সভায় বক্তব্য দেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মোঃ আখতার হোসেন

বাংলাদেশ পুলিশে বর্তমানে অনেক উদ্ভাবনী চিন্তা ও ধারণার প্রয়োগ হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. আখতার হোসেন। আজ সোমবার সকালে রাজারবাগে বাংলাদেশ পুলিশ অডিটোরিয়ামে ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ মন্তব্য করেন। দেশের শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষার পাশাপাশি জনগণের কল্যাণেও কাজ করার জন্য পুলিশ কর্মকর্তাদের প্রতি তিনি আহবান জানান।
উল্লেখ্য, জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর প্রথমবারের মতো ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে মো. আখতার হোসেনের এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় সভাপতিত্ব করেন ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ, বাংলাদেশ ড. বেনজীর আহমেদ বিপিএম (বার)

ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ, বাংলাদেশ ড. বেনজীর আহমেদ বিপিএম (বার) সভায় সভাপতিত্ব করেন। স্বাগত বক্তব্য দেন অতিরিক্ত আইজি (এঅ্যান্ডআই) ড. মো. মইনুর রহমান চৌধুরী। বাংলাদেশ পুলিশের এআইজি (মিডিয়া অ্যান্ড পিআর) মো. কামরুজ্জামান বিপিএম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়।

সিনিয়র সচিব বলেন, দেশের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।  মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে বাংলাদেশ অনেক দূর এগিয়েছে। সমাজে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে না পারলে দেশের উন্নয়ন হবে না। উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে হলে দেশের আইন-শৃঙ্খলা স্বাভাবিক থাকতে হবে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ পুলিশে বর্তমানে অনেক উদ্ভাবনী চিন্তা ও ধারণার প্রয়োগ হচ্ছে। এগুলোর মধ্যে কমিউনিটি পুলিশিং, বিট পুলিশিং ইত্যাদি অন্যতম।

সিনিয়র সচিব বলেন, জনগণের কাছে যাওয়ার জন্য ‘বিট পুলিশিং’ একটি চমৎকার ম্যাকানিজম। এটি একটি ইনোভেটিভ আইডিয়া, একটি ভালো উদ্যোগ। বিট পুলিশিংকে আরও শক্তিশালী করার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।
তিনি বলেন, পুলিশি়ংয়ের ক্ষেত্রে প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়াতে হবে। অপরাধ দমনের চেয়ে অপরাধ যাতে না হয়, সে ব্যবস্থা করতে হবে। জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী জনগণের বন্ধু হিসেবে পুলিশকে দায়িত্ব পালন করতে হবে।

সিনিয়র সচিব বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে আমলাতন্ত্রের অনেক আধুনিকায়ন হয়েছে। এর মধ্যে বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি (এপিএ), জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশল, ইনোভেশন ইত্যাদি নতুন নতুন বিষয় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। ফলে বাংলাদেশ অন্যান্য সময়ের চেয়ে দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে।

দেশের উন্নয়নে মাঠপর্যায়ের বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে সহযোগিতার ভিত্তিতে জনগণের কল্যাণে কাজ করার ওপর জোর দেন তিনি।

সভায় উপস্থিত পুলিশ কর্মকর্তাগণ দেশ ও জনগণের কল্যাণে পুলিশের সক্ষমতা বৃদ্ধি ও আধুনিকায়নের লক্ষ্যে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তুলে ধরেন। সিনিয়র সচিব স্বল্পতম সময়ের মধ্যে এসব বিষয় সমাধানের আশ্বাস দেন।

সভাপতির বক্তব্যে আইজিপি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে ২০৪১ সালে বাংলাদেশ আধুনিক ও উন্নত দেশে পরিণত হবে। উন্নত দেশের উপযোগী করে পুলিশকেও আধুনিক পুলিশ হিসেবে তৈরি করতে হবে। এ কাজ এক দিনে হবে না। এ জন্য সময় নিয়ে, পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করতে হবে। তিনি বলেন, ‘আমরা আগামী ২০ বছরের জন্য ‘প্রেক্ষিত পরিকল্পনা’ প্রণয়নের মাধ্যমে পুলিশকে উন্নত দেশের উপযোগী পুলিশ হিসেবে গড়ে তুলতে চাই।’

সিনিয়র সচিবের ‘ডেভেলপমেন্ট পুলিশিং’-এর ধারণাকে স্বাগত জানিয়ে আইজিপি বলেন, বিট পুলিশিংয়ের মাধ্যমে পুলিশের সঙ্গে জনগণের বন্ধন আরও দৃঢ় হবে।

পুলিশ অডিটোরিয়ামে আয়োজিত মতবিনিময় সভা

প্রায় চার ঘণ্টা ধরে অনুষ্ঠিত এ সভায় অতিরিক্ত আইজিগণ, ঢাকাস্থ পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটের প্রধানগণ, ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সভার শুরুতে করোনাকালে জীবন উৎসর্গকারী পুলিশ সদস্যদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।