চুয়াডাঙ্গা সদরে ভালাইপুর বাজারে ছুরিকাঘাতে দুজন নিহতের ঘটনায় সিসিটিভি ক্যামেরা ফুটেজ পর্যালোচনা করে মামলা রুজু প্রক্রিয়ার মধ্যেই সাঁড়াশি অভিযান চালিয়ে ২ জনকে আটক করা হয়েছে। বুধবার (২৬ এপ্রিল) সকালে তাদের আটক করা হয়। বিকেলে নিহত মামুনুর রশিদের ভাই হত্যা মামলা দায়ের করলে তাদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
জানা যায়, ২৫ এপ্রিল বেলা ২টার দিকে চুয়াডাঙ্গা সদরের ভালাইপুর গ্রামের আব্দুর রশিদের স্ত্রী ছামেনা খাতুন ভালাইপুর বাজারের মণ্ডল মার্কেটের আশরাফ বস্ত্রালয়ে কাপড় কিনতে আসেন। এ সময় কাপড়ের দরদাম নিয়ে দোকানের কর্মচারী রিয়নের সঙ্গে তার বাগবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে রিয়ন ছামেনা খাতুনের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন এবং দোকান থেকে তাকে বের করে দেন। বিষয়টি বাড়িতে তার ছেলে টিপুকে জানালে রাত ৮টার দিকে সজল, মামুনুর রশিদ, পলাশ কয়েকজন বন্ধুরা মিলে আশরাফ বস্ত্রালয়ে কর্মচারী রিয়নের সঙ্গে কথা বলতে আসেন।
দোকানে না থাকায় রিয়নের বাড়িতে যান তারা। তাদের সঙ্গে কথা বলার পর রিয়ন তার ভুল বুঝতে পেরে অনুশোচন বোধ করে এবং তাদের মোটরসাইকেলযোগে টিপুর মায়ের কাছে ক্ষমা চাওয়ার জন্য রওনা দেন। ভালাইপুর বাজারস্থ জেনারেল স্টোরের সামনে পৌঁছালে এজাহারনামীয় আসামিরা পূর্বপরিকল্পিতভাবে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে তাদের গতিরোধ করে। আসামিদের সঙ্গে সজল ও মামুনুর রশিদদের বাগবিতণ্ডা হয়। এর একপর্যায়ে সজলের পেটে ও মামুনের বুকে ছুরিকাঘাত করা হয়। পরে রক্তাক্ত অবস্থায় তাদের দুজনকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নেওয়া হলে কিছুক্ষণ পর দুজনই চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
সংবাদ পেয়ে চুয়াডাঙ্গা জেলার পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ্ আল-মামুন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. আনিছুজ্জামান ঘটনাস্থল দ্রুত পরিদর্শন করেন। পুলিশ সুপারের দিকনির্দেশনায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের (সদর সার্কেল) তত্ত্বাবধানে চুয়াডাঙ্গা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তাঁর টিম এবং ডিবির টিম নিয়ে স্থানীয় সাক্ষ্য-প্রমাণ এবং ঘটনাস্থলের সিসি ক্যামেরা ফুটেজ পর্যালোচনা করে অভিযান চালিয়ে ঘটনার সঙ্গে জড়িত দুজনকে আটক করে।
বুধবার বিকেলে নিহত মামুনুর রশিদের ভাই স্বপন আলী বাদী হয়ে ১৫ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও ১০/১৫ জনের বিরুদ্ধে চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। মামলার পর আটক দুজনকে এই মামলায় গ্রেপ্তার দেখায় পুলিশ। পরে তাদেরকে আদালতে সোপর্দ করা হয়।