ফেনীতে ভাড়াটিয়া সেজে বাসাবাড়িতে ঢুকে স্বর্ণালংকার লুটপাটের ঘটনায় নারীসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। খবর প্রথম আলোর।

বাড়ি ভাড়া নেওয়ার কথা বলে প্রথমে তাঁরা বাড়িতে প্রবেশ করতেন। তারপর বাড়ির গৃহকর্ত্রীদের অভিনব কায়দায় বশীভূত করে বাড়ির স্বর্ণালংকার লুট করে ভেগে যেতেন। তাঁরা সবাই একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। ফেনী, চাঁদপুর, কুমিল্লা, নারায়ণগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় বাড়ি ভাড়া নেওয়ার কথা বলে তাঁরা স্বর্ণালংকার লুট করেন। এমনই প্রতারক চক্রের পাঁচ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

আজ বুধবার দুপুরে ফেনী পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সম্মেলনকক্ষে আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. বদরুল আলম মোল্লা এসব তথ্য জানান। এ সময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নাদিয়া ফারজানা (ক্রাইম অ্যান্ড অপস), অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) থোয়াই অং প্রু মারমা, ফেনী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নিজাম উদ্দিন, বিশেষ শাখার পরিদর্শক (ডিএসবি) মো. শহিদ উল্যাহ উপস্থিত ছিলেন।

গ্রেপ্তার আসামিরা হলেন মো. আলী হাসান (৫০), বেবী আক্তার ওরফে বকুল (৪০), মো. শাহজালাল (৩৮), তাসলিমা বেগম (৩৫) ও রূপ কমল চন্দ্র দাস (৪৩)।

ব্রিফিংয়ে বলা হয়, গত ২৭ ফেব্রুয়ারি শহরের বারাহীপুর বনানীপাড়ায় মোহাম্মদ আহসানুল করিমের মনোয়ারা ভ্যালিতে বাড়ি ভাড়া নেওয়ার কথা বলে নারীসহ তিনজন প্রবেশ করেন। তাঁরা নানা কথার মাধ্যমে গৃহকর্ত্রী মনোয়ারা বেগমের বিশ্বাস অর্জন করে প্রতারণার মাধ্যমে প্রায় ২৮ লাখ টাকা মূল্যের ৪২ ভরি ১০ আনা ওজনের স্বর্ণালংকার কৌশলে চুরি করে পালিয়ে যান।

এ ঘটনায় ২ মার্চ আহসানুল করিম বাদী হয়ে ফেনী মডেল থানায় একটি মামলা করেন। অন্যদিকে গত ২৬ জানুয়ারি সকালে একই চক্র শহরের শান্তিধারা আবাসিক এলাকার করিম ম্যানশনে বাড়ি ভাড়া নেওয়ার কথা বলে ঘরে ঢুকে প্রতারণার মাধ্যমে ২ লাখ ১০ হাজার টাকা মূল্যের ৩ ভরি ওজনের স্বর্ণালংকার নিয়ে যান। এ ঘটনায় আরও একটি মামলা করেন ওই বাড়ির মালিক। মামলা নম্বর ০৮/২১২।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. বদরুল আলম মোল্লা বলেন, এসব ঘটনার পর পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাস্থল পরিদর্শনসহ তথ্যপ্রযুক্তি, ম্যানুয়াল সোর্সিং ও আশপাশের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ পর্যালোচনা করে জড়িত ব্যক্তিদের ধরা ও লুট করা স্বর্ণালংকার উদ্ধারে একাধিক অভিযান চালায়। পরে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার থোয়াই অং প্রু মারমার নেতৃত্বে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও থানার মোগড়াপাড়া এলাকা থেকে গতকাল মঙ্গলবার রাতে ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে মো. আলী হাসান (৫০), বেবী আক্তার ওরফে বকুলকে (৪০) গ্রেপ্তার করে। পরে তাঁদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী কুমিল্লার গৌরীপুর এলাকা থেকে মো. শাহজালাল (৩৮) ও তাসলিমা বেগমকে (৩৫) গ্রেপ্তার করা হয়।

পুলিশের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, অভিযুক্ত ব্যক্তিরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন, কুমিল্লার ইলিয়টগঞ্জ বাজারের সোনার দোকানদার রূপ কমল চন্দ্র দাসের (৪৩) কাছে লুট করা এসব স্বর্ণালংকার বিক্রি করেন। ইলিয়টগঞ্জ বাজারে অভিযান চালিয়ে ১ ভরি ১৫ আনা গলানো সোনা, ১টি সোনার চেইন ও ১ জোড়া কানের দুল জব্দের পাশাপাশি ওই সোনার দোকানদারকে গ্রেপ্তার করা হয়। উদ্ধার করা স্বর্ণালংকারের মোট পরিমাণ ৩ ভরি ৫ আনা, যার আনুমানিক দাম ২ লাখ ৩০ হাজার টাকা।

গ্রেপ্তার পাঁচ আসামিকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে বলে মডেল থানার ওসি মো. নিজাম উদ্দিন জানিয়েছেন ।