পায়ে লোহার শিকলে বেঁধে নির্যাতন করা হয়েছিল শিশুটিকে। নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে রাতের অন্ধকারে পালিয়ে এসেছিল মাদ্রাসা থেকে। পথে সে পুলিশের টহল দলের সামনে পড়ে যায়। তাদের খুলে বলে সব। পুলিশ সদস্যরা দ্রুত শিক্ষার্থীর পায়ের শিকল খোলার ব্যবস্থা করেন। সেই সঙ্গে তাকে নির্যাতনের আলামত পেয়ে গ্রেপ্তার করেছে মাদ্রাসার অধ্যক্ষকে। খবর প্রথম আলোর।

ঘটনাটি ঘটেছে ফেনীর দাগনভূঞা উপজেলায়। ১০ বছর বয়সী ওই শিশু উপজেলার দেউলিয়া নুরানীয়া হাফেজিয়া মাদ্রাসার শিক্ষার্থী। তাকে পায়ে শিকল বেঁধে নির্যাতন করা হয়েছিল। নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে ১১ জুন (শনিবার) রাতে সে মাদ্রাসা থেকে পালায়। পরে ওই রাতেই উপজেলার পূর্বচন্দ্রপুর এলাকা থেকে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে।

এ ঘটনায় ১২ জুন (রোববার) পুলিশ দেউলিয়া নুরানীয়া হাফেজিয়া মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ফখরুল ইসলামকে (৩২) আটক করেছে।

পুলিশকে শিশুটি জানিয়েছে, মাদ্রাসায় তাকে লোহার শিকল দিয়ে বেঁধে রাখা হতো। করা হতো নানা ধরনের নির্যাতন। নির্যাতন সইতে না পেরে একপর্যায়ে সে পালানোর সিদ্ধান্ত নেয়। ১১ জুন পালানোর সময় সে রাত তিনটার দিকে টহল পুলিশের গাড়ির সামনে পড়ে। পুলিশ তাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।

নির্যাতনের শিকার ওই শিশুর বাবা বলেন, তাঁর ছেলেকে চলতি বছরের শুরুতে দেউলিয়া নুরানীয়া মাদ্রাসায় ভর্তি করিয়েছেন। এরপর থেকেই শিক্ষার্থীদের ওপর নানা ধরনের নির্যাতনের কথা তিনি শুনে আসছেন। তিনি আরও বলেন, ’১১ জুন আমি ছেলেকে দেখতে মাদ্রাসায় যাই। সে তখন নির্যাতনের বিষয়টি আমাকে জানিয়ে মাদ্রাসা থেকে নিয়ে যেতে বলে। তারপর আমি তাকে বুঝিয়ে মাদ্রাসায় রেখে আসি। এরপর ক্ষিপ্ত অধ্যক্ষ আমার ছেলেকে লোহার শিকল দিয়ে বেঁধে মাদ্রাসার একটি কক্ষে আটকে রাখেন এবং লাঠি দিয়ে নির্মমভাবে পিটিয়ে জখম করেন। এ কারণে সে পালানোর সিদ্ধান্ত নেয়।’

দাগনভূঞা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাসান ইমাম বলেন, ঘটনার খবর পেয়ে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ফখরুল ইসলামকে আটক করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। এ ঘটনায় শিশুর পরিবার বা অন্য কেউ অভিযোগ দিলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।