শেরপুর পলিটেকনিকে চুরি ও আসামিদের গ্রেপ্তারের বিষয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করছেন জেলার পুলিশ সুপার কামরুজ্জামান। ছবি: বাংলাদেশ পুলিশ।

শেরপুর সদর থানার পুলিশ পলিটেকনিক ক্যাম্পাসে চুরির ঘটনার সঙ্গে জড়িত ২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। উদ্ধার করেছে কিছু চোরাই জিনিসপত্র।

শেরপুরের পুলিশ সুপার কামরুজ্জামান আজ শনিবার এক প্রেস ব্রিফিংয়ে জানান, গত ২৩ নভেম্বর দিবাগত রাত ৩টা থেকে সাড়ে ৪টার মধ্যে অজ্ঞাতনামা চোর চক্র শেরপুর পলিটেকনিক ক্যাম্পাসের দক্ষিণ-পূর্ব দিকের গ্রিল কেটে ভেতরে ঢুকে ২/৩টি সিসি ক্যামেরা ভেঙে একাডেমিক ভবনের দ্বিতীয় তলায় ল্যাবের হ্যাজবোল্টের তালা কাটতে থাকে। তালা কাটার শব্দ পেয়ে নিরাপত্তায় নিয়োজিত সিকিউরিটি গার্ড ২ চোরকে আটক করতে গেলে তারা সিকিউরিটি গার্ডদের মারধর করে আহত করে এবং হাত-পা বেঁধে সিঁড়ির নিচে ফেলে রেখে ল্যাবে ঢোকে।

এরপর তারা কম্পিউটারসহ অন্যান্য মূল্যবান যন্ত্রপাতি, ২৫টি কম্পিউটারের প্রসেসর, ২৫টি র‌্যাম, ২২টি হার্ডডিস্ক, ২টি সিপিইউসহ ১০-১২ লাখ টাকার মালামাল চুরি করে নিয়ে যায়।

চুরির খবর পাওয়ার পর শেরপুর সদর থানার অফিসার ইনচার্জসহ ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং চুরির ঘটনায় শেরপুর সদর থানায় মামলা করা হয়।

মামলা হওয়ার পর শেরপুর সদর থানা-পুলিশ মামলার রহস্য উদঘাটন, অজ্ঞাতনামা আসামিদের গ্রেপ্তার ও মালামাল উদ্ধারের লক্ষ্যে সিসিটিভির ফুটেজ সংগ্রহ করে সারা দেশের সব থানায় বার্তা পাঠান এবং জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের নেতৃত্বে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করেন।

এদিকে গত ২৯ নভেম্বর রাত আনুমানিক ২টার সময় শেরপুরের মতো একই কায়দায় চোর চক্র সাতক্ষীরা পলিটেকনিকে ঢুকে কর্মরত গার্ডদের মারধর করে তাদেরকে বেঁধে ফেলার চেষ্টা করে। গার্ডদের চিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে আসে এবং ঘটনাস্থল থেকে মো. এরশাদ (৩৬) ও মো. হাসান (৩২) নামের দুই চোরকে আটক করে।

পরে শেরপুর সদর থানা-পুলিশ এ খবর পেয়ে সাতক্ষীরা সদর থানায় যোগাযোগ করলে সাতক্ষীরা থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত ) জানান, আটক হওয়া দুই চোর শেরপুর পলিটেকনিকে চুরি করেছে মর্মে স্বীকার করেছে।

ওই সংবাদের ভিত্তিতে ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের নির্দেশক্রমে শেরপুর সদর থানার এসআই, মো. আমিনুর রহমান সঙ্গীয় ফোর্সসহ সাতক্ষীরা থানায় হাজির হয়ে আসামি দুজনকে নিবিড়ভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তখনো তারা শেরপুর পলিটেকনিকে চুরি করেছে বলে স্বীকার করে।

পরে আসামি দুজনকে চোরাই মালামালের ব্যাপারে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করলে তারা জানায়, কিছু মালপত্র ডিএমপির কদমতলী থানাধীন জুরাইন এলাকার বিক্রমপুর প্লাজায় আছে । আসামিদ্বয়ের স্বীকারোক্তি মোতাবেক ১ নম্বর আসামি এরশাদের ছোট ভাই সানিকে (২০) সাতক্ষীরা থেকে ঢাকায় নিয়ে আসা হয় এবং এরশাদের কম্পিউটারের দোকান থেকে গত ৩০ নভেম্বর সন্ধ্যায় ১টি সিপিইউ, ৪টি র‌্যাম, ২টি প্রসেসর, ৫টি পর্দা জব্দ করে শেরপুর সদর থানায় নিয়ে আসা হয়।