২০৩০ সালের মধ্যে গ্রিনহাউস গ্যাসের নিঃসরণ কমিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি দিলেও বেশ কয়েকটি দেশ এখন পর্যন্ত তা পারেনি। ছবি: এএফপি

বৈশ্বিক গড় তাপমাত্রা বৃদ্ধি সীমার মধ্যে ধরে রাখতে এবং জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বিশ্বের প্রায় ২০০টি দেশ গ্রিনহাউস গ্যাসের নিঃসরণ কমিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। তবে বেশ কয়েকটি দেশ সেই প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে পারেনি। জাতিসংঘ পরিবেশ কর্মসূচির (ইউএনইপি) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। খবর সিএনএনের।

স্কটল্যান্ডের গ্লাসগোয় আর কদিন বাদেই বসবে জাতিসংঘ জলবায়ু সম্মেলন কপ-২৬। এই সম্মেলনের আগ মুহূর্তে ২৬ অক্টোবর (মঙ্গলবার) প্রকাশ করা হলো বার্ষিক ‘এমিশন গ্যাপ’ প্রতিবেদনটি। এতে বলা হয়, ২০১৫ সালে স্বাক্ষরিত প্যারিস জলবায়ু চুক্তি অনুযায়ী বেশ কয়েকটি দেশ নিঃসরণ কমিয়ে আনতে ব্যর্থ হয়েছে।

শিল্পোন্নত ২০ দেশের জোট জি-২০-এর সদস্যরা বিশ্বের মোট নিঃসরণের ৮০ শতাংশ করে থাকে। প্রতিবেদনে বলা হয়, জি-২০ দেশগুলোর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র কখনোই তাদের লক্ষ্য অর্জন করতে পারেনি। এ ছাড়া কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, ব্রাজিল, দক্ষিণ কোরিয়া ও মেক্সিকোও লক্ষ্য অর্জন করতে পারেনি।

গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণকারী বিশ্বের শীর্ষ তিন দেশ ও জোট যুক্তরাষ্ট্র, ভারত ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন ২০৩০ সালের মধ্যে নিঃসরণ কমিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। তবে আরেক শীর্ষ নিঃসরণকারী দেশ চীন এ ব্যাপারে কোনো প্রতিশ্রুতিই দেয়নি। উল্টো তারা বলেছে, ২০৩০ সাল নাগাদ নিঃসরণের চূড়ান্ত ধাপে পৌঁছে ২০৬০ সালের মধ্যে তা শূন্যে নামিয়ে আনতে চায় তারা।

বিজ্ঞানীদের ভাষ্য, বিশ্ব এরই মধ্যে শিল্পযুগের আগের তুলনায় গড়ে ১ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি উষ্ণ হয়ে উঠেছে। চলতি শতকের শেষ নাগাদ বৈশ্বিক গড় তাপমাত্রা বৃদ্ধি শিল্পযুগের আগের তুলনায় দেড় ডিগ্রি সেলসিয়াস ধরে রাখতে দেশগুলোর যা করা প্রয়োজন, সে তুলনায় পদক্ষেপ অত্যন্ত নগণ্য।

প্রতিবেদনে বলা হয়, নিঃসরণ কমিয়ে আনতে নতুন ও হালনাগাদকৃত প্রতিশ্রুতি কেবল ২০৩০ সাল নাগাদ অতিরিক্ত নিঃসরণ সাড়ে ৭ শতাংশ কমাতে পারবে। কিন্তু বৈশ্বিক গড় তাপমাত্রা বৃদ্ধি দেড় ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ধরে রাখার লক্ষ্য অর্জন করতে হলে নিঃসরণ কমাতে হবে ৫৫ শতাংশ। ইউএনইপির তথ্যমতে, প্যারিস জলবায়ু চুক্তি অনুযায়ী বিভিন্ন দেশ যে লক্ষ্য নির্ধারণ করেছিল, সেই লক্ষ্য নিয়ে অগ্রসর হলে বৈশ্বিক গড় তাপমাত্রা বৃদ্ধি ২ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যরন্ত অব্যাহত থাকবে।

ইউএনইপির নির্বাহী পরিচালক ইঙ্গার অ্যান্ডারসন সিএনএনকে বলেছেন, ‘আমরা আর প্রতিশ্রুতি দেখতে চাই না। আমরা এখন পদক্ষেপ দেখতে চাই।’