ফ্রান্সের নানতেস শহরে বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে কাঁদানে গ্যাসের শেল ছুড়েছে পুলিশ। ছবি: এএফপি

পেনশন সংস্কার নিয়ে ফ্রান্সজুড়ে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়েছে। এতে কমপক্ষে ১০৮ জন পুলিশ কর্মকর্তা আহত হয়েছেন। দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ কথা জানিয়েছেন।

ফ্রান্সের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জি রাল্ড ডারমেনিন বলেন, এত বেশি পুলিশ একসঙ্গে আহত হওয়ার ঘটনা খুব বেশি ঘটে না। সংঘর্ষ চলার সময় ২৯১ জনকে আটক করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁর পেনশন সংস্কারের প্রতিবাদে মে দিবসে কয়েক হাজার মানুষ বিক্ষোভে অংশ নেন। বিক্ষোভকারীদের বেশির ভাগ ছিলেন শান্তিপূর্ণ। তবে কিছু উগ্রপন্থী পেট্রলবোমা ছোড়েন। পুলিশও পাল্টা কাঁদানে গ্যাসের শেল ও জলকামান থেকে পানি ছুড়েছে। সংঘর্ষে কয়জন বিক্ষোভকারী আহত হয়েছেন, তা জানা যায়নি।

ফ্রান্সের প্রধানমন্ত্রী লিসাবেথ বোর্নে টুইটে এই সহিংসতাকে অগ্রহণযোগ্য হিসেবে মন্তব্য করেছেন। সেই সঙ্গে অনেক শহরে বিক্ষোভকারীদের দায়িত্বশীল আচরণের প্রশংসা করেছেন।

দেশের মানুষের অবসরে যাওয়ার বয়স ৬২ থেকে ৬৪ বছর বাড়ানোর নিয়মের প্রতিবাদে ফ্রান্সজুড়ে এই বিক্ষোভ হয়েছে।

দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, প্রায় ৭ লাখ ৮২ হাজার বিক্ষোভকারী বিক্ষোভে অংশ নেন। তাঁদের মধ্যে ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে ১ লাখ ১২ হাজার বিক্ষোভকারী অংশ নিয়েছেন। তবে ফ্রান্সের শ্রমিক ইউনিয়ন সিজিটি বলেছে, বিক্ষোভকারীদের সংখ্যা তিন গুণ বেশি।

শ্রমিক ইউনিয়নের নেতারা বলছেন, কয়েক মাস ধরে পেনশনের নতুন নিয়ম সংস্কারের জন্য বিক্ষোভ চলছে। বিক্ষোভ এখনো কমেনি।

সিজিটির নেতা সোফি বিনতে এএফপিকে বলেন, যত দিন এই পেনশন সংস্কার প্রত্যাহার করা না হবে, তত দিন বিক্ষোভ কমবে না। তাঁরা জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী।

ফ্রান্সের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ডারমানিন বলেছেন, প্যারিসে পেট্রলবোমার আঘাতে একজন পুলিশ কর্মকর্তার হাত ও মুখ পুড়ে গেছে।

ফ্রান্সের লিয়নস, তোলোইয়ুস, নানতেস শহরেও সহিংসতা হয়েছে। এসব শহরে যানবাহনে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। ব্যবসাকেন্দ্রে হামলা চালানো হয়েছে।

ফ্রান্সের দক্ষিণাঞ্চলের মার্সেলি শহরে বিলাসবহুল একটি হোটেল দখল করে বিক্ষোভকারীরা। এএফপি বলছে, ২০০৯ সালের পর থেকে প্রথমবারের মতো গতকাল ফ্রান্সের শীর্ষ আটটি শ্রমিক ইউনিয়ন একসঙ্গে বিক্ষোভের ডাক দিয়েছে।

ফ্রান্সের সাংবিধানিক পরিষদ পেনশন সংস্কারে সমর্থন দেওয়ার কয়েক ঘণ্টা পর গত ১৫ এপ্রিল এটি আইন হিসেবে পাস হয়। তবে জনমত জরিপ বলছে, জনগণের বড় একটি অংশ অবসরের বয়স বাড়ানোর বিপক্ষে। সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে পেনশনের এই সংস্কার কার্যকর হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

সরকার পেনশন সংস্কার নিয়ে আরও আলোচনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। তবে শ্রমিক ইউনিয়নগুলো পেনশন সংস্কার বাতিল চায়। এ নিয়ে দুই পক্ষ সমঝোতায় পৌঁছাতে পারবে কি না, তা স্পষ্ট নয়। সূত্র: প্রথম আলো।