সাবেক স্ত্রীকে বিয়ে করা বন্ধুকে খুন করার অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়া রাসেল। ছবি: সিআইডি

১ জুন দুপুর ১২টার দিকে সান্তাহার রেলওয়ে থানাধীন নাটোর রেলওয়ে স্টেশনের ৩ নং প্ল্যাটফর্মের ওভারব্রিজের ওপর রাকিব হোসেন (২৫) নামের এক ব্যক্তিকে ছুরিকাঘাতে জখম করেন তাঁর বন্ধু রাসেল হোসেন (৩১)।

নাটোর সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। রাকিব নাটোর সদর থানার চক বৌদ্ধনাথপুর গ্ৰামের মো. জালাল হোসেনের ছেলে।

রাকিবের বন্ধু রাসেল ১৩টি মামলার আসামি। তিনি কারাগারে ছিলেন। তাঁর সাবেক স্ত্রীকে বিয়ে করায় জামিনে মুক্ত হয়ে তিনি তাঁর বন্ধু রাকিবকে হত্যা করেন।

হত্যাকাণ্ডের শিকার রাকিব

ঘটনার পর সিআইডি ছায়া তদন্ত শুরু করে। সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার মুক্তা ধর পিপিএম (বার) এর সার্বিক তত্ত্বাবধানে ও নির্দেশনায় ঘটনাস্থল এবং বিভিন্ন উৎস থেকে প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করা হয়। পরে সংগৃহীত বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে ঘটনার সঙ্গে রাসেলের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়। রাসেল নাটোর সদর থানার মিরপাড়া গ্রামের মো. মানিকের ছেলে।

আসামি রাসেল হোসেন ওরফে কাটা রাসেলকে (৩১) ডিএমপির মিরপুর মডেল থানাধীন এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

সিআইডি সূত্রে জানা গেছে, আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তিনি প্রায় ৭ বছর আগে নিজের পছন্দে চক বৌদ্ধনাথপুর এলাকার লাবণ্য সিদ্দিকা সাথীকে (২৬) বিয়ে করেন। তাঁদের সংসারে রেদোয়ান আহমেদ রোজ (৫) নামে একটি সন্তান রয়েছে। গত ২৩ মার্চ দস্যুতার মামলায় নাটোর সদর থানা-পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে। রাসেল কারাগারে থাকাকালে তাঁর স্ত্রী তাঁকে ডিভোর্স দিয়ে রাকিবকে বিয়ে করে নতুন দাম্পত্য জীবন শুরু করেন। গত ৩১ মে রাসেল জামিনে মুক্তি পেয়ে এলাকায় এসে খুঁজতে থাকেন রাকিবকে। ১ জুন দুপুর ১২টার দিকে কৌশলে রাকিবকে ডেকে আনা হয় নাটোর রেলওয়ে প্ল্যাটফর্মের ৩ নং ওভারব্রিজের ওপর। সেখানে রাকিব তাঁর স্ত্রীর সাবেক স্বামী বন্ধু রাসেলকে দেখামাত্রই দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করেন। রাসেল তাঁর সঙ্গীয় লোকদের নিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে রাকিবের পিঠে ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে ধারালো ছুরি দিয়ে উপর্যুপরি আঘাত করে দ্রুত পালিয়ে যান।

রাকিব হত্যা মামলার প্রধান আসামি রাসেলকে গ্রেপ্তার করার পর ঘটনাটি তুলে ধরে সংবাদ সম্মেলন করে সিআইডি। ছবি : সিআইডি

এ ঘটনার বিষয়ে ভিকটিম রাকিবের বড় ভাই মো. শাকিল হোসেন (২৭) রাসেলকে (৩১) প্রধান আসামি করে পাকশী রেলওয়ে জেলার সান্তাহার রেলওয়ে থানায় মামলা করেন।

আসামি রাসেলের বিরুদ্ধে খুন, অস্ত্র আইন, দস্যুতা, চাঁদাবাজি, চুরি, নারী নির্যাতন ও অন্যান্য ধারার আইনে মোট ১৪টি মামলা রয়েছে। এগুলোর মধ্যে ২টি মামলা তদন্তাধীন ও অবশিষ্ট ১২টি মামলা বর্তমানে আদালতে বিচারাধীন রয়েছে।