এক হাতে ইফতারি নিয়ে অন্য হাতে যানবাহন সামলাতে হয় সিএমপির এক ট্রাফিক সার্জেন্টকে। ছবি: সিএমপি

ইফতারির সময় এক হাতে পানির বোতল, অন্য হাতে সামলাচ্ছেন যানবাহন। চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) এক ট্রাফিক পুলিশ সদস্যের এমন একটি ছবি প্রকাশ হয়েছে মঙ্গলবার।
সিএমপির ফেসবুক পেজে প্রকাশিত ওই ছবির কমেন্টে অনেকেই ওই পুলিশ সদস্যের প্রশংসা করেছেন। ছবিটি অনেকে নিজেদের ওয়ালে শেয়ারও করেছেন।
ওই ছবির ক্যাপশনে সিএমপির পক্ষ থেকে লেখা হয়, ‘আগ্রাবাদ কী ইস্পাহানি, ওয়াসার মোড় বা টাইগার পাস, হোক জিইসি কিংবা ইপিজেড মোড়, অথবা ধরা যাক সরকারি-বেসরকারি দপ্তর, একাধিক স্কুল-কলেজ-ইউনিভার্সিটি, আদালত, ক্রীড়া সংস্থার মাঠ, হাসপাতাল, রকমারি দোকানপাট, শপিং মল! রাস্তার দুই দিকে সামান্য এগোনোর পর বেসরকারি বাসস্ট্যান্ড। নিয়ম ভেঙে মূল রাস্তার ওপরই যাত্রী তোলা-নামার প্রবল ইচ্ছা তাদের। ওদিকে হকাররা চায় ফুটপাত দখল করে নিজের বিকিকিনি বাড়াতে। এদিকে বেড়েছে রিকশা, সিএনজি আর প্রাইভেট গাড়ির দৌরাত্ম্যও।
‘নাগরিক সভ্যতার এই নিত্যদিনের হাসল অ্যান্ড বাসলের ভিড়ে আমরা একেবারে ভুলে যাই ট্রাফিক-পুলিশ নামক একটি সত্তার কথা। চৈত্রের এই ত্রাহিত্রাহি মধ্যাহ্নে যখন সামান্য পথে নামলেই আমাদের নাভিশ্বাসের জোগাড়, তখন সারা দিন রোজা রেখে, রোদ-ঝড়-বৃষ্টি-ধোঁয়া-ধুলোবালি আর উচ্চ শব্দ মাথায় করে বিরতিহীন দাঁড়িয়ে রাস্তায় ডিউটি করা ট্রাফিক পুলিশটির কথা কখনও কি ভেবে দেখেছি আমরা?’

পোস্টে আরও বলা হয়, ‘যানবাহনের দখলে থাকা রাস্তার মোড়ে দাঁড়িয়ে বিরতিহীন হর্ন-আওয়াজ-চেঁচামেচি-কোলাহলের আইল্যান্ডে ডিউটিরত ওই ট্রাফিক পুলিশটির ক্ষুধা-তৃষ্ণা ভীষণভাবে প্রকট, ওর ক্লান্তি নির্জলা সত্য আর দিনান্তে অবসাদ ভয়ংকরভাবে বাস্তব। তবুও নাগরিক স্বাছন্দ্য নিয়ে আমাদের যাদের বিস্তর অভিযোগ, তাঁদের বিনীতভাবে জানাচ্ছি, আপনি যাতে সঠিক সময়ে বাড়ি পৌঁছে পরিবারের সঙ্গে ইফতার করতে পারেন, সে জন্য দিনের পর দিন পরিবার ছেড়ে মধ্য সড়কে দাঁড়িয়েই ইফতার করছেন তারা। হয়তো মেলে না বসার সুযোগটিও!
‘তাঁদেরকে ধন্যবাদ না জানাই, আপত্তি নেই। অন্তত একজন মানুষ হিসেবে ওর এই অক্লান্ত পরিশ্রমের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হই। আপনার রমজান ও ঈদ আয়োজন সুন্দর হোক।’