কথা বলছেন অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বিপিএম (বার), পিপিএম (বার)। ছবি : ডিএমপি

রাজধানীর তুরাগ থানা এলাকায় ডাচ বাংলা ব্যাংকের লুট করা টাকার মধ্যে ৬ কোটি ৪৩ লাখ ৪৮ হাজার ৫০০ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা (ডিবি) মিরপুর ও গোয়েন্দা উত্তরা বিভাগ।

রোববার (১২ মার্চ) অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বিপিএম (বার), পিপিএম (বার) জানান, গত শনিবার (১১ মার্চ) সুনামগঞ্জ ও ঢাকার আশপাশের এলাকা থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।

তাঁরা হলেন মো. সানোয়ার হাসান, মো. ইমন ওরফে মিলন, মো. আকাশ, সাগর, মো. বদরুল আলম, মো. মিজানুর রহমান, মো. সনাই মিয়া ও মো. এনামুল হক বাদশা।

ডিবির প্রধান বলেন, বুথে টাকা পৌঁছে দেওয়ার সময় গত ৯ মার্চ রাজধানীর তুরাগ থানা এলাকা থেকে ডাচ বাংলা ব্যাংকের ১১ কোটি ২৫ লাখ টাকা লুট হয় বলে দাবি করে মানি প্ল্যান্ট লিংক প্রাইভেট লিমিটেড। ঘটনার পরপর গোয়েন্দা বিভাগের তৎপরতায় ওই দিনই খিলক্ষেত এলাকা থেকে ৩ কোটি ৮৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় গত শনিবার (১১ মার্চ) ঢাকা ও সুনামগঞ্জে অভিযান চালিয়ে আসামিদের গ্রেপ্তার এবং ২ কোটি ৫৩ লাখ ৯৮ হাজার ৫০০ টাকা উদ্ধার করা হয়। এ সময় ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত একটি প্রাইভেট কার জব্দ করা হয়।

আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে তিনি বলেন, গত ৮ মার্চ সিলেট যাওয়ার উদ্দেশে একটি মাইক্রোবাস ভাড়া করেন আসামিরা। ৯ মার্চ ভোর সাড়ে ৫টার দিকে গাড়িচালকের কথা মতো কুর্মিটোলা যাত্রী ছাউনির সামনে এলে আসামিরা তাঁকে পেছনের আসন ঠিক করার কথা বলেন। চালক পেছনে গেলে তাঁর হাত-পা ও চোখ বেঁধে গাড়ির নিয়ন্ত্রণ নেন আসামিরা। এরপর টাকা লুট করতে মিরপুর ডিওএইচএস এলাকায় নির্দিষ্ট নম্বরের গাড়িকে অনুসরণ করার জন্য ওঁৎ পেতে থাকেন। এক পর্যায়ে গাড়িটি এলে তাঁরা পেছন পেছন অনুসরণ করেন। নির্জন জায়গায় আসার পর তাঁদের ব্যবহৃত গাড়ি দিয়ে টার্গেট করা গাড়িকে ধাক্কা দিয়ে থামানো হয়। এরপর বাগবিতণ্ডা করে গাড়িটি নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নেন।

পরে টাকাসহ গাড়িটি নিয়ে তাঁরা ৩০০ ফিট এলাকায় যান। পথে গাড়িতে থাকা পাঁচজনকে নামিয়ে দেওয়া হয়। দুটি ট্রাংক ভেঙে টাকা বের করে তাঁদের কাছে থাকা দুটি চালের বস্তা ও পাঁচটি ব্যাগে রাখা হয়। অতিরিক্ত ব্যাগ না থাকায় বাকি ট্রাংকে থাকা টাকা ফেলে যান আসামিরা। এ ছাড়া গাড়িচালকের সিটে বড় একটি টাকার ব্যাগ রেখে যান। অবশিষ্ট ব্যাগটি চালক নিজ হেফাজতে নেন। এ ছাড়া ট্রাংক থেকে অবশিষ্ট টাকা নিয়ে তাঁর ভাইয়ের হেফাজতে রাখেন। পরে চালকের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী বাসা থেকে টাকা উদ্ধার করা হয়।

তিনি আরও বলেন, ১১ কোটি টাকা পরিবহনের সময় নিজস্ব নিরাপত্তা ব্যবস্থা অর্থাৎ অস্ত্রসহ কোনো নিরাপত্তাকর্মী ছিল না। টাকা পরিবহনের সময় স্থানীয় থানাকে অবহিত করা হয়নি।

এই পুলিশ কর্মকর্তা জানান, ডাকাতির ঘটনায় জড়িত অন্য অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার ও অবশিষ্ট টাকা উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। গ্রেপ্তার আসামিদের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।