ডিবি পুলিশের হেফাজতে গ্রেপ্তার ৭ আসামি। ছবি: বাংলাদেশ পুলিশ।

যশোরে ইজিবাইকচালক বুলবুল হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে জেলা গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) পুলিশ। তারা হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ৭ জনকে গ্রেপ্তার ও ইজিবাইকসহ বিভিন্ন আলামত জব্দ করেছে।

গত সোমবার (১০ জুলাই) বিকেলে সদর উপজেলার নতুনহাট পাবলিক কলেজের বিপরীতে একটি পাট ক্ষেত থেকে বুলবুলের মরদেহ উদ্ধার করে যশোর কোতোয়ালি থানাপুলিশ ।

নিহত বুলবুল হোসেন (৩৬) সদর উপজেলার রাজারহাটের মৃত আব্দুর রশিদের ছেলে। শনিবার সন্ধ্যা থেকে তিনি নিখোঁজ ছিলেন।

নিহতের ভাই ফরহাদ হোসেন বলেন, শনিবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে তার ভাই ইজিবাইক নিয়ে বাড়ি হতে বের হন। এরপর থেকে তিনি নিখোঁজ ছিলেন। এ ঘটনায় তারা কোতোয়ালি থানায় জিডি করেছিলেন।

তিনি আরও বলেন, পুলিশের কাছ থেকে খবর পেয়ে রাতে যশোর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের মর্গে গিয়ে পরনের প্যান্ট ও গেঞ্জি দেখে ভাইকে শনাক্ত করেছেন। তবে আঘাতের কারণে মুখমণ্ডল বিকৃত হয়ে যায়।

মৃতদেহ শনাক্ত করার পর নিহতের ভাই ফরহাদ হোসেন বাদী হয়ে কোতোয়ালি মডেল থানায় এজাহার দায়ের করলে তা মামলা হিসেবে গ্রহণ করা হয়।

মামলাটি খুবই চাঞ্চল্যকর ও ক্ললেস হওয়ায় জেলার পুলিশ সুপার প্রলয় কুমার জোয়ারদার বিপিএম (বার), পিপিএমের দিকনির্দেশনায় ওসি ডিবি রুপন কুমার সরকার, পিপিএম (বার) এর তত্ত্বাবধানে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মফিজুল ইসলাম পিপিএম ও সঙ্গীয় পুলিশ পরিদর্শক শহিদুল ইসলামের নেতৃত্বে একটি টিম তদন্তে নেমে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় আসামিদের শনাক্ত করে।

এরপর ১১ জুলাই বেলা ২ টার সময় কোতোয়ালি মডেল থানাধীন শংকরপুর বাবলাতলা এলাকায় অভিযান চালিয়ে ভিকটিম বুলবুলকে ডেকে নেওয়ার মোবাইল ফোনসহ ঘটনায় সরাসরি জড়িত ৩ ছিনতাইকারীকে গ্রেপ্তার করে। এরপর তাদের স্বীকারোক্তি মতে শংকপুরে অভিযান চালিয়ে তাদের সহযোগী আরো ২ সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়।

পরে তাদের দেওয়া তথ্য মতে ডিবির টিম হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত গামছা, জুস ও চেতনানাশক ওষুধসহ বিভিন্ন আলামত উদ্ধারসহ সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগর থানাধীন দুরমুজখালী এলাকায় আজ ১২ জুলাই ভোরে অভিযান চালিয়ে চক্রের আরো ২ সদস্যকে গ্রেপ্তার করে ও ছিনতাই করা ইজিবাইকটি উদ্ধার করে।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, ইজিবাইক ছিনতাই করার উদ্দেশ্যে আসামিরা পরস্পর যোগসাজসে চালক বুলবুল হোসেনকে ৮ জুলাই সন্ধ্যি ৬টার সময় মোবাইল ফোনে ডেকে নিয়ে ভাড়া করে মনিহার থেকে উঠে শহরের বিভিন্ন জায়গায় ঘুরেন এবং রাস্তায় জুসের সাথে চেতনানাশক খাইয়ে অচেতন করে ঘটনাস্থলে নিয়ে গভীর রাতে গামছা দিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে লাশ পাটক্ষেতে ফেলে চলে যায়।

গ্রেপ্তার আসামিরা হলেন মো. এসার আলী (৩১), মাহমুদ ওরফে মামুন (৩৮),
শুকুর আলী (২০), জুয়েল (৩৮), হৃদয় (২৩), আকবর গাজী (২৮) ও ইব্রাহীম গাজী (২৪)।