এপিবিএনের হেফাজতে চার রোহিঙ্গা ও এক বাংলাদেশি। ছবি: সংগৃহীত

কক্সবাজারের উখিয়ার লম্বাশিয়া রোহিঙ্গা শিবিরে অভিযান চালিয়ে নকল বাংলাদেশি জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) ও পাসপোর্ট তৈরির অভিযোগে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন)। এ সময় দুই শতাধিক নকল এনআইডি ও পাসপোর্ট তৈরির সরঞ্জাম জব্দ করা হয়। খবর প্রথম আলোর।

গতকাল বুধবার (২০ জুলাই) রাতে লম্বাশিয়া শিবিরের বাসিন্দা রোহিঙ্গা মো. আবদুল্লাহর (৩৭) বাড়িতে অভিযান চালিয়ে এসব সরঞ্জাম জব্দ করা হয়।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন লম্বাশিয়া শিবিরের এফ-১০ ব্লকের রোহিঙ্গা মো. আবদুল্লাহ (৩৭), আবুল খায়ের (১৮), এফ-১৩ ব্লকের মো. তালহা (৬০) ও মো. হারুন (৩৬) এবং টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ উত্তরপাড়ার মো. ইসমাইল (৪৫)।

৮ এপিবিএনের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) মো. কামরান হোসেন জানান, গ্রেপ্তার পাঁচজনের মধ্যে চারজন রোহিঙ্গা ও একজন বাংলাদেশি। চক্রটি রোহিঙ্গা শিবিরে যন্ত্রপাতি স্থাপন করে সাধারণ রোহিঙ্গাদের নকল জাতীয় পরিচয়পত্র ও পাসপোর্ট বানিয়ে দিয়ে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিত।

কামরান হোসেন বলেন, গ্রেপ্তার চক্রটি প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে, তারা দীর্ঘদিন ধরে রোহিঙ্গা শিবিরে অবৈধভাবে নকল এনআইডি তৈরি করে সাধারণ রোহিঙ্গাদের মধ্যে সরবরাহ করে আসছে। এ ছাড়া তাদের দালাল চক্র পাসপোর্ট তৈরি করে দেয়। গ্রেপ্তার পাঁচজনকে উখিয়া থানায় হস্তান্তর করে মামলা হয়েছে।

এপিবিএন সূত্রে জানা গেছে, গতকাল রাতে লম্বাশিয়া শিবির থেকে ২৮টি অনলাইন জন্মনিবন্ধন সনদ, ১১টি জন্মনিবন্ধন তথ্য যাচাই, ৩০টি নকল জন্মসনদ, ২০টি নকল এনআইডি, ২০০টি বিভিন্ন ব্যক্তির এনআইডির ফটোকপি, ৪টি ল্যাপটপ, ৮টি স্মার্টফোন, ৪টি পেনড্রাইভ, ২টি স্ক্যানার ও প্রিন্টার, সোনালী ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংকের চেক ও জমা বই, ৫টি সিল, সমবায় সমিতির একটি নিবন্ধন সনদ, শাহপুরি বাস্তুহারা আদর্শগ্রাম সমবায় সমিতি লিমিটেডের ২০টি সদস্য ফরম, ৩৫টি টাকা জমা দেওয়ার ব্যাংক পাস বই, উখিয়ার রাজাপালং ইউনিয়ন পরিষদের ৮টি ট্রেড লাইসেন্স, বিদ্যুৎ বিলের কাগজপত্র, জমির দলিল ও খতিয়ান উদ্ধার করা হয়েছে।

পুলিশ ও রোহিঙ্গা নেতারা বলছেন, আশ্রয়শিবিরের ত্রিপলের ছাউনিতে পাঁচ বছর ধরে বাস করছে ১২ লাখের বেশি রোহিঙ্গা। তাদের মধ্যে অনেক রোহিঙ্গা বাংলাদেশের নাগরিকত্ব গ্রহণ করে বিভিন্ন জায়গায় বসতি করে সরকারি সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ ও বিদেশ যাওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে। বিশেষ করে বাংলাদেশি পাসপোর্ট তৈরি করে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে পাড়ি জমাতে চায় অনেক রোহিঙ্গা। এর মধ্যে দালাল চক্রকে মোটা অঙ্কের টাকা দিয়ে অনেক রোহিঙ্গা পাসপোর্ট নিয়ে মালয়েশিয়া, সৌদি আরবসহ বিভিন্ন দেশে পাড়ি জমিয়েছে।