অভ্যুত্থানবিরোধী বিক্ষোভে অংশ নিয়ে স্লোগানমুখর দুই বিক্ষোভকারী। ছবি: এএফপি

আফ্রিকার দেশ সুদানে বেসামরিক সরকারকে হটিয়ে ক্ষমতা দখলের পক্ষে সাফাই গেয়েছেন দেশটির শীর্ষ জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান। তিনি বলেছেন, গৃহযুদ্ধ এড়াতেই সামরিক বাহিনী অভ্যুত্থান ঘটিয়েছে। খবর বিবিসির।

সুদানে গত সোমবার (২৫ অক্টোবর) ভোরে অভ্যুত্থান ঘটায় সামরিক বাহিনী। সে সময় গ্রেপ্তার করা হয় দেশটির অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানমন্ত্রী আবদালা হামদো, তাঁর স্ত্রীসহ বেসামরিক নেতাদের। এরপর তাঁদের নেওয়া হয় অজ্ঞাত স্থানে।

পরে ২৬ অক্টোবর (মঙ্গলবার) সামরিক বাহিনীর তরফ থেকে জানানো হয়, প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর স্ত্রীকে বাসভবনে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। সামরিক বাহিনী জানায়, প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর স্ত্রীকে তাঁদের ‘নিরাপত্তার স্বার্থেই’ জেনারেল বুরহান বাসভবনে রাখা হয়েছিল।

২৫ অক্টোবর অভ্যুত্থান ঘটানোর পর ২৬ অক্টোবর প্রথম জনসমক্ষে কথা বলেন জেনারেল বুরহান। খার্তুমে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘আমরা গত সপ্তাহে যে বিপদের আঁচ করছিলাম, তাতে দেশে গৃহযুদ্ধ শুরু হয়ে যেতে পারত। প্রধানমন্ত্রী তাঁর বাসভবনেই ছিলেন। তবে তাঁর ক্ষতির আশঙ্কা করছিলাম আমরা। গত রাতেও আমি তাঁর সঙ্গেই ছিলাম।’

সুদানের শীর্ষ এই সামরিক কর্মকর্তা বলেন, রাজনৈতিক গোষ্ঠীগুলো নিরাপত্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষকে উসকে দিচ্ছিল। এ কারণেই বেসামরিক সরকারকে হটাতে হয়েছে, রাজনৈতিক নেতাদের গ্রেপ্তার করতে হয়েছে এবং দেশে জরুরি অবস্থা জারি করতে হয়েছে।

খার্তুম থেকে বিবিসির প্রতিনিধি মোহাম্মদ ওসমান জানান, জেনারেল বুরহান মন্ত্রিসভার একটি লম্বা তালিকা প্রস্তুত করেছেন। তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, দুদিনের মধ্যে বিচার বিভাগের শীর্ষ পদগুলোয় নিয়োগ দেবেন। তাঁর এসব ঘোষণার মধ্যেই প্রতীয়মান হয় যে অভ্যুত্থান তাৎক্ষণিক কোনো পদক্ষেপ ছিল না। এর জন্য বেশ আগে থেকেই প্রস্তুতি চলছিল।

এদিকে সুদানের রাজধানী খার্তুমসহ বিভিন্ন শহরে ২৬ অক্টোবরও অভ্যুত্থানবিরোধী বিক্ষোভ হয়েছে। তবে এ দিন রাজধানী শহরের সেতা ও দোকানগুলো বন্ধ ছিল। ফোন ও ইন্টারনেট সংযোগেও বিঘ্ন ঘটে। সাম্প্রতিকতম এই অস্থিতিশীলতায় দেশটিতে কমপক্ষে ১০ জন নিহত হয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে।