সাধারণ এক মাছ ব্যবসায়ীর হত্যারহস্য বের করতে রাজধানীতে যাত্রী পরিবহনকারী বাহন লেগুনায় চালকের সহকারী হিসেবে দুদিন কাজ করেছেন যাত্রাবাড়ী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) বিলাল আল আজাদ। লাল পাদানিযুক্ত লেগুনা খুঁজে বের করে গ্রেপ্তার করেন চার খুনিকে।

এসআই বিলাল আল আজাদ জানান, ছয় বছর আগেও একটি হত্যারহস্য উদ্‌ঘাটনে বরিশালের গৌরনদী উপজেলায় টানা সাত দিন বাড়ি বাড়ি ফেরি করে পুরোনো জুতা বিক্রি করেছেন। জুতা বিক্রিতে ১ হাজার ৪০০ টাকা মুনাফাও হয়েছিল। একপর্যায়ে আসামির নাম-ঠিকানা পাওয়া যায়। পরে গভীর রাতে মুন্সিগঞ্জে অভিযান চালিয়ে তাঁকে গ্রেপ্তার করতে সমর্থ হন। এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা জানান বিলাল। সূত্র: প্রথম আলো

বিলাল বলেন, ‘যখন হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব নিই, তখন আমি মনে করি, ভুক্তভোগী আমারই স্বজন। যত কষ্টই হোক, চেষ্টা থাকে হত্যায় জড়িতদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তার করা। খুনিদের গ্রেপ্তারের পর ভুক্তভোগীর স্বজনেরা হাউমাউ করে কাঁদেন, আমার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান, তখন কী দারুণ অনুভূতি হয়, তা বলে বোঝানো যাবে না।’

মাছ ব্যবসায়ী (মহির উদ্দিন) হত্যাকারীদের শনাক্ত করার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘ওই ঘটনার কোনো সূত্র ছিল না। সিসিটিভি ক্যামেরায় একটি দৃশ্য পাওয়া যায় যে এক ভুক্তভোগীকে লেগুনা থেকে ফেলে দেওয়া হচ্ছে। সেই লেগুনা শনাক্তের উপায় খুঁজতে গিয়েই হেলপার (চালকের সহকারী) হওয়ার ভাবনা আসে। প্রথমে কাজেই নিতে চায়নি। পরে লেগুনা পরিচালনার দায়িত্বে থাকা এক ব্যক্তির মাধ্যমে কাজটি নিই। তারা ভেবেছে, আমি কাজ শিখছি।’
বিলাল বলেন, ‘বড় কাজ ছিল লেগুনাটি শনাক্ত করা। সেটা দুদিনেই সম্ভব হয়। লেগুনা শনাক্তের পর মাদারীপুরে গিয়ে চালককে পেয়ে যাই। চালক জানান, তিনি আরেকজনকে দায়িত্ব দিয়েছিলেন। তখন ঘটনার দিন যে ব্যক্তি লেগুনা চালিয়েছিলেন, তাঁকে শনাক্ত করা সম্ভব হয়।’

বিলাল আরও বলেন, ‘আমার কাজে
কেউ যদি অনুপ্রাণিত হন, সেটাই হবে আসল সফলতা। তবে পুলিশে এমন অনুপ্রেরণামূলক ঘটনা আরও অনেক আছে।’