সিআইডির অভিযানে গ্রেপ্তার প্রতারক চক্রের দুই সদস্য। ছবি: বাংলাদেশ পুলিশ

প্রতারণার ফাঁদে ফেলে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে দুই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট (সিআইডি)। এ-সংক্রান্ত অভিযোগ ২০ আগস্ট পেয়ে ১০ দিনের মধ্যে গ্রেপ্তার করা হয় তাদের।

গ্রেপ্তার দুই আসামির নাম জাহিদুর রহমান নিশাদ (২৮) ও অপু আহম্মেদ(২৩)।

সিআইডি জানায়, ২০২১ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি কবির হোসেনের (ছদ্ম নাম) ইমোতে একটি ফোন আসে। কলা করা ব্যক্তি ঢাকা ইমিগ্রিশনের কর্মী লামিয়া পরিচয় দিয়ে বলে, ‘স্যার আপনি কবির হোসেন বলছেন? আপনার নামে একটি বিদেশি পার্সেল এসেছে। তবে পার্সেলটি যিনি পাঠিয়েছেন তিনি শুল্ক ফি দেননি। কাজেই পার্সেল ছাড় তরাতে আপনাকে ফি বাবদ ৫০ হাজার টাকা পরিশোধ করতে হবে।’ এরপর কবির হোসেন লামিয়া নামের ওই নারীর দেওয়া বিকাশ নম্বরে ৫০ হাজার টাকা পাঠান।

ওই ঘটনার দুই-তিনদিন পর কবির হোসেন ইমোতে আরেকটি কল পান। সেই কলে আরেফিন নামের এক ব্যক্তি নিজেকে কাস্টমস অফিসার পরিচয় দিয়ে বলেন, ‘আপনার নামে যে পার্সেলটি এসেছে সেটি আমরা স্ক্যান করে অবৈধ ইউএস ডলার পেয়েছি। আপনার নামে এখন মামলা হবে।’ কল করা ব্যক্তি আরও বলেন, ‘মামলা খেতে না চাইলে কাস্টমস ফি বাবদ আপনাকে আরও দেড় লাখ টাকা দিতে হবে।’

ভয় পেয়ে যান কবির হোসেন। মামলা ঠেকাতে প্রতারক চক্রের দেয়া কয়েকটি নগদ ও বিকাশ নম্বরে দেড় লাখ টাকা পাঠান তিনি। কিছুদিন পর আরেফিন নামের ওই ব্যক্তি কবির হোসেনকে ইমোতে আবারও ফোন করে বলেন, ‘আপনাকে বাঁচাতে দিয়ে আমি বিপদে পড়ে গেছি । আমি বিপদে পড়লে আপনিও বিপদে পড়বেন। এখন আপনার এবং আমার বিপদ থেকে রেহাই পেতে আরও টাকা লাগবে।’
এর মধ্যেই প্রতারক চক্রটি কৌশলে কবির হোসেনের ব্যক্তিগত তথ্য হাতিয়ে নেয়। এরপর কখনো ইমেইলে, কখনো ফোন করে ভয়ভীতি দেখিয়ে কবির হোসেনের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে আসছিল। এভাবে গত প্রায় দেড় বছরে প্রতারক চক্রের হাতে ১০ লাখের বেশি টাকা খুইয়েছেন কবির হোসেন।

অবশেষে বিষয়টি বুঝতে পেরে কবির হোসেন ২০ আগস্ট সিআইডির সাইবার সেন্টারে অভিযোগ করেন। সঙ্গে সঙ্গে কাজ শুরু করে দেয় সিআইডি। তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে সিআইডির সাইবার টিম সাভারে অভিযান চালিয়ে জাহিদুর ও অপুকে গ্রেপ্তার করেছে। এ সময় তাদের কাছ থেকে মুঠোফোনে আর্থিক সেবাদাতা প্ল্যাটফরম বিকাশ ও নগদের নম্বর, প্রতরনার কাজে ব্যবহৃত ইলেট্রনিকস্ ডিভাইস জব্দ করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) পল্টন থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়েছে।