গ্রেপ্তার আসামি সুজন মিয়া। ছবি : বাংলাদেশ পুলিশ

ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা এলাকায় এক বাকপ্রতিবন্ধী নারীকে ধর্ষণের পর পুড়িয়ে হত্যার রহস্য উদ্ঘাটন করেছে জেলা পুলিশ।

শুক্রবার (২ নভেম্বর) ভোরে পটুয়াখালীর কলাপাড়া থানাধীন তেগাছিয়া বাজার থেকে আসামি সুজন মিয়াকে (২৫) গ্রেপ্তার করা হয়। আসামির বাড়ি শরীয়তপুরের গোসাইরহাট থানা এলাকায়।

শনিবার (৩ ডিসেম্বর) এক সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানান ঢাকার পুলিশ সুপার মো. আসাদুজ্জামান পিপিএম (বার)।

পুলিশ সুপার জানান, গত ২৮ নভেম্বর রাতে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানাধীন সাবান ফ্যাক্টরি রোড এলাকা থেকে অগ্নিদগ্ধ এক বাকপ্রতিবন্ধী নারীকে উদ্ধার করে পুলিশ। প্রথমে তাঁকে রাজধানীর স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ (মিডফোর্ড হাসপাতাল) এবং পরে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়। পরে ফিঙ্গারপ্রিন্টের মাধ্যমে পরিচয় শনাক্ত করে ভুক্তভোগীর স্বজনদের বিষয়টি জানানো হয়। পরদিন চিকিৎসাধীন অবস্থায় ভুক্তভোগীর মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর ভাই অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কেরানীগঞ্জ থানায় মামলা করেন। এরপর চাঞ্চল্যকর এই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্ঘাটনে তৎপর হয় ঢাকা জেলা পুলিশ।

এই পুলিশ কর্মকর্তা জানান, ঘটনাস্থলের বিভিন্ন আলামত ও সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করা হয়। তথ্য ও প্রযুক্তির সহায়তায় আসামি সুজন মিয়ার অবস্থান শনাক্ত করে শুক্রবার ভোরে গ্রেপ্তার করা হয়।

সুজনকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, ৮-১০ দিন আগে ভুক্তভোগীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়েন সুজন। গত ২৮ নভেম্বর তাঁদের মধ্যে শারীরিক সম্পর্ক হয়। এরপর তাঁকে বিয়ের জন্য চাপ দিতে থাকেন ভুক্তভোগী। বিয়ে না করলে সম্পর্কের বিষয়টি সবাইকে জানিয়ে দেওয়ার হুমকি দেন ভুক্তভোগী। এর জেরে তাঁকে হত্যার পরিকল্পনা করেন সুজন। পরিকল্পনা অনুযায়ী, গত ২৮ নভেম্বর রাতে ভুক্তভোগীকে জামাকাপড় নিয়ে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানাধীন চুনকুটিয়া সাবান ফ্যাক্টরি এলাকায় আসতে বলেন সুজন। ভুক্তভোগী ঘটনাস্থলে এলে কিল-ঘুষি ও ধাক্কা মেরে রাস্তার পাশের খাদে ফেলে দেন তিনি। তাঁকে মৃত ভেবে সঙ্গে থাকা জামাকাপড় ভুক্তভোগীর শরীরের ওপর রেখে আগুন জ্বালিয়ে গ্রামের বাড়ি গোসাইরহাটে পালিয়ে যান সুজন। এরপর পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় শ্বশুরবাড়িতে আত্মগোপন করেন।

পুলিশ সুপার জানান, সম্পর্কের বিষয়টি গোপন রাখতে ভুক্তভোগীকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেন সুজন। তাঁর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।