রাজধানীর দক্ষিণখান থানা এলাকা থেকে অপহৃত চার বছরের শিশুকে উদ্ধার এবং অপহরণে জড়িত থাকার অভিযোগে এক আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা ওয়ারী বিভাগ। গ্রেপ্তার আসামির নাম ইসমাইল হোসেন ওরফে জীবন ওরফে আকাশ।
শনিবার (১২ ফেব্রুয়ারি) বেলা সাড়ে ১২টায় ডিবির সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানান ওয়ারী বিভাগের উপ-কমিশনার মুহাম্মদ আশরাফ হোসেন, পিপিএম (সেবা)।
তিনি বলেন, হামিদা খাতুন মেয়ে রাশিদা খানকে নিয়ে দক্ষিণখানে বসবাস করতেন। রাশিদা উত্তরায় বিভিন্ন বাসায় গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করতেন। গত ৬ বছর আগে রাশিদার সঙ্গে মো. মাজহারুল ইসলামের বিয়ে হয়। বিয়ের দুই বছর পর রাশিদা পুত্রসন্তান জন্ম দেন। ছেলের নাম ইমরান (৪)। ইমরানের জন্মের ৩ মাস পর রাশিদার সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন মাজহারুল। পরে জীবিকার তাগিদে হামিদা খাতুন মেয়ে ও নাতিসহ দক্ষিণখান থানা এলাকায় বসবাস করতেন। এ সময় পাশ্ববর্তী বাসার ভাড়াটিয়া ইসমাইল বিভিন্ন সময় রাশিদাকে উত্যক্ত করতেন। এক পর্যায়ে ইসমাইল রাশিদাকে অনৈতিক প্রস্তাব দেন। ইসমাইল ভুক্তভোগী ইমরানকে অসৎ উদ্দেশ্যে বিভিন্ন সময় চকলেট ও চিপস কিনে দিয়ে ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা করতেন। গত ১৫ জুন সন্ধ্যায় ইমরান (৪) নিঁখোজ হয়। অনেক খোঁজাখুজির পর ইমরানকে না পেয়ে ইসমাইলের মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করেন রাশিদা। ইসমাইলের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে জানায়, রাশিদার ছেলেকে কাগজপত্র করে বিক্রি করে দিয়েছে ইসমাইল। ছেলেকে ফিরে পেতে বিভিন্ন সময় ইসমাইলের সঙ্গে যোগাযোগ করলে অনৈতিক প্রস্তাব দিতেন এবং অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতেন। পড়াশোনা না জানায় এবং সঠিক পরামর্শ না পাওয়ায় দীর্ঘদিন ধরে ছেলেকে উদ্ধারের বিষয়ে কোনো আইনি পদক্ষেপ নিতে পারেননি রাশিদা। বিষয়টি ডিএমপির গোয়েন্দা ওয়ারী বিভাগের নজরে এলে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।
তিনি আরো বলেন, তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় ইসমাইলের অবস্থান শনাক্ত করা হয়। এরপর গত ১১ ফেব্রুয়ারি কুমিল্লা জেলা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে নেত্রকোনার পুর্বধলা থানার যাত্রাবাড়ী গ্রাম থেকে ৮ মাস পর অপহৃত শিশু ইমরানকে (৪) উদ্ধার করা হয়।
আসামিকে দক্ষিণখান থানায় দায়ের করা মামলায় আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।