নরসিংদীতে ডিবির অভিযানে গ্রেপ্তার মানব পাচার চক্রের দুই সদস্য। ছবি: বাংলাদেশ পুলিশ

নরসিংদীতে জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ অভিযান চালিয়ে মানব পাচারকারী চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে। নরসিংদী ও রায়পুরা থানা এলাকায় ৭ মার্চ (সোমবার) রাতে ওই অভিযান পরিচালিত হয়।

গ্রেপ্তার দুজন হলেন মামুন মোল্লা (৩৯) ও সুবল চন্দ্র শীল (৪৫)।

জেলা পুলিশ জানায়, নরসিংদীর মনি চন্দ্র শীল (৩০) লিবিয়ায় আছেন ৫-৬ বছর ধরে। মামুন মোল্লা (৩৯) ও তাঁর ভাই তারেক মোল্লা (৩০) আত্মীয়স্বজনের মাধ্যমে ইতালি নেওয়ার কথা বলে বিভিন্ন লোকের কাছ থেকে অর্থ আদায়সহ বিভিন্ন দেশে মানব পাচার করে আসছিলেন। এরই ধারাবাহিকতায় তাঁরা আশিষ সূত্রধর (২১), মো. আলামিন ফরাজী (৩০) ও নাদিম সরকারকে (২২) ইতালি নেওয়ার কথা বলে প্রত্যেকের সঙ্গে আট থেকে সাড়ে আট লাখ টাকার মৌখিক চুক্তি করেন। বিভিন্ন সময়ে তাঁরা আশিষের পরিবারের কাছ থেকে ছয় লাখ টাকা নিয়েছেন। বাকি ২ লাখ ইতালি পৌঁছানোর পর নেওয়ার কথা ছিল। একইভাবে নাদিম ও আলামিনের পরিবারের কাছ থেকেও দুই লাখ টাকা করে বকেয়া রেখে সাড়ে ছয় লাখ টাকা করে নেন ওই দুই সহোদর।

গত ২৯ নভেম্বর সন্ধ্যায় আশিষকে নিয়ে ঢাকার পথে রওনা হন তারেক। ঢাকার রামপুরায় আশিষের করোনা পরীক্ষা সম্পন্ন হয়। ৩০ নভেম্বর সকাল ৮টায় আশিষকে ইতালির উড়োজাহাজে না তুলে লিবিয়ার উড়োজাহাজে তুলে দেয় মানব পাচারকারী চক্র। লিবিয়ায় পৌঁছার পর থেকে আশিষ বিষয়টি তাঁর বাবাকে জানান। গত ২৭ জানুয়ারি সন্ধ্যার পর থেকে আশিষের সঙ্গে তাঁর পরিবারের আর যোগাযোগ হয়নি। এই অবস্থায় তাঁর বাবা তারেক ও মামুনের কাছে ছেলে কোথায় আছে জানতে চাইলে তাঁরা জানান, আশিষ ইতালিতেই আছেন। এ সময় তাঁরা বাকি ২ লাখ টাকার জন্য চাপ দেন। নাদিম ও আলামিনকেও একই কায়দায় ইতালি না নিয়ে তাঁরা লিবিয়া পাঠিয়ে দেন।

ভুক্তভোগীদের পরিবার পুলিশে অভিযোগ করলে ডিবি কাজ শুরু করে। এ ঘটনায় নরসিংদীর রায়পুরা থানায় একটি মামলাও হয়েছে। তদন্তের একপর্যায়ে ডিবি মানব পাচারকারী চক্রটিকে শনাক্ত করে এবং নরসিংদী ও রায়পুরায় অভিযান চালিয়ে এই চক্রের দুই সদস্য মামুন ও সুবলকে গ্রেপ্তার করে। এই চক্রের বাকি সদস্যদের ধরতে ডিবির অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছে জেলা পুলিশ।