মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ সংসদে বলেছেন, মেগা প্রকল্পগুলো যথাযথ মূল্যায়নের মাধ্যমে নেওয়া হয়েছে বলে বাস্তবায়নে কোনো বিরূপ প্রভাব পড়বে না।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নে বিরূপ প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা নেই; কারণ, সেগুলো নেওয়ার আগে যথাযথ আর্থিক ও অর্থনৈতিক বিশ্লেষণ করা হয়েছিল। এ কারণে প্রকল্পগুলো চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে।’

ময়মনসিংহ-৮ আসনের জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য ফখরুল ইমামের তারকাচিহ্নিত প্রশ্নের জবাবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এ মন্তব্য করেন। খবর বাসসের।

শেখ হাসিনা বলেন, বেশির ভাগ মেগা প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে বৈদেশিক ঋণ বা অনুদান নিয়ে, যেগুলোর ক্ষেত্রে সুদের হার তুলনামূলকভাবে খুবই কম এবং দীর্ঘ গ্রেস পিরিয়ডের সঙ্গে দীর্ঘ মেয়াদে এ ঋণ পরিশোধযোগ্য।

তিনি আরও বলেন, এ ছাড়া উন্নয়ন সংস্থাগুলোর ঋণ তহবিল ছাড়ের ক্ষেত্রে বড় ধরনের কোনো জটিলতা লক্ষ করা যায়নি।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী পদ্মা বহুমুখী সেতু নির্মাণ প্রকল্প, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র এবং রামপাল ১৩২০ মেগাওয়াট মৈত্রী সুপার থার্মাল পাওয়ার প্রকল্পসহ ১৬টি মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নের অগ্রগতি এবং বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরেন।

অন্য প্রকল্পগুলো হলো মাতারবাড়ী ১২০০ মেগাওয়াট আলট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্প, ঢাকা ম্যাস র‌্যাপিড ট্রানজিট ডেভেলপমেন্ট প্রকল্প, এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণ ও গ্যাস পাইপলাইন স্থাপন প্রকল্প, পায়রা গভীর সমুদ্রবন্দর, পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্প এবং দোহাজারী থেকে রামু হয়ে কক্সবাজার ট্র্যাক, রামু থেকে মিয়ানমারের নিকটবর্তী গুন্দুম পর্যন্ত সিঙ্গেল লাইন ডুয়েল গেজ নির্মাণ প্রকল্প।

অন্যান্য মেগা প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে পায়রা তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র, ভাঙ্গা জংশন (ফরিদপুর) থেকে পায়রা বন্দর এবং কুয়াকাটা হয়ে বরিশাল পর্যন্ত ব্রডগেজ রেললাইন নির্মাণ, কক্সবাজার বিমানবন্দর উন্নয়ন প্রকল্প, অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা, আশ্রয়ণ-২ প্রকল্প, কর্ণফুলী নদীর তলদেশ দিয়ে মাল্টি-লেন সড়ক টানেল প্রকল্প এবং এসএএসইসি ঢাকা-সিলেট করিডর সড়ক উন্নয়ন প্রকল্প। তিনি উল্লেখ করেন, প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নের সময় অনেক ব্যাকওয়ার্ড ও ফরোয়ার্ড লিঙ্কেজ শিল্প ও ব্যবসার পাশাপাশি বিপুল কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা হয়েছে। প্রকল্পগুলোর মাধ্যমে উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হওয়ার পরিবর্তে দেশের অগ্রগতি সরাসরি ত্বরান্বিত হচ্ছে।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘এ ছাড়া যেহেতু প্রকল্পগুলো (পদ্মা বহুমুখী সেতু নির্মাণ ও পায়রা গভীর সমুদ্রবন্দর প্রকল্প ছাড়া) বিদেশি উৎস থেকে অর্থায়ন পাচ্ছে, সেহেতু প্রকল্প সংশ্লিষ্ট আমদানি ব্যয় দেশের বৈদেশিক মুদ্রার ব্যালান্সের ওপর কোনো বিরূপ প্রভাব ফেলবে না।’

তিনি বলেন, দেশের অর্থনৈতিক, সামাজিক ও অন্যান্য সকল ক্ষেত্রে উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে প্রয়োজন অনুযায়ী প্রকল্পগুলো হাতে নেওয়া হচ্ছে।

নোয়াখালী-৩ আসনের আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য মো. মামুনুর রশীদ কিরনের এক প্রশ্নের জবাবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেন, সর্বজনীন পেনশন প্রকল্পসংক্রান্ত একটি আইন প্রণয়ন এবং আইনের অধীনে একটি কর্তৃপক্ষ গঠন প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। তিনি বলেন, একটি টেকসই ও সংগঠিত সামাজিক নিরাপত্তাকাঠামোর আওতায় এনে দেশের বয়স্ক ব্যক্তিদের আর্থিক সুবিধা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সরকার সর্বজনীন পেনশন স্কিম গঠনের উদ্যোগ নিয়েছে।