বাবর আলী। ছবি-সংগৃহীত

১১ বছর পর পঞ্চম বাংলাদেশি হিসেবে বিশ্বের উচ্চতম শৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্ট জয় করলেন বাবর আলী। আজ রোববার স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ৮টায় (বাংলাদেশ সময় সকাল ৮টা ৪৫ মিনিট) এভারেস্টের চূড়ায় ওঠেন তিনি। বেসক্যাম্প টিমের বরাতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন অভিযানের প্রধান সমন্বয়ক ফরহান জামান।

এভারেস্ট জয়ের জন্য বাবর আলী রওনা দিয়েছিলেন ১ এপ্রিল।
আজ সকালে সেখানে তিনি বাংলাদেশের পতাকা ওড়ান। তবে তাঁর অভিযানের শেষ এখানেই নয়। বাবরের লক্ষ্য, সঙ্গে লাগোয়া পৃথিবীর চতুর্থ উচ্চতম পর্বত মাউন্ট লোৎসে। রোববার ক্যাম্প-৪ এ নেমে মাঝরাতে আবারও শুরু করবেন দ্বিতীয় লক্ষ্যের পথে যাত্রা। সব অনুকূলে থাকলে ভোরে পৌঁছাতে পারেন এর চূড়ায়। এ লোৎসেতে এর আগে কোনো বাংলাদেশি যাননি। কোনো বাংলাদেশি একই অভিযানে দুটি আট হাজারি শৃঙ্গেও চড়েননি। তাই লক্ষ্য পূরণে হলে বাবর আলী নতুন রেকর্ড গড়বেন।

নেপালের উদ্দেশে দেশ ছাড়ার আগের দিন ৩১ মার্চ চট্টগ্রামে এক সংবাদ সম্মেলনে নিজের ইচ্ছার কথা জানিয়েছিলেন বাবর আলী। চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে পর্বতারোহণ ক্লাব ‘ভার্টিক্যাল ড্রিমার্স’ আয়োজিত ওই সংবাদ সম্মেলনে তিনি অভিযানে যাওয়ার ঘোষণা দিয়ে বলেন, ‘বেশির ভাগ পর্বতারোহীই বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু বিন্দুতে দাঁড়িয়ে পৃথিবী দেখার স্বপ্ন দেখেন। আমিও দেখছি। আমি চ্যালেঞ্জিং আর নতুন কিছু করতে পছন্দ করি। তাই এবার এভারেস্টের সঙ্গে লোৎস জয় করার স্বপ্ন দেখছি। পুরো অভিযানে সময় লাগবে দুই মাস। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে মে মাসের তৃতীয় সপ্তাহ কিংবা শেষ সপ্তাহে চূড়ায় আরোহণ করতে পারি।’

বাংলাদেশ থেকে আগে এভারেস্ট জয় করা হলেও একই অভিযানে এভারেস্ট এবং লোৎসে আরোহণের চেষ্টা হয়নি। সেই চ্যালেঞ্জই নিতে বেশ কয়েক বছর ধরে নিজেকে হিমালয়ের নানান চূড়ায় অভিযানের জন্য প্রস্তুত করেন বাবর।

২০১৪ সাল থেকে তাঁর পর্বতারোহণে পথচলা শুরু। চট্টগ্রামের পর্বতারোহণ ক্লাব ভার্টিক্যাল ড্রিমার্স-এর প্রতিষ্ঠাতা সদস্য তিনি। এ ক্লাবের হয়েই গত দশ বছরে হিমালয়ের নানান শিখরে অভিযান করেছেন তিনি। ২০১৭ সালে ভারতের উত্তরকাশীর নেহরু ইনস্টিটিউট অব মাউন্টেনিয়ারিং থেকে মৌলিক পর্বতারোহণ প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করেন। ২০২২ সালে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে হিমালয়ের অন্যতম দুর্গম ও টেকনিক্যাল চূড়া আমা দাবলাম (২২,৩৪৯ ফুট) আরোহণ করেন বাবর।

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাস করেছেন ৩৩ বছর বয়সী বাবর আলী। শুরু করেছিলেন চিকিৎসা পেশা। এরপর চাকরি ছেড়ে দেশ-বিদেশে ঘোরায় মনোযোগ দেন। খবর: সমকাল।