এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় পরীক্ষার্থীদের সহায়তায় ডিএমপির কুইক রেসপন্স টিম (QRT) প্রস্তুত থাকবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) মো. মুনিবুর রহমান, বিপিএম-সেবা।

আজ বৃহস্পতিবার সকালে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা উপলক্ষে ডিএমপির ট্রাফিক পরিকল্পনা নিয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা বলেন।

অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) মো. মুনিবুর রহমান বিপিএম-সেবা বলেন, আগামী রবিবার (৩০ জুন) থেকে এইচএসসি, আলীম ও ভোকেশনাল পরীক্ষা শুরু হতে যাচ্ছে। এবার ঢাকা মহানগরীতে ৮০টি পরীক্ষাকেন্দ্রে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। প্রতিবছর এইচএসসি পরীক্ষায় উল্লেখযোগ্য ছাত্র-ছাত্রী অংশগ্রহণ করে থাকে। এই পরীক্ষার সাথে যারা সম্পৃক্ত, তাদেরকে আমরা সর্বাত্মক সহযোগিতার চেষ্টা করে থাকি। পরীক্ষার্থীদের যেকোনো অসুবিধা মোকাবেলা করতে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের প্রতিটি জোন কর্তৃক আলাদা আলাদা ‘কুইক রেসপন্স টিম’ প্রস্তুত থাকবে এবং আলাদা ট্রাফিক পরিকল্পনা গ্রহণ করা হবে।

তিনি আরও বলেন, এর পাশাপাশি এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা উপলক্ষে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের পক্ষ থেকে বেশ কিছু পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। সেগুলোর মধ্যে রয়েছে:

পরীক্ষার হলে রওনা দেওয়ার আগে অবশ্যই প্রবেশপত্রসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র এবং কলম সাথে নিন।

পরীক্ষা শুরুর আগের দিন কেন্দ্রের অবস্থান ভালো করে জেনে নিন এবং আপনার বাসা থেকে কোন রুটে যেতে হবে, তার পরিষ্কার ধারণা নিন।
পরীক্ষা শুরুর আগে কেন্দ্রে উপস্থিত হওয়ার জন্য পরীক্ষার্থী/অভিভাবকদেরকে সড়ক-মহাসড়কের যানজটের বিষয়টি মাথায় রেখে পর্যাপ্ত সময় হাতে নিয়ে বাসা হতে বের হওয়ার জন্য অনুরোধ করা হলো। পরীক্ষা শুরুর ন্যূনতম ৩০ মিনিট আগে পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছাতে হবে।
যেসব সড়ক পারাপারে রেলক্রসিং আছে, তা বিবেচনা করে বাসা থেকে সময় নিয়ে রওনা দেওয়া জরুরি। আপনার বাসার বা পরীক্ষাকেন্দ্রের আশপাশের সড়কে যদি কোনো খোঁড়াখুঁড়ি/মেরামত কাজ চলে, তবে তা বিবেচনায় নিয়ে সময়মতো রওনা দিতে হবে।
পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকগণকে সাবধানতা অবলম্বন করে যানবাহনে চলাচলের অনুরোধ করা হলো। কোনো অবস্থাতেই গণপরিবহনে ঝুলে ঝুঁকিপূর্ণভাবে পরীক্ষাকেন্দ্রে আসা-যাওয়া করবেন না।

যেসব পরীক্ষার্থী মোটরসাইকেলে পরীক্ষাকেন্দ্রে যাবেন, তাঁরা অবশ্যই নিরাপত্তার কারণে হেলমেট পরবেন।
পরীক্ষাকেন্দ্রে আগত পরীক্ষার্থীরা যানজট বা কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত সমস্যার সম্মুখীন হলে কর্তব্যরত ট্রাফিক পুলিশের সহযোগিতা নেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হলো। ঝুঁকি নিয়ে রাস্তা পারাপার থেকে বিরত থাকুন, প্রয়োজনে ফুটওভারব্রিজ ব্যবহার করুন এবং পুলিশের সহায়তা নিন। রাস্তা পারাপারে জেব্রা ক্রসিং থাকলে ব্যবহার করুন।
পরীক্ষাকেন্দ্রের আশপাশে অযাচিত পার্ক না করে অভিভাবক/পরীক্ষার্থীদের ব্যবহৃত যানবাহন পরীক্ষাকেন্দ্র থেকে দূরবর্তী নিরাপদ স্থানে পার্ক করার জন্য অনুরোধ করা হলো।
পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা পরীক্ষাকেন্দ্রের সামনের সড়কে দাঁড়িয়ে গেলে যানবাহন চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়। ফলে অন্য পরীক্ষার্থীদের কেন্দ্রে পৌঁছাতে দেরি হয়। তাই পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকদের কেন্দ্রের সামনে প্রধান গেটে ও রাস্তায় না দাঁড়িয়ে ফুটপাতে দাঁড়ানোর জন্য অনুরোধ করা হলো। পরীক্ষাকেন্দ্রের সামনে আড্ডা দেওয়া থেকে বিরত থাকুন।

গত একবছরে মেট্রোরেল, এলিভেডেট এক্সপ্রেসওয়ে ঢাকা মহানগরীর ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছে। এগুলো ব্যবহার করেও পরীক্ষাকেন্দ্রে দ্রুত পৌঁছানো যাবে।
বর্তমানে বর্ষাকাল চলছে বিধায় অবশ্যই ছাতা, রেইনকোট কিংবা বৃষ্টি থেকে রক্ষার প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি সাথে নিয়ে বাসা হতে বের হওয়ার জন্য অনুরোধ করা হলো।
যেকোনো জরুরি প্রয়োজনে ৯৯৯-এ ফোন করুন।
তিনি পরীক্ষাকেন্দ্রের আশপাশে হর্ন বাজিয়ে পরীক্ষার্থীদের বিরক্তির সৃষ্টি না করা এবং বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানো থেকে বিরত থাকতে নগরবাসীকে আহ্বান জানান। সেই সাথে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা উপলক্ষে যানবাহন চলাচলে শৃঙ্খলা রক্ষা ও যানজট এড়ানোর লক্ষ্যে সম্মানিত নাগরিকবৃন্দের সর্বাত্মক সহযোগিতা কামনা করেন।

ব্রিফিংকালে ডিএমপির যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক-উত্তর) আবু রায়হান মুহাম্মদ সালেহ; যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক-দক্ষিণ) এস এম মেহেদী হাসান বিপিএম-বার, পিপিএম-বার; ট্রাফিক-ওয়ারী বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ আশরাফ ইমাম ও মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস্ বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মো. ফারুক হোসেন উপস্থিত ছিলেন। সূত্র: ডিএমপি নিউজ।