ডিবি পুলিশের হেফাজতে গ্রেপ্তার অজ্ঞান পার্টির দুই সদস্য। ছবি: বাংলাদেশ পুলিশ।

যশোর জেলা গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) পুলিশ অভিযান চালিয়ে অজ্ঞান পার্টির দুজন সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করেছে ২টি চোরাই ইজিবাইক ও একটি চোরাই মোটরসাইকেল।

যশোর ডিবি সূত্রে জানা গেছে,
গত ২১ মার্চ তুষার আহমেদ জীবন নামের একজন ইজিবাইক চালককে একজন অজ্ঞাতনামা যাত্রী চেতনানাশক মেশানো বিস্কুট খাইয়ে অজ্ঞান করে যশোরের খালদার রোডে ফেলে দিয়ে ইজিবাইক চুরি করে নিয়ে যান

এর আগে গত বছরের ২ ফেব্রুয়ারি জাকির হোসেন নামের একজন ইজিবাইক চালককে এক অজ্ঞাতনামা যাত্রী চাচড়া বাজারে জনতা ব্যাংকের সামনে নিয়ে চায়ের সাথে চেতনানাশক মিশিয়ে খাইয়ে অচেতন করেন । এরপর জনতা ব্যাংকের পাশে খালি জায়গায় ফেলে রেখে ইজিবাইকটি চুরি করে নিয়ে যান।

এই দুইটি ঘটনার অভিযোগ পেলে যশোরের পুলিশ সুপার প্রলয় কুমার জোয়ারদারের নির্দেশে ওসি রুপন কুমার সরকারের তত্ত্বাবধানে ডিবির এলআইসি টিম তদন্তে নেমে ঘটনাস্থলের আশে পাশের সিসিটিভি ফুটেজ পযালোচনা করে অজ্ঞাত ব্যক্তির ছবি ও ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করে গোপন তথ্যের ভিত্তিতে তাদের শনাক্ত করে।

এরপর এসআই মফিজুল ইসলামের নেতৃত্বে একটি টিম গত ১৭ এপ্রিল বিকাল সাড়ে পাঁচটার সময় মাইক পট্টি থেকে সিসিটিভি ফুটেজ থেকে প্রাপ্ত ব্যক্তিকে শনাক্ত করে তাকে গ্রেপ্তার করে। তার নাম আলী রেজা রাজু। তিনিই অজ্ঞান পার্টির মূল হোতা।

তার দেওয়া তথ্য মতে যশোরের পূর্ব বারান্দিপাড়া ও মাগুরা মুহম্মদপুর থানাধীন আড়পাড়া গ্রামে অভিযান পরিচালনা করে চোরাই মালামাল ক্রেতা মো. নজরুল ইসলাম খানকে গ্রেপ্তার করে এবং উপরেল্লিখিত ২টি পৃথক চুরির ঘটনার ২টি ইজিবাইক উদ্ধার করে। এ সময় নজরুল ইসলাম খানের হেফাজত থেকে আরো ১টি চোরাই মোটরসাইকেল জব্দ করা হয়।

মোটরসাইকেলের ইঞ্জিন,চেসিস নাম্বারের তথ্য মতে জানা যায়. মোটরসাইকেলটি ২০২১ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর যশোরের সিতারামপুর তারা মসজিদের সামনে থেকে মাগরিবের নামাজরত মুসল্লি শওকতের চুরি হওয়া মোটরসাইকেল।

পৃথক তিনটি চুরির ঘটনায় পৃথক ৩ জন বাদী হয়ে কোতোয়ালি মডেল থানায় এজাহার দায়ের করলে পৃথক পৃথক মামলা হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ গ্রেপ্তার আলী রেজা রাজুর পিসি/পিআর যাচাই করে জানা যায়, তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় হত্যা মামলাসহ ৮টি চুরির মামলা রয়েছে। তিনি পেশাদার আন্তঃজেলা অজ্ঞান পার্টির হোতা বলে জানা যায়। যশোর জেলাসহ আশপাশের জেলায় খাদ্যদ্রব্যের সাথে চেতনানাশক ওষুধ মিশিয়ে বিভিন্ন ব্যক্তিকে খাইয়ে অচেতন করে ইজিবাইক, মোটরসাইকেলসহ নগদ টাকাসহ মুল্যবান জিনিসপত্র চুরি করার তথ্য প্রমাণ পাওয়া গেছে। চেতনানাশক প্রয়োগের ফলে কেউ কেউ মারা গেছেন বলেও জানা গেছে।