সংবাদ সম্মেলনে কথা বলছেন ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বিপিএম (বার), পিপিএম (বার)। ছবি : ডিএমপি

রাজধানীর তুরাগ থানা এলাকায় ডাচ বাংলা ব্যাংকের টাকা লুটের ঘটনায় হোতাসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা (ডিবি) মিরপুর বিভাগ। এ সময় তাঁদের কাছ থেকে ৫৮ লাখ ৭ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়।

মঙ্গলবার (১৪ মার্চ) ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বিপিএম (বার), পিপিএম (বার) জানান, মঙ্গলবার (১৪ মার্চ) রাজধানীর করাইল বস্তি ও নেত্রকোনা থেকে আসামি মো. হৃদয়, মো. মিলন মিয়া ও হোতা আকাশকে গ্রেপ্তার করা হয়।

ডিবিপ্রধান জানান, ডাচ বাংলা ব্যাংকের টাকা ডাকাতির ঘটনায় গ্রেপ্তার ৮ জনকে রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে চাঞ্চল্যকর তথ্য মেলে। টাকা লুটের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে বিভিন্ন দলে ভাগ হয়ে কাজ করেন আসামিরা। মূল পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নকারী হিসেবে কাজ করে ৪/৫ জন। তাঁদের মধ্যে আকাশ ও সোহেল রানা নামে দুজন লুটের ছক সাজায়। সোহেল রানা আগে মানি প্ল্যান্ট লিংক লিমিটেডের গাড়িচালক ছিলেন। এ কারণে প্রতিষ্ঠানটি সম্পর্কে ভালো ধারণা ছিল তাঁর। কোনো বাধা ছাড়াই টাকা বহনকারী মাইক্রোবাসটি নিয়ন্ত্রণে নেন তাঁরা। হোতা আকাশ টাকা লুটের পর মাইক্রোবাসে উঠতে না পারলেও সেখান থেকে পালিয়ে যেতে সক্ষম হন।

তিনি আরও জানান, আসামি ইমনের সঙ্গে আগে থেকেই পরিচয় ছিল আকাশের। তাই মিলনকে ডাকাতির পরিকল্পনার কথা জানান এবং এতে যুক্ত হওয়ার প্রস্তাব দেন তিনি। ইমন তাঁর সহযোগী সানোয়ারের মাধ্যমে লোকবল, মোবাইল ফোন ও সিম কার্ড সংগ্রহ করেন। সুনামগঞ্জ ও নেত্রকোনা থেকে ৯ জন লোক সংগ্রহ করেন সানোয়ার। ঘটনার দুই দিন আগে সবাই ঢাকায় আসেন। কিন্তু তাঁদের কাছে ডাচ বাংলা ব্যাংকের টাকা লুটের বিষয়টি গোপন রাখেন ইমন, মিলন ও সানোয়ার। ঘটনার দিন মাইক্রোবাসে ওঠে তাঁরা বিষয়টি টের পান।

মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ জানান, ডাকাতির পর হোতা আকাশ মাইক্রোবাসে ওঠতে না পারায় সহযোগীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। আকাশ ধরা পড়ে গেছেন, এমন আশঙ্কায় ৩০০ ফুট সড়কের নির্জন স্থানে এসে গাড়ি থেকে টাকা নিয়ে পালিয়ে যান তাঁরা। পরে ডাকাতির টাকা তাঁরা নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নেন। লুণ্ঠিত টাকার একটি বড় অংশ নিয়ে পালিয়ে যান হোতা আকাশ ও সোহেল। আসামিরা বেশ কিছু টাকা এরই মধ্যে খরচ করে ফেলেছেন।

তিনি জানান, এ নিয়ে মোট ১১ জন অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার এবং ৭ কোটি ১ লাখ ৫৬ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত অন্য অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

এর আগে গ্রেপ্তার আসামিরা হলেন মো. সানোয়ার হাসান, মো. ইমন ওরফে মিলন, মো. আকাশ, সাগর, মো. বদরুল আলম, মো. মিজানুর রহমান, মো. সনাই মিয়া ও মো. এনামুল হক বাদশা।