তিনটি ট্রেনের সংঘর্ষে এ দুর্ঘটনা ঘটে। ছবি: এএনআই

ওডিশায় ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনায় বাড়ছে নিহতের সংখ্যা। এতে এখন পর্যন্ত ২৮৮ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। আহত হয়েছেন ৯ শতাধিক মানুষ। এ দুর্ঘটনায় ভারতীয়দের পাশাপাশি উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে বাংলাদেশিদের মধ্যেও।

দুর্ঘটনাকবলিত ট্রেনে বাংলাদেশিও থাকতে পারেন। এ কারণে কলকাতার বাংলাদেশ উপহাইকমিশন দুর্ঘটনাবিষয়ক তথ্য জানতে বাংলাদেশিদের জন্য একটি হটলাইন নম্বর (+৯১৯০৩৮৩৫৩৫৩৩ হোয়াটসঅ্যাপ) দিয়েছে।

বাংলাদেশের বহু মানুষ চিকিৎসার জন্য ভারতে যান। তাঁদের কেউ কেউ চিকিৎসা করান কলকাতায়, অনেকে চলে যান চেন্নাই-বেঙ্গালুরুতে। এ ধরনের বাংলাদেশি ভ্রমণকারীরা সাধারণত করমণ্ডল এক্সপ্রেস ট্রেনটি ব্যবহার করেন।

শুক্রবার (২ জুন) সন্ধ্যায় শালিমার থেকে চেন্নাইগামী করমণ্ডল এক্সপ্রেস দুর্ঘটনার খবর পাওয়ার পরেই উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়ে বাংলাদেশিদের মধ্যে। অনেকেই নিকটাত্মীয়দের সম্পর্কে খোঁজ নিতে শুরু করেছেন।

আশঙ্কা করা হচ্ছে, দুর্ঘটনায় হতাহতদের মধ্যে বাংলাদেশিরাও থাকতে পারেন। যদিও এখন পর্যন্ত হতাহতদের মধ্যে বাংলাদেশের কেউ রয়েছেন কি না নিশ্চিত করেনি ভারতীয় কর্তৃপক্ষ।

জানা গেছে, করমণ্ডল এক্সপ্রেসের যাত্রীদের অধিকাংশই পর্যটক এবং চেন্নাইসহ দক্ষিণ ভারতের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে যাচ্ছিলেন। আবার অনেকে চিকিৎসা করিয়ে ফিরছিলেন।

ট্রেন দুর্ঘটনার পরেই কলকাতাস্থ বাংলাদেশের উপদূতাবাস থেকে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। এতে বলা হয়, কলকাতা থেকে চেন্নাইগামী করমণ্ডল এক্সপ্রেস শুক্রবার স্থানীয় সময় ৭টার দিকে ওডিশায় বালেশ্বরের কাছে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। সাধারণত বাংলাদেশিরা চিকিৎসার জন্য ওই ট্রেনে যাতায়াত করেন।

এই বিবেচনায় দুর্ঘটনার পর রেল কর্তৃপক্ষ এবং ওডিশার রাজ্য সরকারের সঙ্গে কলকাতাস্থ বাংলাদেশের উপহাইকমিশন যোগাযোগ রাখছে। এ-সংক্রান্ত তথ্যের জন্য উপহাইকমিশনের হটলাইনে যোগাযোগের জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে।

ভারতের পূর্বাঞ্চলের ওডিশা রাজ্যের বালাসোর এলাকার কাছে গতকাল শুক্রবার রাতে তিনটি ট্রেনের সংঘর্ষ হলে এই দুর্ঘটনা ঘটে। উদ্ধারকারীরা দুমড়েমুচড়ে যাওয়া ট্রেনের বগিতে আটকে পড়া ব্যক্তিদের উদ্ধারের চেষ্টা করছেন।

হিন্দুস্তান টাইমসের খবরে রেলওয়ে-সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলেছেন, কলকাতাগামী বেঙ্গালুরু-হাওড়া সুপার ফাস্ট এক্সপ্রেস ট্রেনটি ডাউন লাইনে ছিল। সন্ধ্যা ৬টা ৫৫ মিনিটে ওডিশার বাহাঙ্গাবাজার এলাকায় এই ট্রেনের কয়েকটি বগি লাইনচ্যুত হয়। এর মিনিট পাঁচেক পর আপ লাইন দিয়ে ওই এলাকা পার হচ্ছিল চেন্নাইগামী শালিমার-চেন্নাই সেন্ট্রাল করমন্ডল এক্সপ্রেস ট্রেনটি। হঠাৎ এই ট্রেনের কয়েকটি বগি লাইনচ্যুত হয়। এ সময় পাশের একটি লাইনে আগে থেকেই দাঁড়িয়ে ছিল মালবাহী একটি ট্রেন।

করমন্ডল এক্সপ্রেস ট্রেনটি লাইনচ্যুত হয়ে প্রথমে বেঙ্গালুরু-হাওড়া সুপার ফাস্ট এক্সপ্রেসের কয়েকটি বগিতে আঘাত করে। পরে করমন্ডল এক্সপ্রেস ট্রেনের কয়েকটি বগি আগে থেকে দাঁড়িয়ে থাকা মালবাহী ট্রেনের ওপর গিয়ে আছড়ে পড়ে। সূত্র: প্রথম আলো