সিএমপির চকবাজার থানার সাইনবোর্ড। ছবি: সংগৃহীত

মা-বাবার প্রিয় পুত্র ইমরুল (ছদ্মনাম)। তিনি পড়ছেন দেশের নামী বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রথম বর্ষে।

বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময়ে নেশায় আসক্ত হয়ে যান ইমরুল। তিনি নেশার টাকা জোগাড় করতে বন্ধু, পরিচিত সবার কাছ থেকে টাকা ধার করতে শুরু করেন। পরবর্তী সময়ে পরিচিতরা ধারের টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য চাপ দেওয়া শুরু করে।

এদিকে ইমরুল তাঁর মা-বাবার কাছেও অতিরিক্ত টাকা চাইতে পারছিলেন না। অবশেষে ক্রাইম পেট্রোলকে অনুসরণ করে বন্ধু সুমনকে (ছদ্মনাম) নিয়ে বানালেন মিথ্যা অপহরণ নাটক।

২৮ মে সকাল সাড়ে ৮টার দিকে ইমরুল ও তাঁর বন্ধু সুমন মিলে চকবাজার থানাধীন লালচাঁন রোডে তাদের পূর্বপরিচিত মামুনের (ছদ্মনাম) চায়ের দোকানে চলে আসেন। মামুনও ইমরুলের কাছ থেকে দেড় হাজার টাকা পেতেন। দুই বন্ধু চা পান শেষে মামুনের ব্যবহৃত বাটন মোবাইল সেটটি কৌশলে নিয়ে যান।

ওই মোবাইল দিয়ে সুমন ইমরুলের মাকে ফোন করে ছেলে অপহরণ হয়েছে বলে জানান। তিনি মুক্তিপণও দাবি করেন।

পরিকল্পনা অনুযায়ী ইমরুলও মাকে জানান, তাকে গুলজার মোড় থেকে অজ্ঞাতনামা নোয়াহ গাড়িতে ৪ জন অজ্ঞাত লোক জোর করে তুলে নিয়ে নাকে রুমাল চেপে ধরে অজ্ঞান করে ফেলে এবং তাঁকে ইলেকট্রিক শক দেয়। দ্রুত টাকার ব্যবস্থা করতে হবে।

ইমরুলের বাবা হন্তদন্ত হয়ে থানায় হাজির হন। অপহরণের বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করে তাৎক্ষণিকভাবে সিএমপি চকবাজার থানা-পুলিশ তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় ভিকটিমের অবস্থান শনাক্ত করে।

অবশেষে বাকলিয়া থানাধীন নতুন ব্রিজ এলাকা থেকে ইমরুলকে উদ্ধার করে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। সেই জিজ্ঞাসাবাদে অসামঞ্জস্যপূর্ণ তথ্য পেলে মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে একপর্যায়ে মামুন ও সুমনের সন্ধান বের করেন পুলিশ সদস্যরা। তাঁদের মুখোমুখি করলে আসল রহস্য বেরিয়ে আসে।