
মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের নেতৃত্বে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের সদস্য হিসেবে ইউনাইটেড ন্যাশনস চিফ অব পুলিশ সামিটে অংশ নিয়েছেন ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ, বাংলাদেশ ড. বেনজীর আহমেদ বিপিএম (বার)। গতকাল বুধবার জাতিসংঘ সদর দফতরে গাম্বিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সেইয়াকো সনকো এবং জাতিসংঘের সন্ত্রাস দমন বিভাগের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল ভ্লাদিমির ভরনোকভের সঙ্গে বৈঠক করেছেন তাঁরা।
জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশের সাফল্য, অনুকরণীয় ভূমিকা ও অবদানের ভূয়সী প্রশংসা করেন গাম্বিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশ পুলিশের ৩২ বছরের অনবদ্য ভূমিকার প্রশংসা করেন। তিনি গাম্বিয়ার শান্তিরক্ষী বিশেষ করে পুলিশ বাহিনীর প্রশিক্ষণ ও সক্ষমতা বৃদ্ধিতে বাংলাদেশের সহযোগিতা কামনা করেন। শান্তিরক্ষী মোতায়েন পূর্ববর্তী প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রেও গাম্বিয়াকে সহযোগিতা করার অনুরোধ জানান তিনি।
গাম্বিয়ার শান্তিরক্ষীদের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে বাংলাদেশ সহযোগিতা দিতে প্রস্তুত রয়েছে বলে আশ্বাস দেন বাংলাদেশের মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
বাংলাদেশের আইজিপি জাতিসংঘ শান্তিরক্ষায় বাংলাদেশ পুলিশের অবদানের কথা তুলে ধরেন। গাম্বিয়ার পুলিশ বাহিনীর জন্য প্রশিক্ষণ সহায়তা প্রদানে বাংলাদেশের পুলিশের সক্ষমতা সম্পর্কে গাম্বিয়ান প্রতিনিধিদলকে অবহিত করেন তিনি।
বিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে মানবিক আশ্রয় দেওয়ার জন্য বাংলাদেশ সরকার ও জনগণের প্রশংসা করেন গাম্বিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। বৈঠককালে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন ত্বরান্বিত করতে পারস্পরিক সহযোগিতার বিষয়ে ফলপ্রসূ আলোচনা করা হয়।
গাম্বিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সন্ত্রাস দমনে বাংলাদেশ ও গাম্বিয়ার মধ্যে সহযোগিতার বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন। সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ‘জিরো টলারেন্স নীতি’ পুনর্ব্যক্ত করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ ক্ষেত্রে গাম্বিয়াকে যেকোনো সহায়তা দিতে প্রস্তুত রয়েছে বলে জানান।
জাতিসংঘের কাউন্টার টেরোরিজম বিভাগের আন্ডার সেক্রেটারি-জেনারেলের (ইউএসজি) সঙ্গে বৈঠককালে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে বাংলাদেশ সরকার গৃহীত সন্ত্রাস দমনবিষয়ক বিভিন্ন উদ্যোগ ও নীতি তুলে ধরেন মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। ভবিষ্যতে এ ক্ষেত্রে পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে জাতিসংঘের এই অফিসের সঙ্গে আরও নিবিড়ভাবে কাজ করবে মর্মেও উল্লেখ করেন তিনি।
ইউএসজি সন্ত্রাস দমন এবং সহিংস চরমপন্থা প্রতিরোধে বাংলাদেশ সরকার গৃহীত বিভিন্ন নীতি, উদ্যোগ এবং সফলতার প্রশংসা করেন। তিনি ২০২৩ সালের জুনে অনুষ্ঠিতব্য সন্ত্রাসবিরোধী সংস্থাগুলোর প্রধানদের উচ্চপর্যায়ের সম্মেলনে বাংলাদেশকে অংশ নিতে আমন্ত্রণ জানান এবং সেখানে বাংলাদেশের এ সংক্রান্ত উত্তম চর্চা ও সাফল্যগাঁথা তুলে ধরার অনুরোধ জানান।
মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং আইজিপি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে জাতিসংঘ উদ্যানে স্থাপিত বঙ্গবন্ধু বেঞ্চ ও রোপণ করা বৃক্ষ পরিদর্শন করেন। এ সময় জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মুহাম্মদ আবদুল মুহিত উপস্থিত ছিলেন।
কনস্যুলেট জেনারেল অব বাংলাদেশ, নিউইয়র্ক অফিস পরিদর্শন করেন বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও আইজিপি। তাঁরা কনস্যুলেটের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয়ে মতবিনিময় করেন। আলোচনাকালে কনসাল জেনারেল সার্বিক কার্যক্রম তুলে ধরে প্রবাসী বাংলাদেশীদের পাসপোর্টসহ অন্যান্য সেবা প্রধান সহজ করাসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী প্রবাসীদের কল্যাণ, পাসপোর্ট, ভিসা ও এনআইডি সংক্রান্ত কার্যক্রম ইত্যাদি ক্ষেত্রে কার্যকর ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং আইজিপি কনসুলেট জেনারেল অব নিউইয়র্ক, বাংলাদেশ অফিসের পরিদর্শন বইতে স্বাক্ষর করেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং আইজিপি কনসুলেট জেনারেল অব নিউইয়র্ক, বাংলাদেশ অফিসে এসে পৌঁছলে কনসাল জেনারেল ড. মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম তাঁদেরকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান।