জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছোট ছেলে ’৭৫-এর ১৫ আগস্ট পরিবারের অন্যান্য সদস্যের সঙ্গে শাহাদাতবরণকারী শেখ রাসেলের ৫৮তম জন্মদিন এবং ‘শেখ রাসেল দিবস ২০২১’ উদযাপন উপলক্ষে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘শেখ রাসেল স্বর্ণপদক’সহ অন্যান্য প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করেছেন।

তিনি সোমবার সকালে গণভবন থেকে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ আয়োজিত মূল অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি অংশগ্রহণ করেন। খবর বাসসের।

শিক্ষা, ক্রীড়া, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, শিল্পকলা-সাহিত্য-সংস্কৃতি এবং বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশু-এ ৫টি ক্যাটাগরিতে প্রতিটি ১ ভরি করে ১০টি ‘শেখ রাসেল স্বর্ণপদক’, ১০টি ল্যাপটপ ও সার্টিফিকেট প্রদান করা হয়। এ ছাড়া শেখ রাসেল অনলাইন কুইজ প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের ১০টি ল্যাপটপ; এবং লার্নিং অ্যান্ড আর্নিং ডেভেলপমেন্ট প্রকল্পের (এলইডিপি) আওতায় প্রশিক্ষণার্থীর মধ্য থেকে সর্বোচ্চ উপার্জনকারীদের মধ্যে ৪ হাজার ল্যাপটপ প্রদান করা হয়।

অনুষ্ঠানে শেখ রাসেল জাতীয় শিশু-কিশোর পরিষদের উদ্যোগে সারা দেশে আয়োজিত ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতারও পুরস্কার বিতরণ করা হয়। একই সঙ্গে অনুষ্ঠানে সংযুক্ত শেখ রাসেল রোলার স্কেটিং স্টেডিয়াম প্রান্তে শেখ রাসেলের জন্মদিন উপলক্ষে রোলার স্কেটিং প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ করা হয় এবং ‘শেখ রাসেল শৈশবে ঝরে যাওয়া ফুল’ শীর্ষক বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ প্রকাশিত ‘শেখ রাসেল দৃপ্ত জয়োল্লাস, অদম্য আত্মবিশ্বাস’ শীর্ষক বইয়ের মোড়কও উন্মোচন করেন।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এনএম জিয়াউল আলম বক্তৃতা করেন।
শেখ রাসেল জাতীয় শিশু-কিশোর পরিষদের মহাসচিব এবং শিশু বক্তা আফসা জাফর সৃজিতা অনুষ্ঠানে তাঁর অনুভূতি ব্যক্ত করেন।
অনুষ্ঠানে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ পরিবেশিত শেখ রাসেলের দুরন্ত শৈশবভিত্তিক অডিও ভিজ্যুয়াল পরিবেশনা ‘শেখ রাসেল এক অনন্ত বেদনার কাব্য’ এবং ‘থিম সং’ পরিবেশিত হয়।

অনুষ্ঠানে দ্বিতীয় পর্বে শেখ রাসেল জাতীয় শিশু কিশোর পরিষদের উদ্যোগে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও পরিবেশিত হয়।

উল্লেখ্য, শিশু রাসেলের জীবন সম্পর্কে শিশু-কিশোরদের কাছে তুলে ধরতে সরকারের পক্ষ থেকে প্রতিবছর তাঁর জন্মদিনকে ‘শেখ রাসেল দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। রাষ্ট্রীয়ভাবে প্রথমবারের মতো পালিত ‘শেখ রাসেল দিবস ২০২১’ এর প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ‘শেখ রাসেল দীপ্ত জয়োল্লাস, অদম্য আত্মবিশ্বাস’।

এর আগে সকালে শেখ রাসেল দিবস-২০২১’ উদযাপন উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী গণভবনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে স্মারক ডাকটিকিট, উদ্বোধনী খাম এবং সিলমোহর অবমুক্ত করেন।

শেখ রাসেলের জন্মদিন উপলক্ষে আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
এ ছাড়া তথ্য প্রযুক্তি বিভাগ আজ বিকেল ৩টায় ‘শেখ রাসেল দীপ্ত জয়োল্লাস’ শীর্ষক এক সেমিনারের আয়োজন করবে এবং সন্ধ্যায় ৬টায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ‘কনসার্ট ফর পিস এন্ড জাস্টিস’ শীর্ষক এক কনসার্টের আয়োজন করবে। আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মাননীয় মন্ত্রী আনিসুল হক প্রধান অতিথি হিসেবে কনসার্টে যোগ দেবেন।

শহীদ শেখ রাসেলের জন্মদিন উপলক্ষে আওয়ামী লীগ সকাল ৮টায় বনানী কবরস্থানে চিরনিদ্রায় শায়িত শেখ রাসেলসহ ১৫ আগস্টে নিহত সব শহীদের কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ, ফাতেহা, মিলাদ ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করে।

এ ছাড়া ‘শেখ রাসেল দিবস’ উপলক্ষে আগামীকাল ১৯ অক্টোবর বিকেল সাড়ে ৩টায় ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউস্থ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে। সভায় ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সভাপতিত্ব করবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ আওয়ামী লীগ, সহযোগী সংগঠন এবং বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনসমূহ বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছোট ভাই শেখ রাসেল ১৯৬৪ সালের এই দিনে ধানমন্ডির ঐতিহাসিক স্মৃতিবিজড়িত বঙ্গবন্ধু ভবনে জন্মগ্রহণ করেন।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট মানবতার শত্রু ঘৃণ্য ঘাতকদের নির্মম বুলেট থেকে রক্ষা পাননি শিশু শেখ রাসেল। বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে নরপিশাচরা নির্মমভাবে তাঁকেও হত্যা করেছিল। তিনি ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরি স্কুলের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র ছিলেন।