রাজশাহীতে প্রতারক চক্রের ৪ সদস্যকে গ্ৰেপ্তার করেছে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এ সময় তাদের কাছ থেকে প্রতারণার মাধ্যমে হাতিয়ে নেওয়া ৪৫ হাজার টাকা ও প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত ৪টি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়।

গ্ৰেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন রাজশাহী মহানগরীর কাটাখালী থানার সমসাধীপুর পশ্চিমপাড়া গ্রামের মো. গাজী সালাউদ্দিনের ছেলে মো. সায়েম উদ্দিন শ্যাম (৩৫), বোয়ালিয়া মডেল থানার হাদির মোড় নদীর ধার এলাকার মৃত দুলাল বিশ্বাসের ছেলে মো. পারভেজ (৩২), এয়ারপোর্ট থানার বায়া তেরিপাড়া গ্রামের মো. বাপ্পী হোসেনের স্ত্রী মোসা. রাজিয়া সুলতানা সুমা (৩০) এবং রাজপাড়া থানার বহরমপুর গ্রামের মো. মামুনুর রহমান বাবুর স্ত্রী মোসা. শরিফা আক্তার সাথী (২৭)।

ঘটনা সূত্রে জানা যায়, একজন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত ল্যান্স করপোরাল গত ৩১ অক্টোবর নাটোর থেকে শিরোইল বাস টার্মিনালে নেমে বাড়ি যাওয়ার জন্য অটোরিকশায় ওঠেন। এ সময় আরও দুজন নারী যাত্রী একই অটোরিকশায় ওঠেন। কিছুক্ষণ পর ওই নারী যাত্রীরা ইকবালের হাতে ঠিকানা লেখা একটি চিরকুট ধরিয়ে দেন। তাঁরা রাজশাহীতে নতুন এসেছেন, কিছু চেনেন না, তাই ঠিকানা অনুযায়ী পৌঁছে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেন। সরল বিশ্বাসে আসামিদের কথায় রাজি হন ওই ব্যক্তি। ঐতিহ্য চত্বর আসার পর পূর্বপরিকল্পিতভাবে আরও দুজন আসামি সেই অটোরিকশায় ওঠেন এবং ইকবালকে অস্ত্র দিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে শরিফা আক্তারের বাড়ি নিয়ে যান এবং শরিফার সঙ্গে জোরপূর্বক অশ্লীল ছবি তোলেন। এরপর অপহরণকারীরা ইকবালের কাছ থেকে ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ ও চাঁদা দাবি করে। টাকা না পেলে অশ্লীল ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছেড়ে দেওয়ার হুমকি দেয়। পরে ইকবাল আসামিদের ৪৫ হাজার টাকা দেন। অপহরণকারীরা ইকবালের কাছে আরও ১ লাখ টাকা দাবি করে।

এ ঘটনায় ইকবাল নিরুপায় হয়ে ডিবি পুলিশকে মৌখিকভাবে অভিযোগ দেন। এ পরিপ্রেক্ষিতে রাজশাহী মহানগর পুলিশের কমিশনার মো. আবু কালাম সিদ্দিকের নির্দেশনায়, রাজশাহী মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার মো. আরেফিন জুয়েলের সার্বিক তত্ত্বাবধানে অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিবি) মো. আবদুল্লাহ আল মাসুদের নেতৃত্বে পুলিশ পরিদর্শক মো. রেজাউল হাসান ও তাঁর দল আসামি গ্রেপ্তারের অভিযানে নামে। পরবর্তীকালে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় গোপন তথ্যের ভিত্তিতে আসামিদের অবস্থান নির্ণয় করে গত সোমবার রাতে রাজশাহী মহানগরীর রাজপাড়া থানার বহরমপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে চক্রের মূল হোতাসহ ৪ সদস্যকে গ্রেপ্তার করে। আসামিদের কাছ থেকে প্রতারণার মাধ্যমে হাতিয়ে নেওয়া নগদ ৪৫ হাজার টাকা ও প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত ৪টি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়।