বিশ্বের অন্যতম জনবসতিপূর্ণ নগরী ঢাকা। লোকসংখ্যার তুলনায় অনেক ছোট এ নগরীতে অন্যতম সমস্যা হচ্ছে যানবাহন সমস্যা। প্রয়োজনের তুলনায় রাজধানীর গণপরিবহন কম।
যাতায়াতে বেশি সমস্যায় পড়তে হয় নারীদের। বিশেষ করে চাকরিজীবী নারীরাই বেশি সমস্যায় পড়েন। এর মূল কারণ গণপরিবহনের অপ্রতুলতা। নারীর জন্য নির্ধারিত আসন প্রয়োজনের তুলনায় কম। খবর বাসসের।
এসব সমস্যাকে নিয়েই ঢাকায় চলাচল করতে হয় নারীদের। গণপরিবহন নিয়ে কথা হচ্ছিল নাসিমার (ছদ্মনাম) সঙ্গে। তিনি থাকেন ঢাকার মিরপুর ১৪ নম্বরে। সপ্তাহের ছয় দিনই মিরপুর ১৪ থেকে মহাখালী অফিসে যাতায়াত করতে হয় নাসিমাকে। খুব বেশি বেতন না পাওয়ায় অফিসে যাওয়ার জন্য গণপরিবহনই তাঁর মূল ভরসা। এখন করোনা পরিস্থিতির কারণে এই দুর্ভোগ বেড়েছে কয়েক গুণ।
গণপরিবহনে নারী যাত্রীর হয়রানির চিত্র নতুন কিছু নয়। দেশের কোনো না কোনো স্থানে গণপরিবহনে নারী নির্যাতনের ঘটনা ঘটছেই। রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক সাইদুর রহমান বলেন, স্বাভাবিক অবস্থায় প্রতিদিন সারা দেশে প্রায় ৬০ লাখ সিট ট্রিপ হয়, যাদের ২০ শতাংশই নারী যাত্রী। সেই হিসাবে প্রতিদিন প্রায় ১২ লাখ সিটে বিভিন্ন বয়সী নারীরা বিভিন্ন কাজে বিভিন্ন গন্তব্যে যাতায়াত করেন।
এক গবেষণামতে, দেশে নারী নির্যাতন, ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনার ৫০ শতাংশ মহাসড়কে, ২৫ শতাংশ আঞ্চলিক সড়কে ও ২৫ শতাংশ রাজধানীর অভ্যন্তরীণ সড়কে ঘটে। মাঝারি পাল্লার বাসে ঘটে ২৫ শতাংশ, আন্তশহর বাসে ৩০ শতাংশ, স্বল্পদূরত্বের বাসে ২০ শতাংশ এবং দূরপাল্লার সিটিং বাসে ১৫ শতাংশ নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। অধিকাংশ ঘটনার সঙ্গে পারিবহনের চালক, হেলপার ও সুপারভাইজার জড়িত, যাদের বয়স ৪০ বছরের মধ্যে। পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী টহল পুলিশ কম, এমন সব জায়গাতেই নির্যাতনের ঘটনা বেশি ঘটে।
মানবাধিকারকর্মী অ্যাডভোকেট মনোয়ারা বেগম বলেন, শুধু গণপরিবহনে নয়, নারীদের প্রতি হওয়া সকল ধরনের নির্যাতন বন্ধ করতে হলে সবার আগে আমাদের সমাজের পুরুষদের মানসিকতার পরিবর্তন করতে হবে। আর নারীর প্রতি সম্মান এবং শ্রদ্ধাবোধের এই মানসিকতা তৈরি করতে হবে পরিবার থেকেই।