সিআইডির অভিযানে গ্রেপ্তার মনির হোসাইন। ছবি: পুলিশ নিউজ

কর্মসংস্থান ব্যাংকের জ্যেষ্ঠ অফিসার মো. মনির হোসাইন (৩৫)। তাঁর আড়ালে ছিল অন্য এক জগৎ। তিনি ‘এসএসসি বন্ধন ২০০১ বাংলাদেশ’ নামের একটি ফেসবুক গ্রুপ খুলে অনেক নারীকে ব্ল্যাকমেল করেছেন। এই গ্রুপের সদস্য প্রায় ২৭ হাজার। মনির তার মডারেটর।

সাইবার পুলিশ সিআইডির কাছে একটি অভিযোগ আসে, ওই গ্রুপের এক নারী সদস্যকে মানসিক ও শারীরিকভাবে নির্যাতন করছেন মনির।

তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, মনির প্রথমে ওই নারীকে গ্রুপের সদস্য করেন এবং পরে মডারেটর বানানোর প্রস্তাব দেন। ওই নারীকে গ্রুপে আরও ক্ষমতাবান করাসহ নানা সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার প্রলোভন দেখান মনির।

পরবর্তী সময়ে মনির ওই নারীর সঙ্গে বিভিন্ন জায়গায় একসঙ্গে ঘোরাফেরা ও খাওয়া-দাওয়া করেন। বিভিন্ন ছলনা করে তাঁর সঙ্গে সখ্য গড়ে তোলেন। একপর্যায়ে মনির ওই নারীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেন এবং কৌশলে সেই অন্তরঙ্গ মূহূর্তের ভিডিও করে রাখেন। পরবর্তী সময়ে সেই ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে ব্ল্যাকমেল করে একাধিকবার ওই নারীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করেন মনির।

পুলিশের তদন্তে বেরিয়ে আসে, মনির হোসাইন (৩৫) অভিযোগকারী নারী ছাড়াও একাধিক নারীর সঙ্গে একই প্রক্রিয়ায় শারীরিক সম্পর্ক করে পরবর্তী সময়ে তাঁদের ব্ল্যাকমেল করে আসছিলেন। এর অংশ হিসেবে বাড্ডা এলাকায় তাঁর গোপন হেরেমখানা তৈরি করেন।

পুলিশ আরও জানায়, মনিরের হেরেমখানার বাইরে ছিল বাঁশের বেড়া ও টিনের ঘর। দেখলে চোখে পড়ার মতো তেমন কিছু মনে হবে না, কিন্তু ভেতরে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত যন্ত্র (এসি) সংবলিত কক্ষ, উন্নত শয়নকক্ষ, অ্যাটাচ টয়লেট, ইয়াবা সেবন করার ব্যবস্থা ছিল। একই সঙ্গে ছিল একাধিক গোপন ক্যামেরাও। এই গোপন ক্যামেরা দিয়ে মনির তাঁর অনৈতিক কর্মকাণ্ডের রেকর্ড রাখতেন।

৪ জুন সন্ধ্যায় সাইবার ইন্টেলিজেন্স অ্যান্ড রিস্ক ম্যানেজমেন্টের একটি টিম ঢাকার রামপুরা এলাকায় অভিযান চালিয়ে মনির হোসাইনকে গ্রেপ্তার করে।

গ্রেপ্তারকালে মনিরের কাছ থেকে বিভিন্ন নারীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কের ভিডিও ও ছবিসংবলিত দুটি মোবাইল ফোন, তিনটি সিম কার্ড, দুটি মেমোরি কার্ড ও দুটি গোপন ক্যামেরা/ডিভাইস জব্দ করা হয়।

মনিরের নামে ডিএমপির রূপনগর থানায় পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করা হয়েছে।