ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ (আইজিপি), বাংলাদেশ চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বিপিএম (বার), পিপিএম বলেছেন, বর্তমানে দেশে জঙ্গিবাদ কার্যকরভাবে নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। জঙ্গিবাদ দমনে বাংলাদেশ পুলিশের ঈর্ষণীয় সাফল্যের ফলে দেশে স্বাভাবিক আইনশৃঙ্খলা বিরাজ করছে। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন হয়েছে। মানুষের মাথাপিছু আয় বেড়েছে।
মঙ্গলবার (২ জুলাই) দুপুরে রাজশাহী পুলিশ লাইনসের ড্রিল শেডে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) ৩২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
পুলিশপ্রধান বলেন, দেশে একসময় সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদের ভয়াবহতা ছিল। আমরা রাজশাহীতে বাংলা ভাইয়ের উত্থান দেখেছি। জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ‘জিরো টলারেন্স’ নীতির আলোকে আমরা সবাই একযোগে কাজ করে জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদ দমনে সক্ষম হয়েছি।
আরএমপি কমিশনার বিপ্লব বিজয় তালুকদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমির প্রিন্সিপাল (অতিরিক্ত আইজিপি) মো. মাসুদুর রহমান ভূঞা, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক মো. আব্দুল খালেক, রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি মো. আনিসুর রহমান, রাজশাহী কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. আবদুল খালেক, রাজশাহী জেলার পুলিশ সুপার মো. সাইফুর রহমান, রাজশাহী জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর ইকবাল, রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী কামাল প্রমুখ। অনুষ্ঠানে নগরীর গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ, আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ, আরএমপি ও রাজশাহী রেঞ্জের ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাবৃন্দ এবং বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
পুলিশপ্রধান বলেন, দেশের যেকোনো প্রয়োজনে বাংলাদেশ পুলিশের অকুতোভয় সদস্যরা দায়িত্ব পালনে কখনো কুণ্ঠাবোধ করেনি। যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় বাংলাদেশ পুলিশ প্রস্তুত রয়েছে।
তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ২০৪১ সালে বাংলাদেশকে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ হিসেবে গড়ে তোলার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন। স্মার্ট বাংলাদেশের উপযোগী ‘স্মার্ট পুলিশ’ গঠনেও আমরা কাজ করছি।
রাজশাহী নগরবাসীকে ধন্যবাদ জানিয়ে আইজিপি বলেন, আপনারা পুলিশের কাজে সহযোগিতা করেছেন, সমর্থন জুগিয়েছেন, আস্থা রেখেছেন বলেই এই নগরীর আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় আরএমপির অগ্রযাত্রা সাধিত হয়েছে। ভবিষ্যতেও আপনাদের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে বলে আশা করছি।
আইজিপি দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে বলেন, পুলিশের সেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে বাংলাদেশ পুলিশের প্রত্যেক সদস্য আন্তরিকতা ও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে যাবে।
আইজিপি প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে প্রকাশিত বিশেষ স্মরণিকা ‘দৌবারিক’-এর মোড়ক উন্মোচন করেন। অনুষ্ঠানে আরএমপির জনমুখী কার্যক্রমের ওপর একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী স্মরণীয় করে রাখতে কেক কাটা হয়।
এর আগে মঙ্গলবার সকালে আরএমপি হেডকোয়ার্টার্স চত্বরে বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে আরএমপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর উদ্বোধন ঘোষণা করেন আইজিপি। এ উপলক্ষে একটি বর্ণাঢ্য র্যালি বের হয়। আইজিপি আরএমপি হেডকোয়ার্টার্স চত্বরে একটি গাছের চারা রোপণ করেন।
বিকেলে আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বিপিএম (বার), পিপিএম এবং পুনাক সভানেত্রী ডা. তৈয়বা মুসাররাত জাঁহা চৌধুরী জেলা পুলিশ লাইনসে আরএমপি ও রাজশাহী জেলা পুলিশ আয়োজিত বার্ষিক পুলিশ সমাবেশ ও ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করেন।
উল্লেখ্য, চারটি থানা নিয়ে ১৯৯২ সালের ১ জুলাই আরএমপি গঠিত হয়। বর্তমানে ৪৭২ বর্গকিলোমিটার আয়তনের আরএমপির থানার সংখ্যা ১২টি।
