১২ সেপ্টেম্বর, রাত সোয়া তিনটা। ঘটনাস্থল সিলেটের ওসমানী নগর থানার শেরপুর নতুন বাজার হাজী ইউনুস উল্ল্যাহ মার্কেট। ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক লিমিটেডের নিচতলায় এটিএম বুথের দায়িত্বরত পাহারাদারকে মারপিট করে হাত ও মুখ স্কচটেপ পেঁচিয়ে বেঁধে ফেলে কয়েকজন দুষ্কৃতকারী। এরপর এটিএমের সম্মুখ দরজা ও লক ভেঙে ২৪ লাখ ২৫ হাজার ৫০০ টাকা নিয়ে যায় তারা।

এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত ৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগ।

আজ বুধবার দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানান ডিএমপির যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম ও ডিবি-উত্তর) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ, বিপিএম (বার), পিপিএম (বার)।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলো মো. শামীম আহাম্মেদ, নূর মোহাম্মদ সেবুল ও মো. আব্দুল হালিম।

গতকাল মঙ্গলবার ধারাবাহিক অভিযানে রাজধানী ও হবিগঞ্জ জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে লুন্ঠিত হওয়া ২৪ লক্ষাধিক টাকার মধ্যে ১০ লাখ ৮ হাজার টাকা, ছিনতাই কাজে ব্যবহৃত দুটি মোবাইল ফোন, একটি ছুরি, একটি প্লাস ও মাথায় ব্যবহৃত তিনটি কাপড়ের টুকরা জব্দ করা হয় ।

ডিএমপির যুগ্ম পুলিশ কমিশনার বলেন, এটিএমের সম্মুখ দরজা ও লক ভেঙে ২৪ লাখ ২৫ হাজার ৫০০ টাকা নিয়ে যায় দুষ্কৃতকারীরা। এই ঘটনায় ওসমানী নগর থানায় একটি মামলা হয়। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ছায়া তদন্ত শুরু করে গোয়েন্দা সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগ।

তিনি বলেন, গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা তথ্যপ্রযুক্তি সম্পর্কে পারদর্শী। বুথের এটিএম ভেঙে টাকা লুটের মূল পরিকল্পনাকারী মো. শামীম আহাম্মেদ নিয়মিত ভারতীয় মেগা সিরিয়াল সিআইডি অনুষ্ঠানটি দেখত। উক্ত সিরিয়াল দেখে এটিএম ভাঙার কলাকৌশল রপ্ত করে এবং টাকা লুটের পরিকল্পনা গ্রহণ করে। পরিকল্পনা মোতাবেক তার সহযোগী গ্রেফতারকৃত নূর মোহাম্মদ সেবুল ও মো. আব্দুল হালিমদের সাথে আলোচনা করে। পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য তারা মুখে মাস্ক, মাথায় গোলাপি রংয়ের কাপড় বেঁধে ও মাথায় ক্যাপ পরিধান করে এবং শাবল, অন্যান্য যন্ত্রপাতিসহ ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক লি. শেরপুর শাখার এটিএম বুথে যায়। এটিএম বুথের সিসিটিভি ক্যামেরায় তাদের চেহারা যেন না দেখা যায়, সে জন্য কালো রংয়ের স্প্রে করে ক্যামেরার লেন্স ঝাপসা করে দেয়। এ সময় তারা এটিএম বুথের সিকিউরিটি গার্ডকে মারধর করে ও হাত ও মুখ স্কচটেপ দিয়ে বাঁধে। পরে তারা শাবল দিয়ে এটিএমে বুথের লক ও বক্স ভেঙে টাকা নিয়ে যায়। গ্রেফতার ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে অন্যান্য থানায় মামলার তথ্য পাওয়া যায়।

গোয়েন্দা সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মুহাম্মদ শরীফুল ইসলামের নির্দেশনায় অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মো. জুনায়েদ আলম সরকারের তত্ত্বাবধানে সোশ্যাল মিডিয়া ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন টিমের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মনিরুল ইসলাম, পিপিএম এর নেতৃত্বে অভিযানটি পরিচালিত হয়।