ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের সামনে প্রতারক চক্রের কর্মকাণ্ড সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরেন ডিএমপির যুগ্ম পুলিশ কমিশনার সঞ্জিত কুমার রায়, বিপিএম-সেবা।

বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে নকল সোনার বার, নকল ম্যাগনেটিক পিলার ও কয়েন এবং ভুয়া কাস্টমস্ কর্মকর্তা পরিচয়ধারী প্রতারক চক্রের হোতাসহ ১০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা ওয়ারী বিভাগ। খবর ডিএমপি নিউজের।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন -মো. বশার মোল্লা, শেখ সোহাগ হোসেন মিন্টু, দ্বীন মোহাম্মদ, মো. জুয়েল শিকদার, কথিত ড. মোজাম্মেল খান ওরফে আকাশ, শেখ আলী আকবর, মো. জামাল ফারাজী, মো. সোহেল শিকদার, মো. বিল্লাল হোসেন ও মো. শাহরিয়ার ইকবাল।

রোববার (২৩ অক্টোবর ) রাজধানীর বিমানবন্দর ও দক্ষিণখান থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা ওয়ারী বিভাগের সংঘবদ্ধ অপরাধ ও গাড়িচুরি প্রতিরোধ টিম।

এ সময় তাদের হেফাজত থেকে ৪টি নকল সোনার বার, সোনার বার তৈরির মেশিন, তামার তার, তার গলানোর কেমিক্যাল, হিউম্যান রাইটসের নকল আইডি কার্ড এবং সিভিল এভিয়েশনের নকল আইডি কার্ড উদ্ধার করা হয়।

আজ সোমবার (২৪ অক্টোবর ) বেলা সাড়ে ১১ টায় ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে উপস্থিত সাংবাদিকদের সামনে এ বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন ডিএমপির যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (অ্যাডমিন অ্যান্ড ডিবি দক্ষিণ) সঞ্জিত কুমার রায়, বিপিএম-সেবা।

ডিবির যুগ্ম পুলিশ কমিশনার বলেন, ভাটারা থানার একটি প্রতারণা মামলার তদন্তে একজন মহিলা ভিকটিমের সন্ধান পাওয়া যায়, যিনি প্রতারক চক্রের ফাঁদে পড়ে দুটি ফ্ল্যাট বিক্রি করে সব টাকা প্রতারকদের হাতে তুলে দিয়ে সর্বস্বান্ত হয়েছেন। ভাটারা থানা এই মামলাসহ বিমানবন্দর থানার অপর একটি প্রতারণার মামলা তদন্তকালে এজাহারনামীয় আসামি ও প্রতারক চক্রের মূলহোতাসহ ১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

তিনি জানান, প্রতারক চক্রের সদস্যরা একেক জন একেক চরিত্রে অভিনয় করতেন। ম্যাগনেটিক পিলার, কয়েন ও সোনার বার সরবরাহ করার কথা বলে সুকৌশলে সাধারণ মানুষের সাথে প্রতারণা করে ১১ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে এ প্রতারক চক্র।

তিনি আরও জানান, গ্রেপ্তার মো. বশার মোল্লা নিজেকে কাস্টমস ডাইরেক্টরের এপিএস হিসাবে পরিচয় দিয়ে কম দামে স্বর্ণের বার কেনার জন্য সাধারণ মানুষকে আকৃষ্ট করেন।

শেখ সোহাগ হোসেন মিন্টু নিজেকে কাস্টমস ডাইরেক্টর অ্যাডমিন হিসাবে ক্রেতার সাথে দেখা করে বিশ্বস্ততা অর্জন করেন।

দ্বীন মোহাম্মদ ও মো. জুয়েল শিকদার স্বর্ণকার হিসাবে নকল সোনার বার তৈরি করে।

কথিত ড. মোজাম্মেল খান ওরফে আকাশ নিজেকে কেমিস্ট ও পরমাণু বিশেষজ্ঞ পরিচয় দেন।

শেখ আলী আকবর নিজেকে অবসরপ্রাপ্ত মেজর হিসাবে পরিচয় দেন।মো. জামাল ফারাজী, মো. সোহেল শিকদার, মো. বিল্লাল হোসেন এবং মো. শাহরিয়ার ইকবাল ক্রেতা যোগাড় করে কথিত পরমাণু বিজ্ঞানীর কাছে নিয়ে যেতেন। পরবর্তীতে তারা ম্যাগনেটিক পিলার, কয়েন ও সোনার বার পরীক্ষা করে সঠিক আছে মর্মে ভুয়া রিপোর্ট  দিতেন।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কলাবাগান থানা, দক্ষিণখান থানা, উত্তরা-পূর্ব থানা, কাশিমপুর থানা ও বাগেরহাট জেলার ফকিরহাট থানায় একাধিক মামলা রয়েছে মর্মে জানান গোয়েন্দা পুলিশের এ কর্মকর্তা।

কেউ যদি কখনো সোনার বার, ম্যাগনেটিক পিলার কিংবা মূল্যবান কয়েন বিক্রির প্রস্তাব দেয় তাহলে সে প্রস্তাবে রাজি না হয়ে গোয়েন্দা পুলিশকে অবগত করার আহবান জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা।

গোয়েন্দা ওয়ারী বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মুহাম্মদ আশরাফ হোসেন, পিপিএম এর সার্বিক দিকনির্দেশনায় অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মো. তরিকুর রহমানের তত্ত্বাবধানে সংঘবদ্ধ অপরাধ ও গাড়িচুরি প্রতিরোধ টিমের পুলিশ পরিদর্শক(নিরস্ত্র) মো. আরজুনের নেতৃত্বে অভিযানটি পরিচালিত হয়।