১২ সেপ্টেম্বর থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো খোলার ঘোষণা দিয়েছেন মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। রোববার (৫ সেপ্টেম্বর) ঢাকার সচিবালয়ে এক আন্তমন্ত্রণালয় বৈঠক শেষে শিক্ষামন্ত্রী সাংবাদিকদের কাছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার সরকারি প্রস্তুতি এবং পরিকল্পনার বিস্তারিত তুলে ধরেন। খবর কালের কণ্ঠের।
এ ক্ষেত্রে শিক্ষা কার্যক্রম কীভাবে চলবে, সেসব নির্দেশনা দিয়ে একটি গাইডলাইন প্রকাশ করা হয়েছে। শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে সব স্কুল-কলেজ খোলার প্রস্তুতি নিতে ১৯ দফা নির্দেশনা দিয়ে এ গাইডলাইন জারি করা হয়েছে।
আগামী ৯ সেপ্টেম্বরের মধ্যে এ নির্দেশনাগুলো বাস্তবায়ন করতে সব স্কুল-কলেজকে নির্দেশ দিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)।
১৯ দফা নির্দেশনা
১. শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রবেশমুখসহ অন্যান্য স্থানে কোভিড-১৯ অতিমারি-সম্পর্কিত স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনে করণীয় বিষয়গুলো ব্যানার বা অন্য কোনো উপায়ে প্রদর্শনের ব্যবস্থা করতে হবে।
২. শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রবেশপথে সব শিক্ষক-কর্মচারী, শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের তাপমাত্রা পরিমাপক যন্ত্রের মাধ্যমে নিয়মিত তাপমাত্রা মাপা এবং তা পর্যবেক্ষণ করার ব্যবস্থা করতে হবে।
৩. শিক্ষার্থীদের ভিড় এড়ানোর জন্য প্রতিষ্ঠানের সবগুলো প্রবেশমুখ ব্যবহার করার ব্যবস্থা করা। যদি কেবল একটি প্রবেশমুখ থাকে, সে ক্ষেত্রে একাধিক প্রবেশমুখের ব্যবস্থা করার চেষ্টা করতে হবে।
৪. প্রতিষ্ঠান খোলার প্রথম দিনে শিক্ষার্থীদের আনন্দঘন পরিবেশে শ্রেণি কার্যক্রমে স্বাগত জানানোর ব্যবস্থা করতে হবে।
৫. প্রতিষ্ঠান খোলার প্রথম দিন শিক্ষার্থীরা কীভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে প্রতিষ্ঠানে অবস্থান করবে এবং বাসা থেকে যাওয়া-আসা করবে, সে বিষয়ে শিক্ষণীয় ও উদ্বুদ্ধকারী ব্রিফিং দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। এ ছাড়া মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের দেওয়া ভিডিও প্রদর্শনের ব্যবস্থা করতে হবে।
৬. প্রতিষ্ঠানের একটি কক্ষ প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থাসহ আইসোলেশন কক্ষ হিসেবে প্রস্তুত রাখতে হবে।
৭. প্রতিষ্ঠানের সব ভবনের কক্ষ, বারান্দা, সিঁড়ি, ছাদ এবং আঙিনা যথাযথভাবে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করার ব্যবস্থা করতে হবে।
৮. প্রতিষ্ঠানের সব ওয়াশরুম নিয়মিত সঠিকভাবে পরিষ্কার রাখা এবং পর্যাপ্ত পানির ব্যবস্থা করতে হবে।
৯. প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মচারী এবং অভিভাবক প্রবেশের সময় সরকারের দেওয়া স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে প্রতিপালনের ব্যবস্থা করতে হবে।
১০. প্রতিষ্ঠানের সব শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মচারীর সঠিকভাবে মাস্ক (সম্ভব হলে কাপড়ের মাস্ক) পরার বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে।
১১. প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন স্থানে সাবান বা হ্যান্ডওয়াশ দ্বারা হাত ধোয়ার এমন ব্যবস্থা করতে হবে, যাতে শিক্ষার্থীরা সবাই ক্লাসে প্রবেশের আগে সাবান দিয়ে হাত ধুতে পারে।
১২. শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীদের বসার ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে অনুসরণ করতে হবে। এ ক্ষেত্রে পারস্পরিক ৩ ফুট শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখার ব্যবস্থা করতে হবে।
১৩. শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের খেলার মাঠ, ড্রেন ও বাগান যথাযথভাবে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা এবং কোথাও যেন পানি জমে না থাকে, তা নিশ্চিত করার ব্যবস্থা করতে হবে।
১৪. প্রতিষ্ঠানগুলোতে শিক্ষক, শিক্ষার্থীদের উপস্থিতির সংখ্যা নিরূপণ করতে হবে।
১৫. প্রতিষ্ঠানের সব শিক্ষার্থীর উপস্থিতি নিশ্চিত করার ব্যবস্থা করতে হবে।
১৬. স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে প্রতিপালন করা হচ্ছে কি না, তা পর্যবেক্ষণ ও বাস্তবায়নের জন্য প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকবৃন্দের সমন্বয়ে কমিটি গঠন করতে হবে। প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যবিধি মেনে আনন্দঘন শিখন কার্যক্রমের মাধ্যমে শ্রেণি কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে।
১৭. প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজনীয় অবকাঠামোগত মেরামত, বৈদ্যুতিক মেরামত এবং পানি সংযোগজনিত মেরামত সম্পন্ন করতে হবে।
১৮. প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটি ও অভিভাবকদের সঙ্গে সভা করে এতৎসংক্রান্ত বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
১৯. করোনার কারণে গত বছরের ১৭ মার্চ থেকে দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ছুটি চলছে। সরকারের সর্বশেষ ঘোষণা অনুযায়ী, ১১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ছুটি আছে। প্রাথমিক থেকে উচ্চমাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আগামী ১২ সেপ্টেম্বর থেকে খুলে দেওয়া হবে। নতুন এ সিদ্ধান্তের ফলে ছুটি আর বাড়ছে না।