অনলাইন জুয়ার সঙ্গে জড়িত থাকার অপরাধে 1xBet-এর ম্যানেজারসহ সাতজনকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি।
সিআইডির একটি টিম সোমবার সাইফ বিন ওহিদুল ওরফে বিপু (৩০), জামিল হোসেন (৪২), রাসেল শেখ (২৩), সাব্বির হোসেন (২২), সোহাগ হোসেন (২৪), মাইনুদ্দিউদ্দিন শিকদার (ছোটন) (২৫) ও ইমন হোসেনকে (২৩) গ্রেপ্তার করে।
ওই সময়ে তাঁদের কাছ থেকে ১৭টি বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মোবাইল ফোন, ৯টি এজেন্ট সিমসহ ২২টি সিম উদ্ধার করা হয়।
যেভাবে চলে অনলাইন জুয়া
অনলাইন জুয়া খেলার জন্য আলাদা আলাদা বেটিং সাইট বা ওয়েবসাইট রয়েছে। এসব ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে প্রথমেই একজন ব্যক্তিকে রেজিস্ট্রেশন করতে হয়। রেজিস্ট্রেশনের পরে ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ড দেওয়া হয়। সে ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট অঙ্কের একটি ব্যালেন্স যোগ করতে হয়।
মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসের (এমএফএস) মাধ্যমে নির্দিষ্ট নম্বরে টাকা পাঠালে ব্যালেন্স যোগ হয়ে যায়। ব্যালেন্স যুক্ত হওয়ার পরে সাইটগুলোতে বিভিন্ন ধরনের জুয়া খেলার যে অপশন রয়েছে, সেগুলো থেকে যেকোনো একটি পছন্দ অনুযায়ী অ্যাকাউন্ট হোল্ডার খেলতে পারেন। এ ক্ষেত্রে অ্যাকাউন্টধারী ব্যক্তি জিতলে অ্যাকাউন্টে ব্যালেন্স জমা হবে। আর হেরে গেলে টাকা চলে যায় জুয়ার সাইট পরিচালনার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের কাছে।
গ্রেপ্তারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, 1xBetসহ বাংলাদেশে প্রচলিত যত বেটিং সাইট রয়েছে, তার বেশির ভাগই মূলত রাশিয়া থেকে নিয়ন্ত্রণ করা হয়। বিভিন্ন দেশে স্থানীয়ভাবে নিয়ন্ত্রণের জন্য ম্যানেজার নিয়োগ করা হয়। ম্যানেজার বাংলাদেশে জুয়ার এজেন্ট হিসেবে বিশ্বস্তদের নিয়োগ দেন। আবার জুয়ার এজেন্টরা এ সমস্ত অ্যাপ পরিচালনা করতে পারে টেকনিক্যালি দক্ষ এমন লোক নিয়োগ দেন।
1xBet-এর অন্যতম একজন বাংলাদেশি এজেন্ট হচ্ছেন বরিশালের তারেক রহমান ওরফে তুহিন নামীয় এক ব্যক্তি। জুয়ার এজেন্টের কার্যক্রম পরিচালনার জন্য তিনি গ্রেপ্তারকৃত সাইফ বিন ওহিদুল ওরফে বিপুকে (৩০) ম্যানেজার হিসেবে নিয়োগ দেন এবং পরবর্তী সময়ে তাঁকে পার্টনার হিসেবে এজেন্টশিপ দেন।
এই বিপু আবার এই কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য গ্রেপ্তারকৃত রাসেল শেখ (২৩), মো. সাব্বির হোসেন (২২), সোহাগ হোসেন (২৪), মাইনুদ্দিউদ্দিন শিকদার (২৫) ও মো. ইমন হোসেনকে (২৩) নিয়োগ দেন, যাঁরা টেকনোলজিতে বেশ দক্ষ। তাঁরা বিপু ও তুহিনের জুয়ার চ্যানেলে সব লেনদেন এবং অ্যাপ পরিচালনা করে থাকেন।
পলাতক তারেক রহমান ওরফে তুহিনসহ এই চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তারে তৎপর রয়েছে সিআইডি।
জিজ্ঞাসাবাদে আরও জানা যায়, অনলাইন জুয়া 1xBet-এর মাধ্যমে এই চক্র প্রতি মাসে গড়ে ২৫ থেকে ৩০ কোটি টাকা লেনদেন করে। অনলাইন জুয়ার লেনদেনের এই টাকার সিংহভাগ দেশের বাইরে পাচার হচ্ছে। দেশের হাজার হাজার লোক অনলাইন জুয়ার সঙ্গে জড়িত হয়ে সর্বস্বান্ত হয়ে যাচ্ছে।
পল্টন মডেল থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা মামলায় গ্রেপ্তারকৃতদের আদালতে পাঠানো হয়েছে।
