সাতক্ষীরার শ্যামনগরের সুশীলনে পুনাকের পক্ষ থেকে বাঘ বিধবাদের মাঝে খাদ্য সামগ্রী ও কম্বল বিতরণ অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন পুনাক সভানেত্রী জীশান মীর্জা। ছবি: বাংলাদেশ পুলিশ

সুন্দরবন ঘিরে সাতক্ষীরার শ্যামনগরের অধিকাংশ মানুষের জীবন ও জীবিকা। সুন্দরবন থেকে মধু ও জ্বালানি কাঠ সংগ্রহ, মাছ ধরাসহ নানা কাজ করে চলে এই মানুষগুলোর সংসার। জীবিকার সন্ধানে সুন্দরবনে গিয়ে অনেকে বাঘের মুখেও পড়েন। পেছনে পড়ে থাকে তাঁদের হতভাগ্য পরিবার-পরিজন। বাঘের আক্রমণে স্বামী হারানো নারীদের সাধারণত বাঘবিধবা বলে অভিহিত করা হয়। এমন ১০০ জন বাঘবিধবার পাশে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ পুলিশ নারী কল্যাণ সমিতি (পুনাক)।

বাঘ বিধবাদের সঙ্গে কথা বলেন ও তাঁদের খোঁজখবর নেন পুনাক সভানেত্রী জীশান মীর্জা। ছবি: বাংলাদেশ পুলিশ

সাতক্ষীরার শ্যামনগরের সুশীলনে ৯ জানুয়ারি সকালে পুনাকের পক্ষ থেকে বাঘবিধবাদের মাঝে খাদ্যসামগ্রী ও কম্বল বিতরণ করা হয়। এ ছাড়া ৩০ জন ধাত্রীর মাঝে ধাত্রী কিট বিতরণ করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পুনাক সভানেত্রী জীশান মীর্জা।

বাংলাদেশ পুলিশের এআইজি (মিডিয়া অ্যান্ড পিআর) মো. কামরুজ্জামান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

অনুষ্ঠানে বাঘের আক্রমণে স্বজন হারানো নারীদের উদ্দেশে পুনাক সভানেত্রী বলেন, ‘আপনারা অনেকে স্বামী হারিয়েছেন, কেউ হারিয়েছেন সন্তান। আমরা আপনাদের পাশে দাঁড়াতে পেরে নিজেদের ধন্য মনে করছি।’ তিনি ধাত্রীদের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনারা যখন কাউকে প্রসব করাবেন, তখন যেন নিরাপদ প্রসব নিশ্চিত করা যায়, সেদিকে খেয়াল রাখবেন। আপনারা কোনো ধরনের প্রশিক্ষণ নিতে চাইলে আমরা আপনাদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করার চেষ্টা করব।’

বাঘ বিধবাদের খাদ্য সামগ্রী ও কম্বল বিতরণ পুনাক সভানেত্রী জীশান মীর্জা। ছবি: বাংলাদেশ পুলিশ

পুনাক সভানেত্রী বলেন, ‘পুনাক একটি সেবামূলক প্রতিষ্ঠান। পুনাকের কাজ আমরা এত দিন পুলিশ পরিবারের মধ্যে সীমাবদ্ধ রেখেছি। কোভিড আমাদের শিখিয়েছে মানুষকে ভালবাসতে হয় কীভাবে। আমরা সাধারণ মানুষের জন্য কাজ করার চেষ্টা করছি।’

পরে পুনাক সভানেত্রী জীশান মীর্জা মঞ্চ থেকে উঠে এসে বাঘবিধবাদের সঙ্গে কথা বলেন এবং তাঁদের পরিবারের খোঁজখবর নেন।

সাতক্ষীরার শ্যামনগরের রিভারভিউ ঘাটে বৃক্ষরোপণ করেন পুনাক সভানেত্রী জীশান মীর্জা। ছবি: বাংলাদেশ পুলিশ

এর আগে তিনি সাতক্ষীরার শ্যামনগরের রিভারভিউ ঘাটে বৃক্ষ রোপণ করেন এবং দাতিনাখালীতে সুপেয় পানির গভীর নলকূপ উদ্বোধন করেন। স্থানীয় অধিবাসীরা তাঁদের জন্য সুপেয় পানির ব্যবস্থা করায় পুনাক সভানেত্রীর প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানান।

এ সময় জেলা পুলিশ সুপার মো. মোস্তাফিজুর রহমান এবং বাংলাদেশ পুলিশ নারী কল্যাণ সমিতির নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।