সিটিটিসির হাতে গ্রেপ্তার আন্তর্জাতিক এটিএম কার্ড ক্লোনিং স্ক্যামিং চক্রের অন্যতম হোতা তুরস্কের নাগরিক হাকান জানবুরকান ও তাঁর বাংলাদেশি সহযোগী মফিউল ইসলাম। ছবি: বাংলাদেশ পুলিশ

এটিএম কার্ড জালিয়াতি করে ভারতে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন তিনি। সেখান থেকে পালিয়ে নেপাল হয়ে নিজ দেশ তুরস্কে চলে গিয়েছিলেন। নতুন পাসপোর্ট করে বাংলাদেশে এসেছিলেন আবার কার্ড জালিয়াতি করতে।

কিন্তু পার পাননি। বাংলাদেশ পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের ট্রান্সন্যাশনাল বিভাগ ঠিকই তাঁকে পাকড়াও করেছে। তিনি তুরস্কের নাগরিক হাকান জানবুরকান (৫৫)।

রাজধানীর গুলশান এলাকা থেকে সম্প্রতি বাংলাদেশি সহযোগী মো. মফিউল ইসলামসহ হাসানকে গ্রেপ্তার করেছে সিটিটিসি। গ্রেপ্তারের পর তাঁদের বিরুদ্ধে রাজধানীর পল্টন মডেল থানায় ১৯ জানুয়ারি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়েছে।

এক বিজ্ঞপ্তিতে সিটিটিসি জানায়, গ্রেপ্তারকৃত দুজনকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, তুরস্কের নাগরিক হাকান গত ৩১ ডিসেম্বর বাংলাদেশে আসেন। রাজধানীর পল্টন এলাকায় একটি হোটেলে অবস্থান করে ২ থেকে ৪ জানুয়ারি ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেডের বিভিন্ন বুথে গিয়ে অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, তুরস্ক, সৌদি আরব, অস্ট্রিয়া, জার্মানি, ভিয়েতনাম, যুক্তরাজ্য, কানাডা, বলিভিয়া, স্পেন, ফিনল্যান্ড নরওয়েসহ প্রায় ৪০টি দেশের নাগরিকের ক্রেডিট কার্ড ক্লোন করে স্ক্যামিংয়ের মাধ্যমে কমপক্ষে ৮৪ বার টাকা তোলার চেষ্টা করেন।

জিজ্ঞাসাবাদে আরও জানা গেছে, হাকান ২০১৯ সালে ভারতের আসাম রাজ্যের পল্টন বাজার পুলিশ স্টেশনের এটিএম স্ক্যামিং মামলায় অন্য এক তুরস্কের নাগরিক, দুই বাংলাদেশিসহ গ্রেপ্তার হন। ভারতে প্রায় ২০ মাস কারাভোগের সময় আগরতলা গোবিন্দ বল্লভ পান্ত হাসপাতালে পুলিশের হেফাজতে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় কৌশলে পালান হাকান জানবুরকান। সেখান থেকে এক ভারতীয়র সহযোগিতায় তিনি সিকিম হয়ে নেপালে চলে যান। সেখান থেকে ভ্রমণের নথিপত্র সংগ্রহ করে নিজ দেশে ফেরেন এবং নতুন পাসপোর্ট তৈরি করেন।

এই চক্রে একাধিক বাংলাদেশিসহ তুরস্ক, বুলগেরিয়া, মেক্সিকো, ভারতসহ বিভিন্ন দেশের নাগরিক জড়িত বলে গ্রেপ্তারকৃত হাকান জানিয়েছেন। হাকান ও তাঁর বাংলাদেশি সহযোগীর কাছ থেকে পাঁচটি বিভিন্ন মডেলের ফোন, একটি ল্যাপটপ, ১৫টি ক্লোন কার্ডসহ মোট ১৭টি কার্ড জব্দ করা হয়েছে।