পুলিশি হেফাজতে গ্রেপ্তার ৪ ছিনতাইকারী। ছবি: বাংলাদেশ পুলিশ।

নরসিংদী জেলা গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) পুলিশ প্রাইভেট কারে উঠিয়ে দুই যাত্রীর সর্বস্ব ছিনতাইয়ের ঘটনায় জড়িত ৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে।

ডিবি সূত্রে জানা গেছে, গত ১০ সেপ্টেম্বর পূবালী ব্যাংকের কর্মকর্তা আল মামুন কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলার দুর্জয় মোড় থেকে রাত সাড়ে ৯টার দিকে ঢাকা যাওয়ার উদ্দেশ্যে একটি প্রাইভেট কারে ওঠেন। ওই প্রাইভেট কারে চালকসহ যাত্রীবেশে মোট ৪ জন ছিনতাইকারী ছিল। কিছুদূর আসার পর ১ জন ছিনতাইকারী বাদীকে বলে যে, তার বমি বমি লাগছে, তাকে একটু জানালার পাশে যেন বসতে দেওয়া হয়। আল মামুন সরল বিশ্বাসে ওই ছিনতাইকারীকে জানালার পাশে বসতে দিয়ে মাঝের সিটে চলে যান। কিছুদূর যাওয়ার পর আল মামুনের হাত-পা, চোখ বেঁধে ফেলে হত্যার হুমকি দিয়ে তাঁর সঙ্গে থাকা মানিব্যাগ, নকিয়া মোবাইল ফোন, পূবালী ব্যাংকের এটিএম কার্ড ছিনিয়ে নেয়। এরপর এটিএম বুথে নিয়ে কার্ড দিয়ে ১ লাখ ৯১ হাজার টাকা তুলে আল মামুনকে নরসিংদীর বাবুরহাটের শেখেরচর বাজার এলাকায় ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের পাশে হাত-পা, চোখ-মুখ বেঁধে ফেলে চলে যায়।

পরে এ ব্যাপারে আল মামুন বাদী হয়ে নরসিংদী মডেল থানায় মামলা করেন।

উদ্ধার করা গাড়ি। ছবি: বাংলাদেশ পুলিশ।

একইভাবে ছিনতাইয়ের শিকার হন নরসিংদী জেলা ভেটেরিনারি হাসপাতালে কর্মরত চিকিৎসক হেলাল আহমদ। ৭ অক্টোবর পারিবারিক প্রয়োজনে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় যাওয়ার জন্য ইটাখোলা থেকে একটি প্রাইভেট কারে ওঠেন তিনি। তাঁর কাছ থেকেও একই কায়দায় টাকা, মোবাইল ফোন ও ডেবিট কার্ড ছিনিয়ে নেয় যাত্রীবেশী ৪ ছিনতাইকারী। পরে ওই ডেবিট কার্ড দিয়ে এটিএম বুথ থেকে টাকা তুলে হেলাল আহমেদকে নরসিংদীর বেলাব থানাধীন নারায়ণপুর এলাকায় রাস্তার পাশে চোখ বাঁধা অবস্থায় ফেলে চলে যায় ছিনতাইকারীরা।

এ বিষয়ে ভিকটিম হেলাল উদ্দিন বাদী হয়ে শিবপুর মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।

ঘটনার পরপরই নরসিংদী জেলার পুলিশ সুপার কাজী আশরাফুল আজীম পিপিএমের সরাসরি তত্ত্বাবধানে ও দিকনির্দেশনায় জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আল আমিন এবং জেলা ডিবির অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ আবুল বাসার পিপিএম (বার)-এর তত্ত্বাবধানে পুলিশের একটি টিম প্রায় ৪৮টি সিসি ক্যামেরা পর্যবেক্ষণ করে আসামিদের শনাক্ত করে। এরপর ছিনতাইয়ের কাজে ব্যবহৃত প্রাইভেট কার ও লুন্ঠিত ৭০ হাজার টাকাসহ সংঘবদ্ধ ছিনতাইকারী দলের ৪ সদস্যকে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (জিএমপি) গাছা থানাধীন গাছা পূর্বপাড়া এলাকা থেকে গতকাল রাত ৮টার দিকে গ্রেপ্তার করে।

গ্রেপ্তার আসামিরা হলেন মো. নজরুল মৃধা (৩৩), মো. আ. রাজ্জাক (২৪), মো. তারেক মিয়া (২১) ও রফিকুল ইসলাম (২২)।

উল্লেখ্য, আসামি নজরুলের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ৪টি মামলা ও আসামি রাজ্জাকের বিরুদ্ধে ১টি মামলা রয়েছে।