ছবি: সংগৃহীত।

নতুন প্রজন্মকে বই পড়ায় আগ্রহী হওয়ার পরামর্শ দিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘সাহিত্য ও সংস্কৃতির চর্চা যত বাড়বে নতুন প্রজন্ম সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ থেকে তত দূরে থাকবে। বাংলা ভাষাকে বিশ্ব দরবারে পরিচিত করাতে অনুবাদ সাহিত্যে জোর দিতে হবে। এতে বিদেশিরা বাংলা ভাষা সম্পর্কে আরো জানতে পারবে, সেটাই আমি চাই।’

আজ বুধবার (১ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে অমর একুশে বইমেলা-২০২৩-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি। খবর কালের কণ্ঠের।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তরুণ প্রজন্মকে যত বেশি সাহিত্যের দিকে আনতে পারব, খেলাধুলা ও সংস্কৃতির দিকে আনা যাবে, তারা ততটা সৃজনশীল হবে। মাদক ও সন্ত্রাস থেকে দূরে থাকবে। এখন সবাই বই পড়তে চায় না, তাই অডিওর ব্যবস্থা করা যেতে পারে। যদিও বই পড়ার তৃপ্তি আলাদা। এ ছাড়া বাংলা সাহিত্যের যত বই বের হবে, সবগুলো বিভিন্ন ভাষায় অনুবাদ করতে হবে। তাহলেই সারা বিশ্ব আমাদের কথা জানবে।’

তিনি বলেন, ‘সারা দেশে কালচারাল সেন্টার করা হয়েছে। আমরা জেলায় জেলায় বইমেলা করছি। এভাবে বিভিন্ন দেশেও বইমেলা করার উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে। কূটনীতিকদের মাধ্যমে সেই ব্যবস্থাটা করা প্রয়োজন। এতে আমাদের ভাষা ও সংস্কৃতি সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়বে।’

এবার বইমেলায় নতুন-পুরনো মিলিয়ে ১৩৬টি বই প্রকাশ করবে বাংলা একাডেমি। তার মধ্যে বইমেলার প্রথম দিনে ‘শেখ মুজিবুর রহমান রচনাবলী’, ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী-পাঠ বিশ্লেষণ’, ‘আমার দেখা নয়াচীন-পাঠ বিশ্লেষণ’, ‘কারাগারের রোজনামচা-পাঠ বিশ্লেষণ’, হাসান আজিজুল হকের ‘সাবিত্রী উপাখ্যান’-এর ইংরেজি অনুবাদ ‘দ্য লেটার অব সাবিত্রী’র মোড়ক উন্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এর আগে বইমেলার উদ্বোধনী মঞ্চে এ বছর বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কারপ্রাপ্তদের পুরস্কার প্রদান করা হয়। সাহিত্যের বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদান রাখায় বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার-২০২২ পান ১৫ জন। তারা হলেন কবিতায় ফারুক মাহমুদ ও তারিক সুজাত, কথাসাহিত্যে তাপস মজুমদার ও পারভেজ হোসেন, প্রবন্ধ/গবেষণায় মাসুদুজ্জামান, অনুবাদে আলম খোরশেদ, নাটকে মিলন কান্তি দে ও ফরিদ আহমদ দুলাল, শিশুসাহিত্যে ধ্রুব এষ, মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক গবেষণায় মুহাম্মদ শামসুল হক, বঙ্গবন্ধুবিষয়ক গবেষণায় সুভাষ সিংহ রায়, বিজ্ঞান/কল্পবিজ্ঞান/পরিবেশবিজ্ঞানে মোকারম হোসেন, আত্মজীবনী/স্মৃতিকথা/ভ্রমণকাহিনিতে ইকতিয়ার চৌধুরী এবং ফোকলোরে পুরস্কার পেয়েছেন আবদুল খালেক ও মুহম্মদ আবদুল জলিল।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলা একাডেমির সভাপতি সেলিনা হোসেন। রূপা চক্রবর্তী ও শাহাদাত হোসেন নিপুর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সচিব আবুল মনসুর, পুস্তক প্রকাশক সমিতির সভাপতি আরিফুর রহমান ছোটন, বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক মুহাম্মদ নূরুল হুদা প্রমুখ। এ সময় মন্ত্রিপরিষদ সদস্য, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, সরকারের পদস্থ কর্মকর্তা ও ভাষাপ্রেমী-বইপ্রেমীরা উপস্থিত ছিলেন।

ছুটির দিন ছাড়া প্রতিদিন বিকেল ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত বইমেলা চলবে। তবে দর্শক ক্রেতা ও পাঠকরা রাত সাড়ে ৮টার পরে মেলা প্রাঙ্গণে ঢুকতে পারবেন না। সরকারি ছুটির দিনে সকাল ১১টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে এবং দুপুরে খাবার ও নামাজের জন্য এক ঘণ্টা বিরতি থাকবে।