এক মাস সময় বেঁধে দিয়ে কারও কাছে ১০ হাজারের বেশি ডলার থাকলে তা বিক্রি বা ব্যাংকে জমা রাখার নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

আগামী ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে এ নির্দেশনা মানতে হবে; এরপর সীমাতিরিক্ত ডলার পাওয়া গেলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।

বুধবারের এ নির্দেশনায় বিদেশি মুদ্রা সংরক্ষণের নিয়ম মেনে ডলার বিক্রি বা জমা রাখার বাধ্যতামূলক আইনের বিষয়টি সবাইকে স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, অতিরিক্ত বৈদেশিক মুদ্রা ধারণ ফরেন এক্সচেঞ্জ রেগুলেশন অ্যাক্ট, ১৯৪৭ এর আওতায় দণ্ডনীয় অপরাধ।

সম্প্রতি সরবরাহ সঙ্কটে ডলারের দাম অনেক বেড়ে যাওয়ার প্রেক্ষাপটে কারও কাছে মজুত থাকা প্রধান এ বৈদেশিক মুদ্রা বাজারে আনতে এমন পদক্ষেপের কথা জানাল বাংলাদেশ ব্যাংক।

অভিযোগ রয়েছে, ডলার সংকটের সুযোগ নিয়ে ব্যক্তিপর্যায়ে অনেকেই ডলার কিনে মজুত করেছেন। এতে খোলাবাজারে ডলারের কেনাবেচা কমে গিয়ে ব্যাপক সংকট দেখা দিয়েছে।

এদিকে বুধবারও চাহিদা মেটাতে বিভিন্ন ব্যাংকের কাছে ৯৫ টাকা দরে পাঁচ কোটি ডলার বিক্রি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

আর খোলাবাজারে ডলার বিক্রি হয়েছে সর্বোচ্চ ১০৯ টাকা ৭৫ পয়সা বলে জানিয়েছেন মানি চেঞ্জার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক মো. হেলাল শিকদার।

বাংলাদেশ ব্যাংকের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘’নিবাসী বাংলাদেশি ব্যক্তি বিদেশ থেকে সঙ্গে আনা অনধিক ১০ হাজার মার্কিন ডলার বা সমমূল্যমানের বৈদেশিক মুদ্রা নিজের কাছে বা অনুমোদিত ডিলার ব্যাংকে রেসিডেন্ট ফরেন কারেন্সি ডিপোজিট হিসাবে জমা রাখতে পারেন, পরবর্তী বিদেশ যাত্রায় উক্ত বৈদেশিক মুদ্রা সঙ্গে নিয়েও যেতে পারেন।

‘১০ হাজার মার্কিন ডলারের অতিরিক্ত পরিমাণ আনা বৈদেশিক মুদ্রা দেশে আসার এক মাসের মধ্যে অনুমোদিত ডিলার ব্যাংকে/লাইসেন্সধারী মানি চেঞ্জারের কাছে বিক্রি বা রেসিডেন্ট ফরেন কারেন্সি ডিপোজিট হিসাবে জমা রাখা নিবাসী বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য বাধ্যতামূলক।’

আইনের এ বিষয়গুলো স্মরণ করিয়ে দিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সীমাতিরিক্ত বৈদেশিক মুদ্রা কারও কাছে থাকলে তা আগামী ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে ব্যাংক বা লাইসেন্সধারী মানি চেঞ্জারের কাছে বিক্রি করতে নির্দেশনা দিয়েছে।

যদিও বৈদেশিক মুদ্রা সংরক্ষণের বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের এক সার্কুলারে বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি বিদেশ ভ্রমণের প্রয়োজনে বার্ষিক সীমা ১২ হাজার ডলার পাসপোর্টে এনডোর্সমেনট করে রাখতে পারেন একসঙ্গে।

সে বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘সে ক্ষেত্রে বিদেশ যাওয়ার প্রমাণ হিসেবে হোটেল বুকিং, বিমান ভাড়াসহ বিভিন্ন তথ্য ব্যাংকে দিতে হয়। প্রয়োজনীয় শর্ত পূরণ করলেই ওই ব্যক্তির পাসপোর্টে ডলার এনডোর্সমেন্ট করে থাকে ব্যাংক।’

প্রধান এ বিদেশি মুদ্রার ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার কারণে সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংক ডলার বেশি কিছু নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ব্যাংকের নগদ ডলার কেনাবেচার মধ্যে ব্যবধান এক টাকা এবং মানি এক্সচেঞ্জের ক্ষেত্রে ব্যাংকের নগদ বিক্রির চেয়ে সর্বোচ্চ দেড় টাকা বেশি হতে পারবে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এমন সিদ্ধান্তের পর মানি চেঞ্জারদের সংগঠন খোলাবাজারে ডলারের সর্বোচ্চ দর বেঁধে দেওয়ার সিদ্ধান্তের কথাও জানিয়েছে।