ডিএমপি নিউজঃ রাজধানীতে প্রেমের ফাঁদে ফেলে প্রতারণার মাধ্যমে টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগে একজনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মিরপুর মডেল থানা পুলিশ। গ্রেফতারকৃতের নাম-ফয়সাল গনি (৩০)।

১৭ মে, ২০২১ (সোমবার) রাত সাড়ে ১১ টায় তেজগাঁও থানার তেজকুনি পাড়া এলাকা হতে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

এজাহার সূত্রে জানা যায়, গ্রেফতারকৃত ফয়সাল গত ১ মার্চ, ২০২১ তারিখে মিরপুরের শাহ আলীবাগে ব্যাচেলর একটি মেসে ওঠে। টাঙ্গাইলের এক স্কুল পড়ুয়া কিশোরী অতিমারির কারণে স্কুল বন্ধ থাকায় পিতা-মাতার সাথে ঢাকায় থাকার সুবাদে মিরপুরের একটি কোচিংয়ে ভর্তি হয়। কোচিংয়ে আসার যাওয়া পথে কিশোরীর সাথে পরিচয়, সেখান থেকে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলে সে। কোচিংগামী কিশোরীকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে বিয়ের প্রস্তাব দেয় তার পিতার কাছে। মেয়ের বয়স কম হওয়ার কারণে মেয়ের পিতা এ বিয়ের প্রস্তাবে রাজি হননি। তখন সে গোপনে স্কুল পড়ুয়া কিশোরীর সাথে যোগাযোগ করে তার এন এস আইতে চাকরির কথা বলে কৌশলে ২,৮০,০০০ টাকা ও দেড় ভরি ওজনের স্বর্ণ হাতিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় কিশোরীর পিতার অভিযোগের প্রেক্ষিতে গত ৪ মে, ২০২১ (মঙ্গলবার) মিরপুর মডেল থানায় মামলা রুজু হয়।

মিরপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ মোস্তাজিরুর রহমান জানান, উক্ত মামলা তদন্তকালে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় অভিযুক্তের অবস্থান শনাক্ত করে তেজগাঁও এলাকায় অভিযান করে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

তিনি বলেন, মামলা তদন্তে বেরিয়ে আসে গ্রেফতারকৃত ফয়সাল মিরপুরের যে মেসে ছিলেন তার পাশের ফ্লাটে থাকেন এক মুদি ব্যবসায়ী। উক্ত ব্যবসায়ীর মেয়ের সাথে গড়ে উঠে প্রেমের সম্পর্ক। প্রেমের সম্পর্কের এক পর্যায়ে উক্ত ব্যবসায়ীর পরিবারের সাথে ঘনিষ্ঠতা গড়ে উঠে তার। সে প্রেমের ফাঁদে ফেলে উক্ত পরিবারের নিকট হতে ৮০,০০০ টাকাসহ অন্যান্য মালামাল হাতিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায়। উক্ত ব্যবসায়ীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে ১৯ মে, ২০২১ (বুধবার) আরেকটি মামলা রুজু হয়েছে মর্মে পুলিশের এ কর্মকর্তা জানান।

গ্রেফতারকৃত ফয়সালকে বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, গ্রেফতারকৃত ফয়সালের বাড়ি ঝিনাইদহ হরিনাকুন্ড থানার আদর্শ আন্দুলিয়া গ্রামে। তার বাবা ঢাকায় একটি সিকিউরিটি কোম্পানিতে চাকরি করেন। স্কুলের গন্ডি পেরিয়ে কলেজে অনার্স তৃতীয় বর্ষে পড়া-লেখা করাকালীন মাদারীপুরে বন্ধুর বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে একটি মেয়ের সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলেন তিনি। সে অনার্স শেষে বাবা-মায়ের সাথে জীবিকার তাগিদে চলে আসে ঢাকায়। ঢাকায় টিউশনি করে যা পায় তাতে তার পকেট খরচ হয় না। বাড়তি আয়ের আশায় হাত বাড়ায় প্রেমিকার দিকে, চাকরির কথা বলে হাতিয়ে নেয় অনেক টাকা, বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করে। প্রেমিকা যখন তার মনের খবর বুঝতে পারে তখন তাকে বিয়ে করার জন্য চাপ দেয়, সে নিজেকে আড়াল করার জন্য প্রেমিকার সাথে সমস্ত যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। দিশেহারা মেয়েটির অভিযোগের প্রেক্ষিতে তেজগাঁও থানায় মামলা রুজু হয়। তেজগাঁও থানা পুলিশ তাকে উক্ত মামলায় গ্রেফতার করে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করেছিল।