পুলিশের হেফাজতে গ্রেপ্তার আসামি। ছবি: বাংলাদেশ পুলিশ

যশোরের অভয়নগর থানার বাসিন্দা তমা সরকার (ছদ্মনাম) কৃষি ডিপ্লোমা পাস করার পর কোনো চাকরি না পাওয়ায় অনলাইনে কাজ করেন এবং সেখান থেকে তিনি অর্থ উপার্জন করেন। তাঁর সাথে আসামি সুমন বসুর (৩৬) ফেসবুকে পরিচয় হয়। আসামি নিজেকে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের এসআই বলে পরিচয় দেন। পরিচয়ের পর আসামির সাথে বাদীর মোবাইলে কথা হতো। কথা বলার একপর্যায়ে দুজনের মধ্যে ভালোবাসার সম্পর্ক গড়ে ওঠে। প্রেমের সম্পর্কের কারণে আসামি মাঝেমধ্যে বাদীর বাড়িতে আসা-যাওয়া করতেন এবং বাদীকে বিয়ে করবে বলে প্রলোভন দেখাতেন। আসামি বাদীকে বিভিন্ন সময় যশোরের বিভিন্ন হোটেলে ও নড়াইল জেলার অরুনিমা রিসোর্টে রুম ভাড়া নিয়ে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে তাঁর ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেন। আসামি বিভিন্ন সময় তাঁর ব্যক্তিগত প্রয়োজনে বাদীর কাছ থেকে বিকাশ ও নগদ একাউন্টের মাধ্যমে ধার হিসাবে ১৪ লক্ষ ৮৯ হাজার ৮৮০ টাকা নেন। পরে আসামির আচরণে সন্দেহ হলে বাদী আসামির গ্রামের বাড়িতে গিয়ে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, তিনি বিবাহিত। তাঁর স্ত্রী-সন্তান আছে। তখন বাদী তাঁর দেওয়া টাকা ফেরত চাইলে আসামি ফেরত দিতে অস্বীকার করেন এবং বাদীকে বিয়ে করবেন নাত বলে জানিয়ে দেন। তখন বাদী বিশ্বাসভঙ্গ করে টাকা আত্মসাৎ করার বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পিবিআই পুলিশ সুপার বরাবর আবেদন করেন।

বাদীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিষয়টি পিবিআই, যশোরের সাধারণ ডায়েরি হিসেবে নথিভুক্ত করে পুলিশ সুপার, পিবিআই, যশোর এসআই মো. হাবিবুর রহমানকে ছায়া তদন্তের জন্য নির্দেশ দেন।

এসআই মো. হাবিবুর রহমানের অনুসন্ধানকালে জানা যায়, আসামি সুমন বসু (৩৬) নিজেকে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের এসআই পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন মেয়ের সাথে সখ্য গড়ে তোলেন। পরে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে তাদের কাছ থেকে নগদ টাকা নেন। আগেও তিনি একাধিক মেয়ের সাথে প্রতারণা করেছেন। তিনি বাদীর সঙ্গে একইভাবে সখ্য গড়ে তোলেন এবং বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে নগদ ও বিকাশের মাধ্যমে ১৪ লক্ষ ৮৯ হাজার ৮৮০ টাকা গ্রহণ করেন। তিনি একজন বড় মাপের প্রতারক বলে জানা যায়।
এ বিষয়ে অনুসন্ধানকালে সুমন বসুর ঘটনার সঙ্গে জড়িত মর্মে সত্যতা পাওয়া গেলে পিবিআই প্রধান বনজ কুমার মজুমদার বিপিএম (বার), পিপিএম, অ্যাডিশনাল আইজি, বাংলাদেশ পুলিশের সঠিক তত্ত্বাবধানে ও দিক নির্দেশনায়, পিবিআই যশোর জেলা ইউনিট ইনচার্জ পুলিশ সুপার রেশমা শারমিন, পিপিএম-সেবা এর নেতৃত্বে এসআই মো. হাবিবুর রহমান, এসআই স্নেহাশিস দাশ সঙ্গীয় অফিসারসহ একটি আভিযানিক দল ২ জুলাই সকাল ৯টায় গোপালগঞ্জ সদর থানাধীন মানিকহার গ্রাম থেকে আসামিকে গ্রেপ্তার করে। পরে বাদী আসামির বিরুদ্ধে অভয়নগর থানায় অভিযোগ দায়ের করলে অভয়নগর থানা তা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা হিসেবে গ্রহণ করে।

আসামিকে আজ ৩ জুলাই যশোরের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, আমলি আদালত, যশোরে সোপর্দ করা হয়।