হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আগামী ১০ ডিসেম্বর মধ্যরাত থেকে তিন মাসের জন্য রাত্রীকালীন সব ধরনের ফ্লাইট অবতরণ ও উড্ডয়ন বন্ধ থাকবে। তৃতীয় টার্মিনাল এলাকায় ‘স্থাপনা নির্মাণ’ কাজের কারণে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। খবর বাসসের।

এতে বলা হয়, বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) তত্বাবধানে শাহজালাল বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল এলাকায় গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা নির্মাণকাজের ১০ ডিসেম্বর থেকে আগামী ২০২২ সালের ১১ মার্চ পর্যন্ত প্রতিদিন রাত ১২টার পর থেকে সকাল ৮টা অবধি সব ফ্লাইট ওঠানামা বন্ধ থাকবে।

হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন এ এইচ এম তৌহিদ-উল আহসান গতকাল বুধবার রাতে সাংবাদিকদের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

তিনি জানান, বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণকাজের সুবিধার জন্য নতুন হাইস্পিড কানেকটিং ট্যাক্সিওয়ে বানানো হচ্ছে, যার নির্মাণকাজ চলবে রাতে। সংস্কারকাজের কারণেই ওই টার্মিনালের রানওয়ে বন্ধ থাকবে।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘বিমানবন্দরের কনস্ট্রাকশন ওয়ার্ক ফর নিউ কানেক্টিং হাইস্পিড ট্যাক্সিওয়ে কার্যক্রমের জন্য রাতের বেলায় ফ্লাইট উড্ডয়ন ও অবতরণ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।’

গ্রুপ ক্যাপ্টেন এ এইচ এম তৌহিদ-উল আহসান এ সময় উল্লেখ করেন, ঘন কুয়াশার কারণে প্রতিবছরই নভেম্বর থেকে শীতকালীন ফ্লাইট-সূচি অনুসরণ করা হয়। বিশেষ করে শীতকালে রাত ২টা থেকে সকাল ৮টা/৯টা পর্যন্ত কুয়াশা বেশি পড়ে বলে ফ্লাইটগুলোর রানওয়ে ‘ভিজিবিলিটি’ (দৃশ্যমানতা) কম থাকে।
রানওয়ে ভিজিবিলিটি কম থাকার কারণে প্লেন অবতরণ ও উড্ডয়ন করতে সমস্যা হয়। তবে, ক্ষেত্র বিশেষে অবতরণে সমস্যা হলে ফ্লাইটগুলোকে নিকটস্থ অন্য কোনো বিমানবন্দরে অবতরণের জন্য পাঠানো হয়।’

এদিকে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানানো হয়েছে, প্রতিদিন আট ঘণ্টা করে রানওয়ে বন্ধ থাকলেও বিমানবন্দরের স্বাভাবিক কাজে কোনো প্রভাব পড়বে না। এ সময় কোনো ফ্লাইটের জরুরি অবতরণের প্রয়োজন হলে সিলেটের ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ব্যবহার করার পরামর্শ দিয়েছে বেবিচক।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ২৪ অক্টোবর হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনাল নির্মাণের অনুমোদন দেয় জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। শুরুতে টার্মিনালটি নির্মাণের ব্যয় ধরা হয়েছিল ১৩ হাজার ৬১০ কোটি টাকা। পরে প্রকল্প ব্যয় ৭ হাজার ৭৮৮ কোটি ৫৯ লাখ টাকা বাড়ানো হয়। এ প্রকল্পের বর্তমান ব্যয় দাঁড়িয়েছে ২১ হাজার ৩৯৮ কোটি টাকার বেশি। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে বাংলাদেশ সরকার দিচ্ছে ৫ হাজার ২৫৮ কোটি ৩ লাখ ৮৮ হাজার টাকা। বাকি ১৬ হাজার ১৪১ কোটি ২ লাখ ৪৫ হাজার টাকা ঋণ হিসেবে দিচ্ছে জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা-জাইকা। ২০২৩ সালের জুন মাসে এই টার্মিনালের নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার কথা।