কক্সবাজারের উখিয়ায় শিশু সুমাইয়া আক্তার (৪) হত্যা মামলার দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। একটি সিম কাভারের সূত্র ধরে হত্যাকাণ্ডের চার মাস পর ওই দুজন গ্রেপ্তার হলেন।

গ্রেপ্তার দুজন হলেন শিশু সুমাইয়ার মা বুলবুল আক্তার (২৫) ও সুমাইয়ার সৎবাবা নুরুল হক।

মামলার এজাহারের বরাত দিয়ে উখিয়া থানা-পুলিশ জানায়, উখিয়া থানার হলদিয়াপালং ইউনিয়ন পরিষদের পূর্ব মরিচ্যা কাঠালিয়া এলাকায় এক ব্যক্তির কাছ থেকে একটি কক্ষ ভাড়া নিয়েছিলেন নুরুল হক ও বুলবুল আক্তার দম্পতি। তবে আশপাশের লোকজনের সঙ্গে তাঁরা খুব একটা মিশতেন না। প্রায় দুই মাস ওই কক্ষে ভাড়া থাকা অবস্থায় নুরুল ও বুলবুল প্রায়ই শিশু সুমাইয়াকে নির্যাতন করতেন। গত ১৫ এপ্রিল শিশুটিকে সারা দিন অভুক্ত রাখেন তার মা ও সৎবাবা। বিকেলে শুরু হয় অমানবিক নির্যাতন। প্লাস্টিকের রশি দিয়ে বেঁধে তাকে ঝুলিয়ে নির্যাতন করা হয়। একপর্যায়ে শিশুটি অচেতন হয়ে পড়লে তার শ্বাস রোধ করা হয়। রাত ৯টার দিকে শিশুটি মারা যায়।

পুলিশ আরও জানায়, শিশু সুমাইয়ার মৃত্যু নিশ্চিত করে তাকে মেঝেতে শুইয়ে কম্বল চাপা দিয়ে ঘর তালাবদ্ধ করে ওই রাতেই পালিয়ে যান নুরুল ও বুলবুল। পরদিন সকালে স্থানীয় লোকজনের কাছ থেকে খবর পেয়ে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ঘটনাস্থলে যান। তিনি উখিয়া থানা-পুলিশকে বিষয়টি জানান। এরপর পুলিশ গিয়ে শিশুটির লাশ উদ্ধার করে। এ সময় শিশুটির মা-বাবার কোনো তথ্য দিতে পারেননি আশপাশের লোকজন। ঘটনার চারদিন পর উখিয়া থানায় মামলা হয়।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এরপর ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়ে ওই ঘর থেকে একটি সিম কাভার উদ্ধার করেন। তার ভেতরে থাকা মুঠোফোন নম্বরের সূত্র ধরে আসামিদের পরিচয় শনাক্ত করে পুলিশ। তবে আসামিরা বারবার অবস্থান পরিবর্তন করায় গ্রেপ্তার করা সম্ভব হচ্ছিল না। ঘটনার চার মাস পর গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শিশু সুমাইয়ার মামাবাড়ি কক্সবাজারের রামু থানার গর্জনীয়া বাজার এলাকা থেকে নুরুল ও বুলবুলকে গ্রেপ্তার করে উখিয়া থানার একদল পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদে তাঁরা শিশুটিকে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন। এরপর তাঁরা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দিয়েছেন বলে জানায় উখিয়া থানা-পুলিশ।