে ভালো সুযোগ পেয়েছিল উরুগুয়ে। ফেডরিকো ভালবার্দের দূরপাল্লার শট সহজেই প্রতিহত করেন ব্রাজিলিয়ান গোলরক্ষক অ্যালিসন বেকার। এরপর ৫২ মিনিটে দুর্দান্ত এক আক্রমণ করে উরুগুয়ে। ডি-বক্সে ঢুকে বাঁ পায়ে শট করেন ডারউইন নুনেজ। তবে দানিলোর গায়ে লেগে তা লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। ৫৬ মিনিটে আরাউহো ডি-বক্সের বেশ খানিকটা দূর থেকে শট করলেও তা লক্ষ্যে ছিল না। ৬২ মিনিটে ভালবার্দের দূরপাল্লার আরেকটি শট বারের ওপর দিয়ে চলে গেলে হতাশ হতে হয় উরুগুয়ের সমর্থকদের।

৭৪ মিনিটে ১০ জনের দলে পরিণত হয় উরুগুয়ে। বল নিয়ে দৌড়াতে থাকা রদ্রিগোকে পেছন থেকে পায়ে ট্যাকেল করেন নাহিতান নান্দেজ। প্রথমে তাঁকে হলুদ কার্ড দেন রেফারি। কিন্তু ভিএআর রিভিউর পর লাল কার্ড দেখিয়ে নান্দেজকে মাঠছাড়া করেন রেফারি। সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে একের পর এক আক্রমণ করে ব্রাজিল। ৮৪ মিনিটে এন্ড্রিকের গড়ানো শট সহজেই তালুবন্দী করেন উরুগুয়ের গোলরক্ষক সার্জিও রোচেত। ৮৬ মিনিটে ফ্রি-কিকে দলকে এগিয়ে নেওয়ার সুযোগ পায় ভালবার্দে। তবে বারের ওপর দিয়ে মেরে দেন তিনি।

নির্ধারিত ৯০ মিনিটে গোল করতে পারেনি কোনো দলই। ফলে খেলা গড়ায় টাইব্রেকারে। সেখানে ৪-২ ব্যবধানে জিতে সেমিফাইনালে উঠে গেল উরুগুয়ে। সূত্র : আজকের পত্রিকা