কুমিল্লায় দুই তরুণীকে হত্যার অভিযোগে গ্রেপ্তার আব্দুল্লাহ আনসারী মুন্না (মাঝে) ও তাঁর সহযোগী মাইক্রোবাসচালক দীন ইসলাম দীনু (ডানে)। ছবি: পিবিআই

প্রেমের সম্পর্ক গড়ে টাকা দাবি করে না পাওয়ায় দেড় মাসে দুই তরুণীকে হত্যার অভিযোগে কুমিল্লার এক যুবক এবং তাঁর সহযোগীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

গ্রেপ্তার আবদুল্লাহ আনসারী মুন্না (২৩) একটি বেকারি দোকানে কাজ করতেন। তাঁর সহযোগী দীন ইসলাম দীনু (১৯) মাইক্রোবাসের চালক। গত ৩১ অক্টোবর তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। খবর বিডিনিউজের।

পিবিআই বলছে, গত ২ সেপ্টেম্বর কুমিল্লার কোতোয়ালি থানাধীন আমতলী এলাকার বাসিন্দা লিলি বেগমকে (২৮) এবং ২০ অক্টোবর সদর এলাকার পান্না আকতারকে (১৯) হত্যা করেন মুন্না।

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের দুটি আলাদা স্থানে তাঁদের দুজনের মৃতদেহ ফেলে দেওয়ার কাজে তাঁকে সহায়তা করেন মাইক্রোবাসচালক দীনু। এর মধ্যে লিলিকে মাইক্রোবাসের ভেতরেই হত্যা করা হয় বলে পিবিআই জানিয়েছে।

পিবিআই জানায়, এই দুই তরুণীর সঙ্গে মোবাইল ফোনে প্রেমের সম্পর্ক গড়েন মুন্না। আরও কয়েকজন তরুণীর সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক রয়েছে।

কুমিল্লায় পিবিআইয়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মহিউদ্দীন মাহমুদ সোহেল বলেন, কল রেকর্ডের সূত্র ধরেই মুন্নাকে শনাক্ত করেছেন তাঁরা। মুন্নার অপরাধের ধরনটা হচ্ছে, তিনি প্রেমের ফাঁদে ফেলে কথিত প্রেমিকাদের কাছে টাকা চাইতেন। লিলিকে মুন্না বলেছিলেন দু-তিন লাখ টাকা নিয়ে আসতে। লিলি সেই পরিমাণ টাকা না আনায় রাগে তাঁকে মাইক্রোবাসে তোলার কিছুক্ষণ পরেই গলায় ওড়না পেঁচিয়ে হত্যা করেন মুন্না।

একপর্যায়ে পান্নাকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় পা থেকে মাথা-পর্যন্ত বিছানার চাদরে মুড়ে প্লাস্টিকের ব্যাগের মধ্যে ঢুকিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়।

পরে তাঁর মৃতদেহ বস্তায় ঢুকিয়ে দীনুকে নিয়ে মাইক্রোবাসে করে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের উত্তর পাশে গোপীনাথপুর এলাকায় সেন্ট্রাল মেডিকেল কলেজের বিপরীতে ফেলা হয়। হত্যার তিন দিন পর সেখান থেকে পান্নার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মহিউদ্দীন মাহমুদ বলেন, পান্নাকে হত্যার পর টাকা না পেয়ে মুন্না ২৪ অক্টোবর পান্নার হাত-পা বাঁধা ছবি পাঠায় লিলির পরিবারের কাছে। তাদেরকেও ফোন করে বলা হয়, টাকা না দিলে লিলির অবস্থা ওই মেয়েটির মতো হবে। লিলিকে খুন করার বিষয়টি তাঁর পরিবার তখনো জানত না। লিলির পরিবারকে নিহত পান্নার বিকাশ নম্বরও দেয় মুন্না।

সেই নম্বরে লিলির পরিবার পাঁচ হাজার টাকা পাঠায়। দুই দিন পর সেই টাকা তুলে নেয় মুন্না। এসব সূত্র ধরেই মুন্নাকে শনাক্ত করা হয়। পরে লিলি হত্যার সঙ্গেও তার সংশ্লিষ্টতা বেরিয়ে আসে।

পিবিআই কুমিল্লার পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান বলেন, মুন্নার কাছ থেকে একজন ভিকটিমের মোবাইল ফোনের সিম উদ্ধার করা হয়েছে।

মুন্না ও চালক দীনু দুজনেই আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন বলেও জানায় পিবিইআই।