মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বৃহস্পতিবার সকালে বাংলাদেশ বিমানবাহিনী একাডেমি যশোরে ‘রাষ্ট্রপতি কুচকাওয়াজ (শীতকালীন) ২০২২’ এ যোগদান অনুষ্ঠানে ভাষণ দেন। ছবি: বাসস

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, কোভিড-১৯ মহামারি, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ও নিষেধাজ্ঞার ফলে সারা বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দার মধ্য দিয়ে গেলেও দেশের অর্থনীতি এখনো যথেষ্ট গতিশীল ও নিরাপদ রয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমি বলতে পারি যে, কোভিড-১৯, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং নিষেধাজ্ঞার কারণে পুরো বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দা প্রত্যক্ষ করলেও আমাদের অর্থনীতি এখনো গতিশীল এবং নিরাপদ।’

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর সরকার বৈশ্বিক মন্দা কাটিয়ে উঠতে অত্যন্ত সজাগ ও সক্রিয়।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আজ বৃহস্পতিবার সকালে বাংলাদেশ বিমানবাহিনী একাডেমি যশোরে ‘রাষ্ট্রপতি কুচকাওয়াজ (শীতকালীন) ২০২২’ এ যোগদান অনুষ্ঠানে দেওয়া ভাষণে এসব কথা বলেন।

দেশপ্রেম, আন্তরিকতা, জনগণের আস্থা ও বিশ্বাস অর্জনের গুরুত্ব তুলে ধরে দেশ ও জনগণের প্রতি দায়িত্ববোধের কথা মাথায় রেখে বিমানবাহিনীর নবীন কর্মকর্তাদের দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘অনেক দেশ যখন দুর্ঘটনা, দুর্বিপাকে পড়ে, আমরা কিন্তু তাদের সহযোগিতা করি। আবার আমাদের দেশে যখন ঝড়, বন্যা বা কোনো রকম দুর্ঘটনা ঘটে, বিমানবাহিনীর সদস্যসহ সশস্ত্র বাহিনীর সকল সদস্য জনগণের পাশে দাঁড়ায়, জনগণের সেবা করে।’

অনুষ্ঠানে প্রদর্শিত মনোজ্ঞ ফ্লাইফাস্ট ও এরোবেটিকস উপভোগ করেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। ছবি: বাসস

শেখ হাসিনা বলেন, এটাই হচ্ছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। জনগণের আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করা। যেকোনো একটা যুদ্ধে জয়ী হওয়ার জন্য এটা একান্তভাবে দরকার।

‘বাংলাদেশ সকলের সঙ্গে বন্ধুত্বের নীতিতে বিশ্বাস করে’- জাতির পিতার রেখে যাওয়া সেই পররাষ্ট্রনীতির প্রসঙ্গ টেনে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তারপরও দক্ষতার দিক থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে আমাদের সব ধরনের উৎকর্ষ বজায় রেখে চলতে হবে এবং সেই আত্মবিশ্বাস নিয়ে চলতে হবে।’ আমরা সব সময় প্রশিক্ষণের ওপর সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিই।

সরকারপ্রধান বলেন, দেশমাতৃকার প্রতি এবং দেশের জনগণের প্রতি দায়িত্ববোধ থাকতে হবে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব তাঁর ভাষণেও বলেছেন যে দেশ ও দেশের জনগণের প্রতি দায়িত্ববোধই হচ্ছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেন, ‘কাজেই, আমি আশা করি, আমাদের নবীন যারা আজ থেকে নতুন কর্মস্থলে যোগ দেবেন, তাদের জন্য এই কথা অনেক বেশি প্রযোজ্য।’

এর আগে সকালে ঢাকা থেকে হেলিকপ্টারে করে যশোর আসেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সকাল সাড়ে ১০টায় যশোর বিমানবাহিনী একাডেমির প্যারেড গ্রাউন্ডে অবতরণ করেন তিনি। এ সময় বিমানবাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল শেখ আবদুল হান্নান মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানান।
প্যারেড গ্রাউন্ডে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে সশস্ত্র সালাম জানান বিমানবাহিনীর চৌকস সদস্যরা। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী খোলা জিপে করে প্যারেড পরিদর্শন এবং সালাম গ্রহণ করেন। পরে তিনি সেরা ক্যাডেটদের হাতে ‘সোর্ড অব অনার’, ‘চিফ অব এয়ার স্টাফ ট্রফি’ এবং ‘কমান্ড্যান্টস ট্রফি’ তুলে দেন।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত ক্যাডেটদেরকে ফ্লাইং ব্যাজ পরিয়ে দেন এবং বিভিন্ন সাফল্যের স্বীকৃতিস্বরূপ সম্মাননায় ভূষিত করেন। ’৮১ নম্বর বাফা কোর্সে সার্বিক প্রশিক্ষণে সর্বোচ্চ সাফল্যের জন্য স্কোয়াড্রন সিনিয়র অফিসার খন্দকার ইমামুর রহমান সোর্ড অব অনার লাভ করেন।

অনুষ্ঠানে মনোজ্ঞ ফ্লাইফাস্ট এবং এরোবেটিকস প্রদর্শন করেন বিমান সেনারা।