শতভাগ স্বচ্ছতা নিশ্চিত করে শারীরিক যোগ্যতাসম্পন্ন ও মেধাবীদের পুলিশ কনস্টেবল পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। পটুয়াখালীতে ৩২ জন পুলিশ সদস্য নিয়োগ পেয়েছেন। তাঁরা সবাই নিম্নমধ্যবিত্ত এবং দরিদ্র পরিবারের সন্তান।

জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, এবার যে ৩২ জন চাকরি পেয়েছেন, তাঁদের মধ্যে কৃষক পরিবারের ৭ জন, দিনমজুর পরিবারের ৩ জন, চায়ের দোকানি ১ জন, মসজিদের ইমামের ১ জন ছেলে রয়েছেন। খবর ঢাকা পোস্টের।

এ বছরের নিয়োগে শতভাগ স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা হয়েছে। যে কারণে মেধাবী এবং শারীরিক যোগ্যতাসম্পন্নরাই নিয়োগ পেয়েছেন। রিকশাচালক, রংমিস্ত্রি বা দিনমজুরির কাজ করেও ছেলের সাফল্যে এসব পরিবারের সদস্যরা খুশি।

এবার পুলিশের কনস্টেবল পদে চাকরি হওয়া অভি লাল বলেন, তাঁর বাবা বাউফলের কেশবপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা শিবু লাল। বাজারে ছোট্ট চায়ের দোকান দিয়ে তাঁর চার ভাই-বোন ও মায়ের সংসার পরিচালিত হয়। সকাল থেকে শুরু করে গভীর রাত পর্যন্ত চা বানিয়ে দিন কাটে তাঁর বাবার।

তিনি আরও বলেন, ১০০ টাকার ব্যাংক ড্রাফটের মাধ্যমে বাংলাদেশ পুলিশের কনস্টেবল পদে চাকরি হয়েছে তাঁর। পুলিশে চাকরি হওয়ায় নতুন করে সোনালি দিনের স্বপ্ন দেখছেন তিনি ও তাঁর পরিবার।
এমন নিম্নবিত্ত পরিবারের আরেক কন্যা সাকিবুন নেসা হ্যাপি। হ্যাপির বাবা গলাচিপা এলাকায় দিনমজুরি করেন। তিন কন্যাসন্তানের মধ্যে হ্যাপি সবার বড়। পুলিশের কনস্টেবল পদে হ্যাপির চাকরি হওয়ায় দরিদ্র পরিবারটি এখন আলোর দেখা পেয়েছে। তাই তো হ্যাপি ও তাঁর পরিবারে এখন আনন্দের শেষ নেই।

এমন নিম্নবিত্ত পরিবারের অরেক কন্যা ফারজানা। তিনি বলেন, ‘আমি কল্পনাও করতে পারিনি চাকরি হবে। আমার বাবা একজন চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী। এবার পুলিশের কনস্টেবল পদে চাকরি হওয়ায় আমার পরিবার এখন আলোর মুখ দেখছে। এ আনন্দ প্রকাশ করার মতো না।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা বিনা টাকায় চাকরি পাইছি। চেষ্টা করব আমাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করার। আমাদের সমাজকে দুর্নীতিমুক্ত করার চেষ্টা করব।’

চায়ের দোকানি বাবা শিবু লাল বলেন, ‘অভাবের সংসারে ছেলের চাকরি হওয়ায় আমি অনেক খুশি। ঈশ্বরের কাছে সরকার এবং পুলিশপ্রধানের জন্য দোয়া করি। ঈশ্বর তাঁদের মঙ্গল করুক।’

পটুয়াখালীর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ জানান, বর্তমান আইজিপি ড. বেনজীর আহমেদের প্রচেষ্টায় পুলিশের নতুন এই নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। জেলায় অনলাইনে প্রথমে ৫৪৪৫ জন চাকরিপ্রার্থী আবেদন করেন। যাঁদের মধ্যে ১২৮০ জনের শারীরিক সক্ষমতা যাছাই করে ৩২৫ জনের লিখিত পরীক্ষা হয়। এরপর ৬২ জনের ভাইভা শেষে ৩২ জনকে নিয়োগের জন্য বাছাই করা হয়।