রোমান্স স্ক্যামারকে গ্রেপ্তার নিয়ে ডিএমপির ব্রিফিং। ছবি: ডিএমপি নিউজ

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক, মেসেঞ্জার ও হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে প্রতারণার অভিযোগে ভয়ংকর এক রোমান্স স্ক্যামারকে গ্রেপ্তার করেছে তেজগাঁও থানা-পুলিশ।

গ্রেপ্তারকৃতের নাম মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন। ওই সময় তাঁর কাছ থেকে প্রতারণায় ব্যবহৃত একটি মোবাইল ফোন, একটি সিপিইউ, দুটি মনিটর, একটি কি-বোর্ড, একটি মাউস, একটি আইপি ক্যামেরা, চার্জারসহ একটি রাউটার, একটি অনু (ইন্টারনেট সংযোগের সহায়তার যন্ত্রাংশ) ও একটি প্রিন্টার উদ্ধার করা হয়।

গতকাল শুক্রবার গাইবান্ধা সদর থানার স্টেশন রোডের একটি প্রিন্টিং প্রেস থেকে আনোয়ার হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

আজ শনিবার দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে প্রেস ব্রিফিংয়ে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানান ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার (ক্রাইম) লিটন কুমার সাহা বিপিএম, পিপিএম-বার।

যুগ্ম পুলিশ কমিশনার বলেন, ‘প্রতারক আনোয়ার দীর্ঘদিন ধরে মোহাম্মদ মহসীন (MD Mohshin) নামে একটি ভুয়া ফেসবুক আইডি চালিয়ে আসছিল। এই আইডিতে তেজগাঁও থানার ওসি মোহাম্মদ মহসীনের আইডির অনুরূপ ছবি ও ভিডিও ব্যবহার করে মেসেঞ্জারে ওসি মহসীন সেজে মেয়েদের সাথে আপত্তিকর কথা বলত এবং ছবি আদান-প্রদান করত। সে নানা অজুহাতে অনেকের কাছে টাকাও দাবি করত।’

এ বিষয়ে ওসি মহসীন ২০২৩ সালের ৫ সেপ্টেম্বর মিরপুর মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। পরে ২২ জানুয়ারি বাদী হয়ে তেজগাঁও থানায় সাইবার নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন।

পুলিশের এ কর্মকর্তা বলেন, ‘ওই মামলার পরিপ্রেক্ষিতে গাইবান্ধা থেকে আনোয়ার হোসেনকে গ্রেপ্তার করে তেজগাঁও থানার একটি বিশেষ টিম। তাঁর কাছে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি, চিত্রনায়ক ও মডেলের নামে ফেক ফেসবুক আইডি রয়েছে। এই আইডিগুলো থেকে সে ওই ব্যক্তি সেজে বিভিন্ন পোস্ট ও ছবি আপলোড করত এবং মেসেঞ্জারে বিভিন্ন মানুষের সাথে চ্যাট করত।’

তিনি বলেন, ‘তার মূল টার্গেট হচ্ছে মেয়েরা। ভুয়া আইডি খুলে এ পর্যন্ত সে সহস্রাধিক মেয়ের সাথে মেসেঞ্জারে চ্যাট করেছে। তার এই তালিকায় রয়েছে শিক্ষার্থী, গৃহিণী, প্রবাসী ও মডেল। মেসেঞ্জারে কথা বলার পরে হোয়াটসঅ্যাপেও তাদের সাথে কথা বলত, তবে কারও সাথে ভিডিও কলে আসত না। আবার কেউ তাকে দেখতে চাইলে কিংবা সন্দেহ করলে সাথে সাথেই তাকে ব্লক করে দিত। সে মূলত মেয়েদের সাথে আপত্তিকর কথাবার্তা বলত।’

যুগ্ম কমিশনার বলেন, ‘আনোয়ার পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছে। সে চাকরি করত গাইবান্ধার সদর থানার স্টেশন রোডের একটি প্রিন্টিং প্রেসে। সে ইউটিউব দেখে ফেসবুকের বিভিন্ন কলাকৌশল শেখে। সে তার এলাকায় যেকোনো ব্যক্তির আইডি, পাসওয়ার্ড হারিয়ে গেলে তা উদ্ধার করা, পেজ ভেরিফিকেশন, রিপোর্ট করা পেজ রিকভারসহ ফেসবুকের যেকোনো সমস্যার সমাধান করে দিত।’

গ্রেপ্তারকৃত আনোয়ার হোসেনকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।