পুলিশের হেফাজতে গ্রেপ্তার শেফালী বেগম। ছবি: বাংলাদেশ পুলিশ।

যশোরে পরকীয়ার সম্পর্ক নিয়ে পারিবারিক বিরোধের জের ধরে অভিনব পন্থায় স্বামী জহির হাসান গাজীকে হত্যার অভিযোগে স্ত্রী শেফালি বেগমকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

নিহত জহির হাসান (৩৮) যশোর শহরের বকচর হুশতলার মৃত হোসেন আলীর ছেলে। তিনি একটি চশমার দোকানে কাজ করতেন। জহিরের স্ত্রী শেফালি একটি বেসরকারি হাসপাতালের আয়া হিসেবে কর্মরত।

জানা গেছে, ৯ মে রাত পৌনে ৮টার দিকে যশোর কোতোয়ালি থানা খবর পায়, যশোর শহরের বকচর হুশতলা এলাকায় জনৈকা শান্তা রানী কুন্ডুর ২ তলা বাসার নিচতলার ভাড়াটে জহির হাসান গাজী নামে এক ব্যক্তির অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে।

খবর পেয়ে কোতোয়ালি থানা-পুলিশ, ডিবি ও র‌্যাব ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। মৃত জহির আলীর বাম হাতের প্রতিটি শিরায় কালো দাগ পরিলক্ষিত হওয়ায় মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।

জেলা পুলিশ সুপার প্রলয় কুমার জোয়ারদারের নির্দেশে কোতোয়ালি থানা ও ডিবি পুলিশ নিবিড়ভাবে তদন্ত শুরু করেন। তারা মৃত জহির হাসান গাজীর স্ত্রী শেফালী বেগমকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে তিনি স্বামীকে হত্যার কথা স্বীকার করেন।

জিজ্ঞাসাবাদে শেফালী জানিয়েছেন, শংকরপুরের রবিউলের সাথে পরকীয়া সম্পর্ক নিয়ে পারিবারিক কলহের জেরে তিনি স্বামী জহির হাসানকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। অভিনব পদ্ধতিতে প্রথমে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে অচেতন করে আগে থেকে সংগৃহীত মোবাইলের ব্যাটারি থেকে অ্যাসিড ইনজেকশন সিরিঞ্জে ভরে ঘুমন্ত জহির হাসানের বাম হাতের শিরায় পুশ করেন। অ্যাসিড প্রয়োগের কারণে অল্প সময়েই জহির মারা যান।

পরে শেফালীকে গ্রেপ্তার করে তাঁর কাছ থেকে ভাঙা মোবাইল, মোবাইলের ব্যাটারির অংশবিশেষ, হত্যাকাজে ব্যবহৃত সিরিঞ্জ, ঘুমের ওষুধের খালি পাতা এবং আসামির কর্মস্থল মাতৃসেবা ক্লিনিক থেকে নমুনা সিরিঞ্জ ও ঘুমের ওষুধ জি-ডায়াজিপাম ৫ মিলিগ্রাম জব্দ করা হয়।

এ ঘটনায় নিহতের ভাই গাজী শাহনেওয়াজ বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় একটি মামলা করেন।